সিরাজগঞ্জ: প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুরে যমুনা নদীর তীরে ভেড়ানো রয়েছে একটি ট্যাগবোট (এক ধরনের জাহাজ)।
এরই মধ্যে জাহাজটির ইঞ্জিনসহ বেশ কিছু অংশ কেটে নিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা।
বৃহস্পতিবার (১৫ মে) জাহাজটির কাছে গিয়ে দেখা যায়, এনায়েতপুরে বেরিবাঁধ এলাকার দক্ষিণ দিকে তিনতলা জাহাজটি অকেজো অবস্থায় পড়ে আছে। সেখানে স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে পাহারা বসানো হয়েছে।
এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এম টি আনোয়ারা নাসির-২ নামের নৌযানটি তিনতলা বিশিষ্ট একটি পুরোনো ট্যাগবোট। যেটা ‘পন্টুন জাহাজ’ নামে পরিচিত। গত ২ মে ট্যাগবোটটি এনায়েতপুর স্পার বাঁধের ৫০০ গজ দক্ষিণে প্রথম দেখা যায়। দুয়েকদিন পর ১০-১৫ জনের একটি চক্র লোহা কাটার যন্ত্র নিয়ে এর ওপরের অংশ এবং ইঞ্জিনটি কেটে দুটি নৌকায় ভর্তি করে নিয়ে যায়। বিষয়টি পুলিশ জানার পর পাহারা বসালে চোরের দল আর আসেনি।
কথা হয়, হৃদয় ও আবু নায়েম হোসেনসহ স্থানীয় কয়েক যুবকের সঙ্গে। তারা বলেন, জাহাজটি কোথা থেকে কীভাবে এসেছে, কেউ বলতে পারে না। তবে ২ মে প্রথম নজরে আসে। কয়েকদিন আগে কিছু লোক এসে জাহাজের বেশ কিছু অংশ কেটে নিয়ে যান। তখন এলাকাবাসী ভেবেছিল জাহাজটি তাদের। পরে জানা যায়, এটি চুরি করে আনা হয়েছে। অবৈধভাবে ধাতব অংশ বা ইঞ্জিন বিক্রির জন্যই জাহাজটি এখানে আনা হতে পারে।
এনায়েতপুর স্পার বাঁধ প্রকল্পের নৈশ প্রহরী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, প্রথমে আমি মনে করেছিলাম, জাহাজটি সরকারি। তাই কোনো খোঁজ নেওয়া হয়নি। কিছু লোককে দেখে মনে করছিলাম, জাহাজ মেরামত করছে। পরে দেখি জাহাজের অনেক অংশ কেটে নিয়ে গেছে তারা। পরে বিষয়টি প্রশাসন জানতে পেরে ঘটনাস্থল পরির্দশনে আসে, পাহারা বসায়।
এনায়েতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনারুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পাহারা বসিয়েছে। এখনও জাহাজটির মালিকের খোঁজ পাওয়া যায়নি। তবে মালিকানা দাবি করে নৌ পুলিশের সঙ্গে একটি পক্ষ যোগাযোগ করেছে।
চৌহালী নৌ পুলিশ ফাঁড়ির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গাজী মিজানুর রহমান বলেন, পরিত্যক্ত জাহাজটি বর্তমানে পুলিশের জিম্মায় রয়েছে। এটি পুরোনো ট্যাগবোট ধরনের জাহাজ। চট্টগ্রামের এক ব্যক্তি জাহাজটির মালিকানা দাবি করে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন।
তিনি বলেছেন, এটি যমুনা রেলসেতু প্রকল্পে ভাড়া দেওয়া হয়েছিল। সেখান থেকেই জাহাজটি হারিয়ে গিয়েছে।
নৌ পুলিশের ওসি আরও বলেন, তবে মালিকানা দাবি করলেও তারা এখনো ঘটনাস্থলে আসেননি এবং জাহাজটির ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত আমাদের জানাননি। যাচাই-বাছাই করে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এসআই