ঢাকা, শনিবার, ২৮ আষাঢ় ১৪৩২, ১২ জুলাই ২০২৫, ১৬ মহররম ১৪৪৭

সারাদেশ

এবার দুর্নীতি-চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে তীব্র আন্দোলন: নাহিদ ইসলাম

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯:১১, জুলাই ১১, ২০২৫
এবার দুর্নীতি-চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে তীব্র আন্দোলন: নাহিদ ইসলাম বক্তব্য দিচ্ছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।

যশোর: জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, লিখে রাখুন, দেশে আবারও একটি তীব্র আন্দোলন গড়ে উঠবে। এবারের আন্দোলন হবে দুর্নীতি ও চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে।

আমরা যেমন জুলাই আন্দোলনে বিজয়ী হয়েছি, তেমনি এই আন্দোলনেও জয় আমাদের হবেই।

শুক্রবার (১১ জুলাই) দুপুরে যশোর ঈদগাহ চত্বরে এনসিপির পদযাত্রা-পরবর্তী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

একটি রাজনৈতিক দলকে উদ্দেশ্য করে নাহিদ বলেন, তারা লাখো-কোটি মানুষের হিসাব দেখায়। অথচ তারা ভুলে গেছে—আমরাই হাসিনার মতো ফ্যাসিস্ট শাসককে পালাতে বাধ্য করেছি।

তিনি আরও বলেন, এক সময় আমরা মাত্র দশজন নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে দাঁড়িয়েছিলাম। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আবাবিল পাখির মতো মানুষ এসে আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছে। হাসিনার পতন ঘটিয়েছে। কাজেই মানুষের সংখ্যা দেখিয়ে আমাদের দমিয়ে রাখা যাবে না।

নাহিদ বলেন, আপনি যদি ইনসাফের পক্ষে ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে দাঁড়ান, তবে একজন মানুষও এক লাখ মানুষের সমান হয়ে উঠতে পারে।

দুর্নীতি ও চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, সংস্কার পদে পদে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে দুর্নীতিবাজ-চাঁদাবাজদের কারণে। আমরা কাউকে ভয় পাই না। চাঁদাবাজদের প্রতিহত করুন—সে যদি এনসিপির কেউ হয়, তাকেও রেহাই দেওয়া যাবে না।

নির্বাচনবিরোধী ট্যাগ দেওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, কেউ কেউ এনসিপিকে নির্বাচনবিরোধী বলে প্রচার করছেন। আমরা বলছি—পতিত ফ্যাসিস্টদের বিচার চাই, সংস্কার চাই, নির্বাচন চাই। বিচার ও সংস্কার ছাড়া দেশের মানুষ কোনো নির্বাচন মানবে না। যারা বিচার ও সংস্কার ছাড়া নির্বাচনের কথা বলেন, তারাই নির্বাচন পেছানোর ষড়যন্ত্রে যুক্ত।

রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান নিয়ে নাহিদ বলেন, যারা রাষ্ট্রক্ষমতায় এসেছে, তারাই সবসময় প্রতিষ্ঠানগুলো দলীয়করণ করেছে। হাসিনা তার ১৬ বছরে প্রতিষ্ঠানগুলো সম্পূর্ণ দলীয়করণ করেছে। এবার আমরা তা হতে দেব না। পুলিশ থাকবে জনগণের জানমালের নিরাপত্তায়, সেনাবাহিনী থাকবে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায়। তারা কোনোভাবেই গুমের সঙ্গে জড়িত হোক—এটা আমরা চাই না।

তিনি আরও বলেন, সবচেয়ে বেশি দলীয়করণ হয়েছে নির্বাচন কমিশন ও দুর্নীতি দমন কমিশনে। এই দুই কমিশনে অবশ্যই নিরপেক্ষভাবে নিয়োগ দিতে হবে। সেনাবাহিনী, পুলিশ, নির্বাচন কমিশন, দুদক ঠিক না হলে দেশ অন্ধকারে হারিয়ে যাবে। আমরা তা হতে দেব না।

নাহিদ বলেন, এবার আমরা ইনসাফ ও কল্যাণভিত্তিক অর্থনীতি, বাংলাদেশপন্থি রাজনীতি প্রতিষ্ঠা করব। আপনারা যারা জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের যোদ্ধা ছিলেন, আশা করি, এনসিপির এই নতুন সংগ্রামেও আগের মতোই আমাদের সঙ্গে থাকবেন।

‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) রাতে এনসিপি নেতারা নড়াইল থেকে যশোরে পৌঁছান। শুক্রবার সকালে স্থানীয় একটি হোটেলের কনফারেন্স কক্ষে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ পরিবার ও আহতদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন নেতারা।

পরে শহরের মডেল মসজিদে জুমার নামাজ আদায়ের পর নেতারা পদযাত্রা সহকারে সমাবেশস্থলে পৌঁছান।

সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন- এনসিপির সদস্য সচিব আকতার হোসেন, মুখ্য সমন্বয়ক সারজিস আলম, হাসনাত আব্দুল্লাহ, কেন্দ্রীয় নেতা নুসরাত তাবাসসুম ও ডা. তাসনিম জারা।

আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।