সোমবার (৯ এপ্রিল) এভাবেই কথাগুলো বলছিলেন ফেনীর লালপুল বেদে পল্লীর সত্তরোর্ধ মুক্তিযোদ্ধা রুস্তম আলী।
রুস্তম আলী বলেন, যুদ্ধের বছর তার বয়স ছিলো ২১ বছর।
মুক্তিযোদ্ধা বলেন, যুদ্ধের সময় তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের অস্ত্র পরিষ্কার করতেন। হঠাৎ একদিন ক্যাম্পে হামলা চালায় হানাদার বাহিনী। এ সময় নিরস্ত্র অবস্থায়ই হানাদারদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে ১৭ মুক্তিযোদ্ধা প্রাণ হারান।
বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা চাইলে তিনি আবার যুদ্ধ করবেন। কারণ শেখ হাসিনা মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান দিয়েছেন। প্রতি মাসে ১০ হাজার টাকা ভাতা দিয়ে হাজারও মুক্তিযোদ্ধার অভিভাবক হয়েছেন তিনি। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর নিয়মিত ভাতা পাচ্ছেন বলে জানান রুস্তম আলী।
তিনি আরও বলেন, তিনি কবিরাজ বেদে। দীর্ঘ ২০ বছর ধরে বেদেপল্লীতেই আছেন। আর্থিক সংকটের কারণে বের হতে পারেনি এ গণ্ডি থেকে। বয়সের ভারে এখন আর কাজকর্মও করতে পারেন না। তাই থাকার ঘরের এক কোনে চা দোকান করেই চলে সংসার। পল্লীর এ ছোট একটি ঘরেই চার ছেলে এক মেয়ে নিয়ে চলে মুক্তিযোদ্ধার জীবন।
অভিযোগের সুরে রুস্তম আলী বলেন, সরকার তাকে মাথা গোঁজার জন্য জেলার দাগনভূঁঞা উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নের রামচন্দ্রপুর গ্রামে ১০ শতক জমি বরাদ্দ দেয়। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সেই জমি তাকে বুঝিয়েও দেন। কিন্তু স্থানীয় প্রভাবশালী বাচ্চু মিয়া জমিটি দখল করে নিয়েছেন। শুধু জমি দখল করেই থামেননি, বাচ্চু মিয়া অন্যায় মামলা দিয়ে হয়রানিও করছেন।
এ ব্যাপারে দাগনভূঁঞা উপজেলার বর্তমান নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাইফুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, উপজেলা ভূমি কর্মকর্তার সঙ্গে সমন্বয় করে খোঁজ-খবর ও তদন্ত করছেন তিনি। সবকিছু ঠিক থাকলে শিগগিরই জমি ফিরে পাবেন মুক্তিযোদ্ধা রুস্তম আলী।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত বাচ্চু মিয়া জানান, জমিটি নিয়ে বন্দোবস্তি সংক্রান্ত জটিলতা রয়েছে। তাই এ নিয়ে আদালতে মামলা চলমান।
রুস্তম আলী বলেন, মৃত্যুর আগে সরকার ও দেশের কাছে তার তেমন কিছু চাওয়ার নেই। শুধু সরকারের দেওয়া ১০ শতক জমি ফেরত দিলেই সন্তানদের মাথা গোঁজার ঠাঁই হবে।
বাংলাদেশ সময়: ০৯৩৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ১২, ২০১৮
এসএইচডি/ওএইচ/জেএম