ঢাকা, সোমবার, ১০ ভাদ্র ১৪৩২, ২৫ আগস্ট ২০২৫, ০১ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

জাতীয়

নেশাগ্রস্ত ছেলের অত্যাচার থেকে বাঁচতে মায়ের আকুতি 

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮:৩৯, এপ্রিল ২, ২০১৮
নেশাগ্রস্ত ছেলের অত্যাচার থেকে বাঁচতে মায়ের আকুতি 

লক্ষ্মীপুর: নেশাগ্রস্ত ছেলের অত্যাচার থেকে বাঁচতে চান এক অসহায় মা। এমন আকুল আকুতি জানিয়েছেন এই বিধবা মা। ছেলের ভয়ে ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন তিনি। নেশার টাকা না পেয়ে বখে যাওয়া ছেলে রুবেল হোসেন (২৬) ঘরের আসবাবপত্র ভাঙচুর করেও ক্ষান্ত হয়নি; মাকে বেদম পিটিয়ে আহত করেছে। এখন ছেলের হাত থেকে বাঁচাটাই দায় হয়ে উঠেছে এই বিপন্ন নারীর। 

শনিবার (৩১ মার্চ) সকালে লক্ষ্মীপুর পৌরসভার বাঞ্ছানগর এলাকায় এ অপ্রত্যাশিত ঘটনা ঘটে। প্রতিকার চেয়ে রোববার (১ এপ্রিল) বিকেলে লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসকের (ডিসি) কাছে লিখিত আবেদন করেছেন ওই অসহায় মা আয়েশা বেগম (৪২)।

তিনি ছেলের যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ হয়ে সেই নেশাগ্রস্ত ছেলেকে প্রশাসনের নিরাপত্তা হেফাজতে নেওয়ার আকুতি জানিয়েছেন।  

অভিযোগে বলা হয়, রুবেলের বাবা মো. সোলায়মান সেনাসদস্য ছিলেন। ২০১৪ সালের ৬ এপ্রিল তিনি মারা যান। তার দুই ছেলে ও দুই মেয়ে। এক সময় বড় ছেলে রুবেল বেশ মেধাবী ছাত্র ছিল। অষ্টম শ্রেণিতে পড়ার সময় নোয়াখালীতে থাকার সুবাদে পরিচয় হয় স্থানীয় বখাটেদের সঙ্গে। নেশার টানে তার পড়ালেখা আর এগোয়নি। এক পর্যায়ে পড়ালেখা বন্ধ করে বন্ধুদের সঙ্গে নেশার জালে জড়িয়ে পড়ে সে।  

স্বামীর মৃত্যুর পর কোনোমতে মেয়েদের সহযোগিতায় সংসার চালিয়ে আসছিলেন মা। নিজের স্বর্ণালংকার বিক্রি করেও ছেলের নেশার টাকা দিতে বাধ্য হয়েছেন।  

সম্প্রতি মাদকাসক্ত রুবেল বেপরোয়া হয়ে ওঠে। প্রায়ই নেশার জন্য মায়ের কাছে টাকা দাবি করে সে। সবশেষ শনিবার সকাল ১০টার দিকে সে মায়ের ভাড়া বাসায় এসে ১০ হাজার টাকা চায়। আয়েশা বেগম টাকা দিতে অপরাগতা জানালে রুবেল ক্ষিপ্ত হয়ে তার মাকে জবাই করার হুমকি দেয়। একপর্যায়ে তাকে বেদম কিল-ঘুষি, লাথি মেরে আহত করে। এসময় মাকে গলাটিপে মেরে ফেলারও চেষ্টাও করে সে। এ পর্যায়ে ঘরের আসবাবপত্র ভাঙচুর করে রুবেল।  

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আয়েশা বেগম বলেন, ‘আমার ছেলে এক সময় খুব মেধাবী ছিল। এখন মাদক সেবন করায় সে দিনদিন বেপরোয়া হয়ে যাচ্ছে। সে আমাকে প্রাণে হত্যা করে ফেলবে। তার ভয়ে আমি দুইদিন ধরে পালিয়ে বেড়াচ্ছি। এজন্য প্রতিকার চেয়ে প্রশাসনের কাছে আবেদন করেছি। ’

তিনি আরো বলেন, নেশার জন্য সে বিভিন্ন সময় ১০ টাকা থেকে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত দাবি করে। টাকা না পেলেই তার মাথা গরম হয়ে যায়।

লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসক (ডিসি) অঞ্জন চন্দ্র পাল বলেন, বিধবা নারীর অভিযোগটি পেয়েছি। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য এসপি ও ওসির কাছে তা প্রেরণ করা হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৩১ ঘণ্টা, এপ্রিল ০২, ২০১৮
এসআর/জেএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।