শনিবার (৩১ মার্চ) রাতের প্রথম প্রহর সাড়ে ১২টায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তাকে গ্রেফতার করে র্যাব।
দুই সন্তানের জনক গ্রেফতারকৃত বাবুল হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার ব্রাক্ষণডোরা গ্রামের মৃত মলাই মিয়ার ছেলে।
এদিন দুপুর ১২টায় গ্রেফতারকৃত বাবুল মিয়াকে নিয়ে সিলেট র্যাব-৯ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব-৯) এর অধিনায়ক লে. কর্নেল আলী হায়দার আজাদ।
স্কুলছাত্রী বিউটি ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দেশজুড়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। এরপরই আসামিকে ধরতে তৎপরতা চালায় র্যাবের গোয়েন্দা সদস্যসহ কয়েকটি ইউনিট।
অবশেষে রামদা গ্রামে ফুফুর বাড়ি থেকে বাবুলকে গ্রেফতার করা হয়। তাকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলে জানান র্যাব অধিনায়ক।
গ্রেফতারকৃত বাবুল মিয়াকে হবিগঞ্জ পুলিশের হাছে হস্তান্তর করা হবে বলেও জানান তিনি।
তবে বিউটি ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় বাবুল ছাড়াও আর কারা জড়িত এ বিষয়ে কিছুই জানায়নি র্যাব।
র্যাব-৯ এর মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. মনিরুজ্জামান বাংলানিউজকে বলেন, বাবুলের সঙ্গে ধর্ষণ ও হত্যায় আর কারা জড়িত, এ বিষয়ে জানতে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ অব্যাহত রাখা হয়েছে।
এর আগে স্কুলছাত্রী বিউটি আক্তারকে ধর্ষণ ও হত্যা মামলার প্রধান আসামি বাবুলের শ্বশুর আব্দুল কাদির (৫০), খালা জহুর চাঁন বিবি (৬০) ও খালাত বোন ঝুমা আক্তারকে (২০) জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (২৯ মার্চ) সন্ধ্যায় জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাদের স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সদস্য ফরিদ মিয়ার জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া হয়।
র্যাব জানায়, চলতি বছরের ২১ জানুয়ারি ব্রাক্ষণডোরা গ্রামের দিনমজুর সায়েদ আলীর মেয়ে বিউটি আক্তারকে (১৬) অপহরণের পর ধর্ষণ করে অভিযুক্ত বাবুল। ৪ মার্চ বিউটির বাবা বাদী হয়ে হবিগঞ্জ আদালতে নারী ও শিশু নির্যাতন মামলা দায়ের করেন।
১৬ মার্চ বিউটিকে তার নানা বাড়ি থেকে অপহরণ করে নিয়ে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়। ১৭ মার্চ বেলা সাড়ে ১১টায় হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জের পুরাইকলা বাজার সংলগ্ন ছাতাগর্থ হাওরে স্কুলছাত্রী বিউটির ক্ষত-বিক্ষত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। মরদেহে ধারালো অস্ত্রের আঘাত ছিলো।
পরে এ ঘটনায় ওইদিনই বিউটিকে হত্যা ও ধর্ষণের অভিযোগে তার বাবা সায়েদ আলী বাদী হয়ে বাবুল মিয়াসহ দু’জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতপরিচয় কয়েকজনকে আসামি করে শায়েস্তাগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে গত ২১ মার্চ বাবুলের মা কলম চাঁন ও সন্দেহভাজন হিসেবে একই গ্রামের ইসমাইলকে আটক করে পুলিশ।
তারও আগে ০১ মার্চ বিউটির বাবা সায়েদ আলী বাদী হয়ে বাবুল ও তার মা স্থানীয় ইউপি সদস্য কলম চাঁনের বিরুদ্ধে হবিগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে অপহরণ ও ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন।
এদিকে বৃহস্পতিবার (২৯ মার্চ) দুপুরে হবিগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আ স ম শামছুর রহমান ভূঁইয়াকে প্রধান করে এ ঘটনা তদন্তে কমিটি গঠন করা হয়েছে।
কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শৈলেন চাকমা ও সহকারী পুলিশ সুপার রবিউল ইসলাম।
কমিটিকে আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার বিধান ত্রিপুরা।
বাংলাদেশ সময়: ১৫১২ ঘণ্টা, মার্চ ৩১, ২০১৮
এনইউ/জেডএস