ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৭ ভাদ্র ১৪৩২, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

জাতীয়

প্রভাবশালীদের দখলে বকশীগঞ্জের পাহাড়ি জমি

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২:২৭, মে ১১, ২০১৯
প্রভাবশালীদের দখলে বকশীগঞ্জের পাহাড়ি জমি প্রভাবশালীদের দখলে বকশীগঞ্জের পাহাড়ি জমি। ছবি: বাংলানিউজ

জামালপুর: পাহাড়ের কোল ঘেঁষে একটি ঘর তুলতে পারলেই পুরো পাহাড়ের নিয়ন্ত্রক হয়ে ওঠে প্রভাবশালীরা। কয়েক বছর পরে চলে দখল বেচাকেনা। গত ৪০ বছরে একে একে দখল হয়ে গেছে জামালপুরের বকশীগঞ্জ বনবিভাগের অনেক পাহাড় ও ভূমি। সূত্র মতে, বর্তমানে বনবিভাগের পাঁচ হাজার একর ভূমি রয়েছে প্রভাবশালীদের দখলে।

বকশীগঞ্জ ডুমুরতলা বিট অফিসের দেওয়া তথ্যানুযায়ী, বন বিভাগের মোট জমির পরিমাণ ৭ হাজার ৯৪.৯২ একর। এরমধ্যে ডুমুরতলা মৌজায় ২১টি দাগে ৫ হাজার ২৫০.৫৩ একর এবং লাউচাপড়া মৌজায় ৫২টি দাগে ১ হাজার ৮৪৪.৬৮ একর।

পরবর্তী সময়ে বনবিভাগের ২ হাজার ৬৬৮.৭৫ একর ভূমি বেহাত হয়ে সিএস/এসএ খতিয়ানভুক্ত ভূমির পরিমাণ দাঁড়ায় ৪ হাজার ৪২৬.১৭ একর। এ সময়ের মধ্যে ডুমুরতলা মৌজায় ২ হাজার ৬৩৬.৮৩ একর এবং লাউচাপড়া মৌজায় ৩১.৯২ একর ভূমি দখল করে নেয় প্রভাবশালীরা। প্রভাবশালীদের দখলে বকশীগঞ্জের পাহাড়ি জমি।  ছবি: বাংলানিউজ১৯৬২ সালে এস/এ রেকর্ডে ভূমির পরিমাণ ৪ হাজার ৪২৬.১৭ একর হলেও সর্বশেষ বিআরএস রেকর্ড মতে বর্তমানে বনবিভাগের ভূমির পরিমাণ ২ হাজার ৩৬৮.৩৮ একর।

২০১৭ সালের ২৯ জুন স্থানীয় কামালপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিস থেকে ২ হাজার ৫৭৫.৩৭ একর জমির ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধ করেছে বনবিভাগ। এরমধ্যে ডুমুরতলা ২ হাজার ৫০১ একর ও লাউচাপড়া মৌজায় মাত্র ৭৩.৮৬ একর ভূমির উন্নয়ন কর পরিশোধ করতে পেরেছে স্থানীয় বনবিভাগ।

বনবিভাগের ৭ হাজার ৯৪.৯২ একর ভূমি থেকে প্রভাবশালীরা দখল করতে করতে এখন মাত্র ২ হাজার ৫৭৫.৩৭ একর ভূমি দখলে রাখতে পেরেছে স্থানীয় বনবিভাগ। আর গত ৪০ বছরে বিভিন্ন সময়ে ভুয়া কাগজপত্র দাখিল করে বনবিভাগের ৪ হাজার ৫১৯.৫৫ একর জমি দখল করে নেয় স্থানীয় বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী।

স্থানীয়রা জানান, বনবিভাগের কর্মকর্তা, ভূমি অফিসের কর্মকর্তা ও স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের যোগসাজশে পাহাড়ে জমি রাতারাতি দখল করে নিচ্ছে প্রভাবশালীরা।

সরেজমিনে দেখা যায়, বনবিভাগের আওতাধীন সোমনাথপাড়া, খাড়ামোড়া, রাঙ্গাজান, দিঘলকোনাসহ পাহাড়ের কোল ঘেঁষে একটু সমতাল জায়গা পেলেই গড়ে উঠছে নতুন নতুন বাড়ি।

বন বিভাগের জায়গায় বসতি নিয়ে জানতে চাইলে স্থানীয় এক ব্যক্তি (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) বাংলানিউজকে বলেন, স্থানীয় কিছু অধিবাসী ও বিট কর্মকর্তার অনুমতি নিয়ে নির্মাণ করা হচ্ছে এসব বাড়িঘর। কয়েক বছর পর এগুলো নিজেদের নামেই হয়ে যাবে।

এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বিট কর্মকর্তা রুহুল আমিন বাংলানিউজকে বলেন, আমার সময়ে এক শতাংশ জমিও দখল হতে দেয়নি। আমার পূর্ববর্তী কে, কি করেছে সেটা আমি বলতে পারবো না।

বকশীগঞ্জ সহকারী কমিশনার (ভূমি) শায়লা পারভীন বাংলানিউজকে জানান, জমি দখলের বিষয়টি বনবিভাগের একান্তই নিজস্ব বিষয়। তবে কিছু জমি বাদ পড়েছে। আসছে রেকর্ডে কিছু সংযোজন করা হতে পারে।

বাংলাদেশ সময়: ০৮৩০ ঘণ্টা, মে ১০, ২০১৯
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।