নড়াইলের কালিয়া উপজেলায় ফুটবল খেলা কেন্দ্র করে দুপক্ষের সংঘর্ষে জিল্লুর রহমান সরদার (৫৫) নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। একই ঘটনায় আহত হয়েছেন জিতু মোল্যা (২০) নামে এক শিক্ষার্থী।
শুক্রবার (১১ জুলাই) বিকেলে কালিয়া পৌরসভার একলাছ উদ্দিন মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে সংঘর্ষের সূত্রপাত ঘটে। পরে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত সাড়ে ৭টার দিকে মৃত্যু হয় জিল্লুর রহমানের।
জিল্লুর রহমান সরদার উপজেলার কুলশুর গ্রামের বাসিন্দা। আহত জিতু মোল্যা একই উপজেলার পাঁচ কাউনিয়া গ্রামের আনোয়ার মোল্যার ছেলে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, একলাছ উদ্দিন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মাঠটি কুলশুর গ্রামে অবস্থিত হলেও মাঠের দখল নিয়ে বাবুপুর গ্রামের শেখ বংশ ও পার্শ্ববর্তী পাঁচ কাউনিয়া গ্রামের মোল্যা বংশের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। শুক্রবার বিকেলে বাবুপুর গ্রামের খেলোয়াড়রা মাঠে ফুটবল খেলছিলেন। এ সময় পাঁচ কাউনিয়া গ্রামের লোকজন মাঠে গেলে উভয়পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এবং একপর্যায়ে শুরু হয় বাগবিতণ্ডা। এ ঘটনার জেরে বাবুপুর গ্রামের লোকজন পাঁচ কাউনিয়ার শিক্ষার্থী জিতু মোল্যাকে পিটিয়ে আহত করে।
এর কিছুক্ষণ পর বাবুপুর গ্রামের শেখ বংশীয় লোকজন কুলশুর গ্রামে হামলা চালায়। হামলাকারীরা কালিয়া পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি মুজিবুর রহমান সরদারের বাড়িতে ঢুকে পড়ে। এ সময় তার চাচাতো ভাই জিল্লুর রহমান সরদার এগিয়ে গেলে হামলাকারীরা তাকে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করে।
স্থানীয়রা আহত জিল্লুরকে উদ্ধার করে কালিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখান থেকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত সাড়ে ৭টার দিকে তার মৃত্যু হয়।
স্থানীয়দের ভাষ্যমতে, বাবুপুরের শেখ বংশ এবং কুলশুর গ্রামের সরদার বংশের মধ্যে পূর্বপুরুষ থেকে বংশগত বিরোধ চলে আসছে। চলতি বছরের ১৬ মে বাবুপুর জামে মসজিদের ইমামকে মারধরের ঘটনাকে কেন্দ্র করেও দুই বংশের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছিল এবং সে সময় গুলিবর্ষণের ঘটনাও ঘটেছিল। ওই ঘটনায় পুলিশ একাধিক অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে জেলহাজতে পাঠিয়েছিল।
কালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি, ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের ধরতে পুলিশি অভিযান অব্যাহত আছে। এলাকায় বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে এবং অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
আরএ