ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৮ ভাদ্র ১৪৩২, ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৯ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

জাতীয়

নদীতে ভাসলো কামনার ফুল

অপু দত্ত, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৫:৪২, এপ্রিল ১২, ২০১৮
নদীতে ভাসলো কামনার ফুল পাহাড়ের ঐতিহ্যবাহী বৈসাবি উৎসব

খাগড়াছড়ি:  এ যেন উৎসবের নগরী পার্বত্য চট্টগ্রাম। জাত-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাই মেতেছে পাহাড়ের ঐতিহ্যবাহী বৈসাবি উৎসবে। বেশ কয়েকদিন আগে থেকে তিন জেলায় বৈসাবি ঘিরে নানা আয়োজন চললেও বৃহস্পতিবার (১২ এপ্রিল) সকালে হলো বৈসাবির মূল আনুষ্ঠানিকতা। নদীতে ফুল ভাসানোর মধ্য দিয়ে শুরু হলো বৈসাবি উৎসব। এসময় সবার সুখ ও শান্তি কামনা করা হয়।

তখনও ভালো করে আলো ফোটেনি। এরইমধ্যে ঐহিত্যবাহী পোশাকে সেজে নদীর পাড়ে আসতে শুরু করেছে পাহাড়ি তরুণ-তরুণীরা।

ছোটরাও এসেছে বড়দের হাত ধরে। বছরের একটি মাত্র গুরুত্বপূর্ণ ও আনন্দদায়ক দিন ফুল বিজু বলে কথা। সূর্য পরিপূর্ণ আলো ছড়ানোর আগেই যে গঙ্গাদেবীর উদ্দেশে নদীতে ফুল ভাসাতে হবে। বুধবার (১১ এপ্রিল) গভীর রাত থেকে নাচে-গানে শহর ছাড়িয়ে প্রত্যন্ত এলাকায় উৎসবের আবহ ছড়িয়ে দেয় তরুণ-তরুণীরা।

বৃহস্পতিবার সকালে খাগড়াছড়ির খবং পড়িয়া এলাকায় চেঙ্গী নদীর পাড়ে নদীতে ফুল ভাসানো উপলক্ষে বসে মিলনমেলা। নানা বয়সের মানুষ বন-জঙ্গল থেকে সংগৃহীত ফুল নিয়ে হাজির হয় নদীর পাড়ে। কলার পাতায় করে শ্রদ্ধাভরে গঙ্গাদেবীর উদ্দেশে ফুল ভাসিয়ে পুরাতন বছরের গ্লানি ভুলে নতুন বছরের শুভ কামনা করে। অনেকে জ্বালায় মোমবাতি।
পাহাড়ের ঐতিহ্যবাহী বৈসাবি উৎসব
প্রশংসা চাকমা, জেকি চাকমা ও পায়েল ত্রিপুরা জানান, প্রতি বছর এই দিনটির জন্য আমরা অপেক্ষায় থাকি। আজ থেকে আমাদের বৈসাবি উৎসব শুরু হলো। আমরা পুরাতনের গ্লানি ভুলে নতুন বছরের ভালো কিছু প্রত্যাশায় এবং সবার মঙ্গল কামনায় নদীতে ফুল ভাসিয়েছি।

ঐন্দ্রিলা চাকমা, সুভাশিষ চাকমা বলেন, আমরা চাই পাহাড়ে শান্তি আসুক। সব জাতিগোষ্ঠী যেন হানাহানি ভুলে মিলেমিশে শান্তিতে বসবাস করতে পারে আজকের দিনে সেই প্রার্থনা করি।
পাহাড়ের ঐতিহ্যবাহী বৈসাবি উৎসব
মূলত তিন সম্প্রদায়ের বাৎসরিক প্রধান উৎসবের নামের প্রথম অক্ষর নিয়ে ‘বৈসাবি’ নামের সৃষ্টি। বৈ-তে ত্রিপুরাদের বৈসু, সা-তে মারমাদের সাংগ্রাই আর বি-তে চাকমা সম্প্রদায়ের বিজুকে বোঝানো হয়েছে।

চাকমারা বৃহস্পতিবার ফুল বিজু আর রোববার (১৫ এপ্রিল) মূল বিজু এবং সোমবার (১৬ এপ্রিল) গজ্জাপয্যা পালন করবে। ওইদিন ঘরে ঘরে চলবে অতিথি আপ্যায়ন। সেইসঙ্গে সব বয়সী মানুষ নদী খাল কিংবা ঝরনায় গঙ্গা দেবীর পূজা করবে।
মঙ্গল কামনায় নদীতে ফুল
ত্রিপুরারা হারিবৈসু, বৈসু, বিচিকাতাল, এবং মারমারা পেইংচোয়ে, আক্যে ও অতাদা আলাদা আলাদা নামে উৎসব পালন করবে।  

এদিকে বৈসাবি উৎসবকে ঘিরে শহর ছেড়ে প্রত্যন্ত এলাকায় উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। ইতোমধ্যে ঐতিহ্যবাহী খেলাধুলা চলছে পাড়া মহল্লায়। বলা যায় উৎসবে রঙিন পার্বত্য চট্টগ্রাম।

বাংলাদেশ সময়: ১১৪২ ঘণ্টা, ১২ এপ্রিল, ২০১৮
আরআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।