তখনও ভালো করে আলো ফোটেনি। এরইমধ্যে ঐহিত্যবাহী পোশাকে সেজে নদীর পাড়ে আসতে শুরু করেছে পাহাড়ি তরুণ-তরুণীরা।
বৃহস্পতিবার সকালে খাগড়াছড়ির খবং পড়িয়া এলাকায় চেঙ্গী নদীর পাড়ে নদীতে ফুল ভাসানো উপলক্ষে বসে মিলনমেলা। নানা বয়সের মানুষ বন-জঙ্গল থেকে সংগৃহীত ফুল নিয়ে হাজির হয় নদীর পাড়ে। কলার পাতায় করে শ্রদ্ধাভরে গঙ্গাদেবীর উদ্দেশে ফুল ভাসিয়ে পুরাতন বছরের গ্লানি ভুলে নতুন বছরের শুভ কামনা করে। অনেকে জ্বালায় মোমবাতি।
প্রশংসা চাকমা, জেকি চাকমা ও পায়েল ত্রিপুরা জানান, প্রতি বছর এই দিনটির জন্য আমরা অপেক্ষায় থাকি। আজ থেকে আমাদের বৈসাবি উৎসব শুরু হলো। আমরা পুরাতনের গ্লানি ভুলে নতুন বছরের ভালো কিছু প্রত্যাশায় এবং সবার মঙ্গল কামনায় নদীতে ফুল ভাসিয়েছি।
ঐন্দ্রিলা চাকমা, সুভাশিষ চাকমা বলেন, আমরা চাই পাহাড়ে শান্তি আসুক। সব জাতিগোষ্ঠী যেন হানাহানি ভুলে মিলেমিশে শান্তিতে বসবাস করতে পারে আজকের দিনে সেই প্রার্থনা করি।
মূলত তিন সম্প্রদায়ের বাৎসরিক প্রধান উৎসবের নামের প্রথম অক্ষর নিয়ে ‘বৈসাবি’ নামের সৃষ্টি। বৈ-তে ত্রিপুরাদের বৈসু, সা-তে মারমাদের সাংগ্রাই আর বি-তে চাকমা সম্প্রদায়ের বিজুকে বোঝানো হয়েছে।
চাকমারা বৃহস্পতিবার ফুল বিজু আর রোববার (১৫ এপ্রিল) মূল বিজু এবং সোমবার (১৬ এপ্রিল) গজ্জাপয্যা পালন করবে। ওইদিন ঘরে ঘরে চলবে অতিথি আপ্যায়ন। সেইসঙ্গে সব বয়সী মানুষ নদী খাল কিংবা ঝরনায় গঙ্গা দেবীর পূজা করবে।
ত্রিপুরারা হারিবৈসু, বৈসু, বিচিকাতাল, এবং মারমারা পেইংচোয়ে, আক্যে ও অতাদা আলাদা আলাদা নামে উৎসব পালন করবে।
এদিকে বৈসাবি উৎসবকে ঘিরে শহর ছেড়ে প্রত্যন্ত এলাকায় উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। ইতোমধ্যে ঐতিহ্যবাহী খেলাধুলা চলছে পাড়া মহল্লায়। বলা যায় উৎসবে রঙিন পার্বত্য চট্টগ্রাম।
বাংলাদেশ সময়: ১১৪২ ঘণ্টা, ১২ এপ্রিল, ২০১৮
আরআর