প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাজেটের দ্বিতীয় প্রান্তিকে দেশে রফতানি-আয় ও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়লেও বেড়েছে মূল্যস্ফীতি। বিগত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় বর্তমানে মোট মূল্যস্ফীতি বেড়েছে দশমিক ৮ শতাংশ।
বুধবার (১১ এপ্রিল) রাতে জাতীয় সংসদ অধিবেশনে দ্বিতীয় প্রান্তিকের বাজেট বাস্তবায়নের অগ্রগতির চিত্র তুলে ধরে অর্থমন্ত্রী বলেন, জাতি হিসেবে পরনির্ভরতা নয়, বরং সয়ম্ভরতা ও উন্নত দেশ গঠনই আমাদের প্রত্যাশিত গন্তব্য। আমাদের অর্থনৈতিক অবস্থান এখন অনেক বেশি সুসংহত, সুদৃঢ়। বৈদেশিক সহায়তার ওপর নির্ভরতা এখন অনেক কমে গেছে।
অর্থমন্ত্রী বলেন, পদ্মাসেতুর মতো বড় প্রকল্প নিজস্ব অর্থায়নে বাস্তবায়নের উদ্যোগ আমাদের আত্মমর্যাদাকে সমুন্নত করেছে; এর মাধ্যমে আমরা আমাদের সক্ষমতার প্রমাণ দিয়েছি। বলতে দ্বিধা নেই শুল্কমুক্ত বাণিজ্য সুবিধা ভোগের চেয়ে প্রতিযোগিতামূলক অবস্থান বজায় রাখা হবে আমাদের জন্য অনেক বেশি সম্মানজনক। তাছাড়া শুল্কমুক্ত বাণিজ্যসুবিধা ছাড়াই ইতোমধ্যে আমরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রফতানির ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে পেরেছি।
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, আমাদের আত্মবিশ্বাসের জায়গাটি এখন অনেক বেশি সুদৃঢ় হয়েছে। আমার বিশ্বাস, দেশের জনগণকে সঙ্গে নিয়ে সব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে পারবো আমরা। প্রমাণ করতে পারবো জাতির জনকের অমোঘ উচ্চারণের যথার্থতা; দেখাতে পারবো, বাঙালি জাতিকে কেউ দাবিয়ে রাখতে পারবে না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে উন্নত দেশের কাতারে শামিল হওয়ার অগ্রযাত্রায় এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ।
দ্বিতীয় প্রান্তিকের বাজেটের অগ্রগতির প্রতিবেদন তুলে ধরে অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, ইতোমধ্যে আমরা আর্থ-সামাজিক অগ্রযাত্রার এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক অতিক্রম করেছি। স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে উত্তরণের যোগ্যতা অর্জনের স্বীকৃতিপত্র পেয়েছে বাংলাদেশ। ঐতিহাসিক এই অর্জন জাতি হিসেবে আমাদের সক্ষমতা, দৃঢ়তা, সহিঞ্চুতা ও গতিশীলতার স্বীকৃতি।
‘কোনো দেশই বাংলাদেশের মতো স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের তিনটি সূচক, অর্থাৎ মাথাপিছু আয়, মানবসম্পদ উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক ভঙ্গুরতা সূচকে একইসঙ্গে প্রমাণ অর্জন করতে পারেনি। ’
সংসদে দেওয়া অর্থমন্ত্রীর বাজেট প্রতিবেদন অনুযায়ী, দ্বিতীয় প্রান্তিকে এনবিআরের কর আদায় বেড়েছে। মোট সরকারি ব্যয় বেড়েছে ৭ দশমিক ৮ শতাংশ। রফতানি-আয় বিগত অর্থবছরের দ্বিতীয় প্রান্তিক শেষের ১৬ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার থেকে বেড়ে চলতি অর্থবছরের দ্বিতীয় প্রান্তিক শেষে ১৭ দশমিক ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে দাঁড়িয়েছে। তবে দ্বিতীয় প্রান্তিকে আমদানি-ব্যয় বেড়েছে। বার্ষিক গড় মূল্যস্ফীতি ২০১৬ সালের ডিসেম্বরের সাড়ে ৫ শতাংশ থেকে বেড়ে ২০১৭ সালের ডিসেম্বর সময়ে ৫ দশমিক ৭ শতাংশ হয়েছে। পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে মূল্যস্ফীতি দশমিক ৮ শতাংশ বেড়েছে। বিশ্ব বাজারে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি এবং বন্যাজনিত ফসলহানির কারণে খাদ্য-মূল্যস্ফীতি সাময়িকভাবে বেড়েছে। তবে প্রবাসী আয়প্রবাহে প্রথম প্রান্তিকের চাঙ্গাভাব দ্বিতীয় প্রান্তিকেও বজায় ছিল।
বাংলাদেশ সময়: ২১২৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ১১, ২০১৮
এসকে/এসএম/এএ/জেএম