খুলনা: পলিথিন এবং সিঙ্গেল ইউজড প্লাস্টিক প্রকৃতির ব্যাপক ক্ষতি করছে। ধ্বংস করছে গাছপালা এবং ডাঙ্গা ও জলের প্রাণী।
বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) দুপুরে খুলনা জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে সুন্দরবন সুরক্ষায় যুব সম্মেলনে প্রধান অতিথির বত্তব্যে এ কথা বলেন প্রধান বন সংরক্ষক মো. আমীর হোসেন চৌধুরী।
এসময় তিনি আরও বলেন, সুন্দরবন প্রভাবিত ৫ জেলার ১৭ উপজেলায় স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কর্মরত “ইয়ুথ ফর দি সুন্দরবন”-এর ৫৩০ জন যুবককে সরকারি স্বীকৃতি দিতে তাদের বন বিভাগের স্বেচ্ছাসেবকের তালিকায় অন্তর্ভূক্ত করার জন্য খুলনার বন সংরক্ষকের প্রতি নির্দেশনা দেন।
রূপান্তর-এর নির্বাহী পরিচালক স্বপন কুমার গুহের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন খুলনার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) বিতান কুমার মন্ডল, হেলভেটাস বাংলাদেশের হেড অব প্রোগ্রাম শাহরিয়ার মান্নান এবং বন সংরক্ষক ইমরান আহমেদ।
অনুষ্ঠানে উদ্দীপনামূলক সেশন পরিচালনা করেন ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. সৈয়দ মিজানুর রহমান। এই সম্মেলনের সাথে একাত্মতা ঘোষণা করেন সুন্দরবন পশ্চিম বিভাগের ডিএফও এ জেড এম হাসানুর রহমান, সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের ডিএফও মোঃ রেজাউল করিম চৌধুরী, জার্নালিস্টস ফর সুন্দরবন ফোরামের এইচ এম আলাউদ্দিন (খুলনা), মোস্তাফিজুর রহমান উজ্জ্বল (সাতক্ষীরা), খালিদ মাহমুদ (পিরোজপুর) এবং মুনীর হোসেন কামাল (বরগুনা), পরিবেশকর্মী ও মোংলা উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান নূর আলম শেখ এবং রিসাইকেল জার-এর প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সুন্দরবন একাডেমি’র নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক আনোয়ারুল কাদির। স্বাগত বক্তৃতা করেন রূপান্তর-এর নির্বাহী পরিচালক রফিকুল ইসলাম খোকন। তরুণদের পক্ষ থেকে বক্তৃতা করেন মো. শাহীন খলিফা এবং খাদিজা আক্তার সাথী।
অনুষ্ঠানে সুন্দরবন সুরক্ষায় পলিথিন ও প্লাস্টিক দূষণ হ্রাসে ভূমিকা পালনকারী তৃণমূল যুবদের পাশাপাশি প্রশাসনিক কর্মকর্তা, শিক্ষাবিদ, উন্নয়নকর্মী, সাংবাদিকসহ সমাজের বিভিন্ন পেশার মানুষ অংশ নেন। সুন্দরবন প্রভাবিত ৫টি জেলার ১৭টি উপজেলার চারশ’ তরুণ এই কনফারেন্সে অংশ নেন। জলজ প্রাণীর জীবন ও আবাসস্থল রক্ষায় সুন্দরবনে পলিথিন ও প্লাস্টিক দূষণ হ্রাসে এই তরুণ সমাজ তৃণমূল পর্যায়ে কাজ করে যাচ্ছেন।
অনুষ্ঠানে সুন্দরবন সুরক্ষায় কাজ করা তরুণদের পক্ষ থেকে সুন্দরবন প্রভাবিত প্রতিটি জেলার (খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, পিরোজপুর ও বরগুনা) জন্য একটি করে স্টলে তাদের নিজ নিজ কর্মকান্ড উপস্থাপন করেন। জেলা পর্যায়ের সেরা স্টলের পুরস্কার লাভ করে বাগেরহাট এবং উপজেলা পর্যারে যথাক্রমে নেছারাবাদ, পাথরঘাটা ও আশাশুনি। অনুষ্ঠানে বিগত দিনে সুন্দরবন সুরক্ষায় ভূমিকা পালন এবং পরিকল্পনা প্রণয়নের জন্য সেরা নিটি উপজেলাকে পুরস্কৃত করা হয়। উপজেলাগুলো হচ্ছে যথাক্রমে মঠবাড়িয়া, কয়রা এবং কালিগঞ্জ ইয়থ ফোরাম। অনুষ্ঠানে সুন্দরবন সুরক্ষায় ১৭ দফা’র “খুলনা ঘোষণা” অনুমোদন করা হয়। ১৭ দফার খুলনা ঘোষণা উপস্থাপন করেন কর্ণ বিকাশ কেডি এবং লাবনী আক্তার।
উল্লেখ্য, জার্মান সরকারের সহযোগিতায় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা রূপান্তর বাংলাদেশে সুন্দরবন ম্যানগ্রোভ বন ও তার সংলগ্ন অঞ্চলসমূহের দূষণ কমানো ও বাস্তুসংস্থান উন্নয়নে গত ২০২৪ সালের জুন থেকে কাজ করে যাচ্ছে। প্রকল্পটি আগামী ২০২৬ সালের নভেম্বর পর্যন্ত চলবে।
এমআরএম