ঢাকা, শুক্রবার, ১৭ শ্রাবণ ১৪৩২, ০১ আগস্ট ২০২৫, ০৬ সফর ১৪৪৭

সারাদেশ

বাগেরহাটে সংসদীয় আসন কমানোর প্রতিবাদে ঐক্যবদ্ধ সকল রাজনৈতিক দল

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮:৫৭, জুলাই ৩১, ২০২৫
বাগেরহাটে সংসদীয় আসন কমানোর প্রতিবাদে ঐক্যবদ্ধ সকল রাজনৈতিক দল

বাগেরহাট: বাগেরহাটের চারটি সংসদীয় আসনের মধ্যে একটি কমিয়ে জেলায় তিনটি সংসদীয় আসন করার প্রস্তাবের প্রতিবাদে ফুঁসে উঠেছে বাগেরহাটবাসী। চারটি সংসদীয় আসন বহালের দাবিতে বিক্ষোভ, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট, সর্বদলীয় পরিষদ গঠন করা হয়েছে।

কঠোর আন্দোলনের ঘোষণাও দিয়েছেন চারটি সংসদীয় আসন বহাল রাখার দাবিতে গঠিত সর্বদলীয় রাজনৈতিক পরিষদ।

সংসদীয় আসন কমানোর প্রস্তাব বাতিলের দাবিতে বৃহস্পতিবার ( ৩১ জুলাই) দুপুরে বাগেরহাট প্রেসক্লাবে সংসদীয় আসন কমানোর প্রতিবাদে জরুরী সংবাদ সম্মেলন করেন সর্বদলীয় রাজনৈতিক পরিষদ। সংবাদ সম্মেলনে জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীম, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক এটিএম আকরাম হোসেন তালিম, জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি এমএ সালাম, বাগেরহাট জেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা রেজাউল করিম, বিএনপি নেতা ব্যারিষ্টার জাকির হোসেন, খাদেম নিয়ামুল নাসির আলাপ, খান মনিরুল ইসলামসহ ইসলামী আন্দোলন, খেলাফত মজলিস নেতা সাধারণ সম্পাদক মো. ফরিদ উদ্দিন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী বাগেরহাটের সূরা ও কর্মপরিষদ সদস্য শেখ মঞ্জুরুল হক রাহাদসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে বাগেরহাট জেলায় চারটি সংসদীয় আসন বহাল রাখার দাবিতে দুই দিন ব্যাপী শনিবার ও রোববার মহাসড়কে বিক্ষোভ মিছিল এবং জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি প্রদানের কর্মসূচী ঘোষণা করেন জেলা বিএনপির আহ্ববায়ক এটিএম আকরাম হোসেন তালিম।

তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনের এই প্রস্তাবের বিরুদ্ধে আমরা জেলায় সর্বদলীয় ঐক্যমতের ভিত্তিতে কর্মসূচি নিয়েছি। শনিবার ও রবিবার সকাল ১০টায় দশানী মোড় থেকে বিক্ষোভ মিছিল হবে এবং জেলা প্রশাসক ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কাছে স্মারকলিপি প্রদান করা হবে।

নির্বাচন কমিশনের এই আসন বিন্যাসকে ভৌগলিকভাবে হাস্যকর দাবি করে বাগেরহাট জেলা বিএনপির অন্যতম নেতা খান মনিরুল ইসলাম বলেন, নির্বাচন কমিশন যে আসন বিন্যাস প্রস্তাব করেছে, তা ভৌগোলিক দিক দিয়ে খুবই অমূলক। বাগেরহাট-২ আসনের সাথে রামপালকে যুক্ত করা হয়েছে, যা সদর শহর থেকে অনেক দূরে। অন্যদিকে মোড়েলগঞ্জ, শরণখোলা ও মোংলাকে একত্র করে একটি মাত্র আসন করার যে প্রস্তাব, তা জনসংখ্যা ও আয়তনের দিক থেকেও সম্পূর্ণ কান্ডজ্ঞানহীন। আমরা এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করি এবং দাবি মানা না হলে কঠোর আন্দোলনে যাব।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত জামায়াতে ইসলামীর বাগেরহাট জেলা আমির মাওলানা মো. রেজাউল করিম বলেন, বাগেরহাটের চারটি আসন রক্ষায় আমরা একসঙ্গে কাজ করব। ইতোমধ্যে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে আলোচনা করেছি। বাগেরহাটের স্বার্থে আমরা দল-মতের উর্দ্ধে সবাই ঐক্যবদ্ধ।

জেলা বিএনপির যুগ্ন আহ্ববায়ক সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবি ব্যারিষ্টার জাকির হোসেন বলেন, যদি আন্দোলনের ফলে নির্বাচন কমিশন তার সিদ্ধান্ত থেকে সরে না আসে, তাহলে আমরা আদালতের সরনাপন্ন হব। আদালতের নির্দশনা অনুযায়ী বাগেরহাটের চারটি আসনে নির্বাচন হবে আশাকরি।

দীর্ঘদিন ধরে বাগেরহাটে চারটি আসন ছিল। বুধবার (৩০ জুলাই) দুপুরে আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাগেরহাটের চারটি আসনের মধ্যে একটি অংশ কমিয়ে জেলায় তিনটি আসন করার প্রাথমিক প্রস্তাব দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। এরপর থেকেই বাগেরহাট জেলাবাসী ক্ষোভে ফুঁসে ওঠে। বুধবার রাতেই বাগেরহাট শহরে জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি এমএ সালামের নেতৃত্বে একটি মিছিল বের করা হয়। বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় জেলা যুবদল নেতা সুজন মোল্লার নেতৃত্বে জেলা নাগরিক সমাজের ব্যানারে একটি সংবাদ সম্মেলন হয়। পরে দুপুরে প্রেসক্লাবের সামনে চারটি আসন বহাল রাখার দাবিতে মিছিল করেন যুবদলের নেতা-কর্মী। এছাড়া জেলার মোংলাসহ বিভিন্ন এলাকায় আসন বহাল রাখার দাবিতে মিছিল ও সভা সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

 

এমআরএম

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।