ঢাকা, শুক্রবার, ৭ ভাদ্র ১৪৩২, ২২ আগস্ট ২০২৫, ২৭ সফর ১৪৪৭

জাতীয়

তৃতীয় লিঙ্গের শ্রাবন্তী-অনন্যায় মুগ্ধ দর্শনার্থীরা

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০:৫৬, এপ্রিল ১৪, ২০১৯
তৃতীয় লিঙ্গের শ্রাবন্তী-অনন্যায় মুগ্ধ দর্শনার্থীরা

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি): ঘড়ির কাঁটায় তখন ১০টা বেজে ৫৫ মিনিট। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটমণ্ডলে থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগ ও উত্তরণ ফাউন্ডেশনের যৌথ আয়োজনে বাংলা নববর্ষ বরণের অনুষ্ঠান চলছিল। 

মঞ্চ থেকে ঘোষণা এলো ‘এখন গান পরিবেশনা করবেন তৃতীয় লিঙ্গের শ্রাবন্তী হায়াদার’। তখন সবাই আগ্রহ নিয়ে জমায়েত হলো সেখানে।

মাইক্রোফোন হাতে শ্রাবন্তী বললেন, মানুষের শেখার কোনো শেষ নেই। আমিও শিখছি। যদি আমার উচ্চারণে ছন্দে তালে কোনো ভুল হয়ে থাকে সবাই ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।  

সবাইকে নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়ে দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের ‘আমরা মলয় বাতাসে ভেসে যাবো শুধু, কুসুমের মধু করিবো পান, ঘুমাবো কেতকী সুবাস শয়নে, চাঁদের কিরনে করিবো স্নান’ গান পরিবেশন করেন তিনি।

এরপরেই গানের তালে তালে নৃত্য পরিবেশন করেন তৃতীয় লিঙ্গের আরেকজন অনন্যা। দুইজনের পরিবেশনায় মুগ্ধ হয়ে উপস্থিত সবাই করতালির মাধ্যমে স্বাগত জানান তাদের।

শত বাঁধা মোকাবেলা করে এগিয়ে যাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে শাহনেওয়াজ শ্রাবন্তী বাংলানিউজকে বলেন, একবছর ধরে অনুশীলন করেছি। গান আমার ভালো লাগে ছোটকাল থেকেই। কিন্তু আমাদের সুযোগ দেয়া হয় না। সুযোগ পেলে আমরা আমাদের ভেতর থাকা সুপ্ত প্রতিভার বিকাশ করতে পারি।

রোববার (১৪ এপ্রিল) বর্ষবরণের অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগের চেয়ারম্যান ড. আহমেদুল কবির। বক্তব্য রাখেন উত্তরণ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ও পুলিশের ডিআইজি হাবিবুর রহমান এবং ঢাবির কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আবু মো. দেলোয়ার হোসেন।  

ডিআইজি হাবিবুর রহমান বলেন, হিজড়া সম্প্রদায়ের মানুষকে আমরা ভালো চোখে দেখি না। তারাও যে মানুষ, তাদেরও যে মন আছে, আমরা তা বুঝতে চেষ্টা করি না। সৃষ্টিকর্তা চাইলে আমরাও তাদের মতো হতে পারতাম। তারা আমাদের সমাজের অংশ, আমাদের মতোই মানুষ। তারা পিছিয়ে থাকবে না।

তিনি বলেন, এখানে পারফর্ম করেছে এমন দুজন হিজড়া বিদেশ থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে এসেছেন। এমন ঘটনা বিরল। তারা কাজ করতে পারেন, আমাদের সমাজ তাদের কাজের সুযোগ দেয় না। যারা সমস্যা করে তারা সুযোগ না পেয়েই করে থাকে। হিজড়াদের আলাদা করে দেখার কোনো সুযোগ নেই। সুযোগ পেলে তারা সবকিছু করে দেখাতে পারে।

আয়োজন সম্পর্কে থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগের চেয়ারম্যান ড. আহমেদুল কবির বলেন, এবারের আয়োজনে নতুন মাত্রা যুক্ত করেছে হিজড়াদের সাংস্কৃতিক পরিবেশনা সবার উপরে মানুষ সত্য।  

‘বিভাগের সকল আয়োজনের মুক্ত আবহে বহুজনের অংশগ্রহণ ঘটেছে। সবার সহাবস্থানের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে আমরা বলতে চাই সম্প্রতির আনন্দ আবাহনে আমাদের সকলের প্রাণে আবার আসুক জোয়ার। ’

বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৪, ২০১৯
এসকেবি/এমএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।