ঢাকা, শুক্রবার, ৭ ভাদ্র ১৪৩২, ২২ আগস্ট ২০২৫, ২৭ সফর ১৪৪৭

জাতীয়

বাঙালি সংস্কৃতির নানা ঐতিহ্য প্রাণের উৎসবে

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬:২৫, এপ্রিল ১৪, ২০১৯
বাঙালি সংস্কৃতির নানা ঐতিহ্য প্রাণের উৎসবে

বগুড়া: বর-কনে ছিলেন পাশাপাশি। বর এক হাতে রুমাল দিয়ে নাক চেপে ছিলেন। আরেক হাতে শোভা পাচ্ছিলো ফুল ও চশমা। কনে বিয়ের সাজে ছিলেন পাশেই। দু’জনেই ছিলেন বিয়ের বাহন পালকিতে।

দু’জন লাঠি হাতে সেই পালকি নিয়ে রুদ্ধশ্বাসে সামনে পানে ছুটছিলেন। যদিও কোনো কিছুই বাস্তব ছিলো না।

তবে রং তুলির আঁচড়ে অনেকটা বাস্তবের অবয়ব দেওয়া হয়েছে। আর এটাই হলো বাঙালি সংস্কৃতির ঐতিহ্য। যা বহন করা হয় বাংলা নববর্ষের মঙ্গল শোভাযাত্রায়।
 
রোববার (১৪ এপ্রিল) জেলা প্রশাসন কর্তৃক আয়োজিত বর্ণিল মঙ্গল শোভাযাত্রায় চিরায়িত আবহমান গ্রাম বাংলার এমন দৃশ্য তুলে ধরা হয়।
 
অপরদিকে রাজকন্যা বসেছিলেন তার রাজকীয় আসনে। মাথার উপরে শোভা পাচ্ছিলো ছাতা। যেন রোদ-বৃষ্টির হাত থেকে রাজকন্যা রক্ষা পায়। আর রক্ষীরা রাজকন্যাকে ঘুরে ঘুরে রাজ্য ও প্রজা সাধারণদের অবস্থা দেখাচ্ছিলেন। এই দৃশ্যটিও বাস্তব ছিলো না। কৃত্রিমভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।  
রক্ষীরা রাজকন্যাকে ঘুরে ঘুরে রাজ্য ও প্রজা সাধারণদের অবস্থা দেখাচ্ছেন।  ছবি: বাংলানিউজতবে রাজকন্যার আসনে বসেছিলো ফুটফুটে ছোট্ট এক কন্যা। তাকে সেই রাজকীয় আসনে বেশ দারুন দেখাচ্ছিলো বলে শোভাযাত্রায় অংশ নেওয়া কয়েকজন তরুণ-তরুণী বাংলানিউজকে জানান।
 
এছাড়া গ্রাম বাংলার গৃহিনীর মাটির কলসি ও পাতিল শোভা পাচ্ছিলো কয়েকজন তরুণীর হাতে। শোভাযাত্রায় দেখা যায়, গ্রাম বাংলার বিলুপ্তপ্রায় আরো অনেক কিছুই। মাথায় মাথল পড়ে অনেকেই কৃষক সেজেছিলেন। আবার অনেকেই মাঝাই মাছ রাখার খালই আর হাতে শোভা পাচ্ছিলো পলই। এর মাধ্যমে গ্রাম বাংলার কৃষি ও কৃষকদের হালচিত্র তুলে ধরা হয়।
 
বাংলা নববর্ষ পালনে এসব আয়োজনের মধ্য দিয়ে ফুটে তোলা হয়েছে চিরন্তন বাংলার মাছ, মাথাল, ময়ূর, হাতি, পাখ-পাখালিসহ বৈচিত্রময় নানা লোকজ সংস্কৃতি।
 
উর্মিলা খাতুন নামে এক তরুণী বাংলানিউজকে বলেন, বাঙালির প্রাণের উৎসব পহেলা বৈশাখ। তাই এই উৎসবে আমার যোগ দেওয়া। উৎসবে যোগ দিতে পেরে আমার ভীষণ ভাল লাগছে।  
কয়েকজন তরুণীর হাতে গ্রাম বাংলার গৃহিনীর মাটির কলসি ও পাতিল।  ছবি: বাংলানিউজশারমিন আক্তার নামে আরেক তরুণী বাংলানিউজকে বলেন, বাংলা নববর্ষের এই উৎসবে যোগ দিয়ে গ্রাম বাংলার চিরায়ত নানা সংস্কৃতির সঙ্গে নিজেকে পরিচিত করতে পারলাম। এখানে না এলে সেটা সম্ভব হতো না।
 
হাসান নামে এক তরুণ বাংলানিউজকে বলেন, নববর্ষের শোভাযাত্রায় অংশ নিয়ে গ্রাম বাংলার বিলুপ্তপ্রায় অনেক সংস্কৃতি সম্পর্কে জানতে পারলাম। দৃশ্যগুলো আমাকে ভীষণভাবে মুগ্ধ করেছে।  
 
এসব তরুণ-তরুণীরা বাংলানিউজকে জানান, বাঙালির প্রাণের এ উৎসবের মধ্য দিয়ে আগামীদিনের সব অমঙ্গল দূর হবে বলেও তারা আশা প্রকাশ করেন।

বাংলাদেশ সময়: ১২১৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৪, ২০১৯
এমবিএইচ/আরবি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।