হস্তচালিত তাঁতে গামছা বুনা অবস্থায় তিনি জানান, ১৯৮৮ সাল থেকে গামছা বুনেন। আগে গামছার খুব কদর ছিল।
20180329114629.jpg)
অন্য এলাকার চেয়ে এখানকার গামছার জমিন আর পাড়ের রঙ ও নকশার মধ্যে বৈশিষ্ট্য আছে। সরকারের পক্ষ থেকে কোনো সহযোগিতা না পাওয়ায় তাঁতীরা নিরুৎসাহিত হয়ে অন্য পেশায় চলে যাচ্ছেন।
তিনি জানান, ফুলতলা উপজেলার আলকা, জামিরা, দামোদর, গাড়াখোলা, টোলনাগ্রামে এক সময় ঢুকলেই কানে ভেসে আসতো তাঁতের ঠক ঠক শব্দ। গ্রামের প্রতিটি বাড়িতে ছিল তাঁত। হাজারও তাঁতী সুনিপুণ হাতে তৈরি করতেন গামছা। কিন্তু এখন মাত্র আলকা ও দামোদরের ৩০টি পরিবার গামছা তৈরি করেন।
তৈরি হওয়া গামছা কোথায় বিক্রি হয় জানতে চাইলে তিনি বাংলানিউজকে বলেন, স্থানীয় ফুলতলা বাজারে হাটের দিন গামছা বিক্রি করা হয়। এছাড়া দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অর্ডার পেলে গামছা তৈরি করে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। প্রবীন তাঁতীরা জানান, ব্রিটিশ শাসনামলে এই উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ব্যক্তিগত উদ্যোগে অসংখ্য হস্তচালিত তাঁত শিল্প গড়ে ওঠে। গড়ে তোলা তাঁতে তৈরি করা হতো বিভিন্ন রং ও সাইজের আকর্ষণীয় গামছা। কিছু তাঁত শিল্পী শাড়ি ও লুঙ্গি তৈরি করতেন। শাড়ি ও লুঙ্গি তৈরির কাজ বহুকাল আগেই বিলুপ্ত হয়েছে। পরে আশির দশকে ফুলতলার গামছার রমরমা অবস্থা ছিল। এখন আর সে অবস্থা নেই।
গামছাপল্লীর তাঁতীরা জানান, ভালো সবচেয়ে বড় গামছা(তিন ফুট চওড়া ও চার হাত লম্বা)দুইশ’ টাকা পিস। দুই এক ইঞ্চি ছোট পরের টা ১২৫ টাকা পিস। সাড়ে তিন হাত লম্বা চওড়া ১ গজ ৮০ টাকা পিস।
এ শিল্পে টিকে থাকা তাঁতীরা জানান, এ শিল্পের ঐতিহ্য ও সুনাম এখনও রয়েছে। তবে হারিয়ে গেছে জৌলুস। কাঁচামাল ও উপকরণের মূল্য বৃদ্ধি আর সরকারের পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে ক্রমান্বয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েছে এ শিল্পের সঙ্গে জড়িতরা। বন্ধ হয়েছে এলাকার ৯০ ভাগ তাঁত। শিল্পটিকে বাঁচিয়ে রাখতে সরকারের সহায়তা চান তারা।
খুলনা জেলা প্রশাসক আমিন উল আহসান বাংলানিউজকে বলেন, ‘ফুলতলার গামছার খ্যাতি ধরে রাখতে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। নতুন বাজার তৈরি করার চেষ্টা করা হচ্ছে। ’
বাংলাদেশ সময়: ১১৪৭ ঘণ্টা, মার্চ ২৯, ২০১৮
এমআরএম/এএটি