অন্যদিকে স্থানীয়দের এই দুর্দশা দেখেও কোনো কিছুই করছে না ওয়াসাকর্তৃপক্ষ। উল্টো দুই থেকে তিনদিনের মধ্যে পানির পাম্প ঠিক করে সমাধানের আশ্বাস দেওয়া হলেও গত এক মাসের সমাধান হয়নি।
ফলে স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলছেন, আমরা এদিকে পানির জন্য হাহাকার করছি, অন্যদিকে ওয়াসাকর্তৃপক্ষ ফাঁকিবাজি করে সময় পার করছেন।
বুধবার (২৮ মার্চ) ওই এলাকা সরেজমিনে ঘুরে ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা যায়।
নর্দা এলাকায় সরেজমিনে দেখা যায়, এলাকার প্রতিটি বাসা বাড়িতে পানির জন্য হাহাকার। পানির তীব্র সংকট থাকায় স্থানীয় বাসিন্দাদের স্বাভাবিক জীবনে ব্যাপক প্রভাব পরেছে।
খাবার পানি বাজার থেকে কিনে চাহিদা মেটানোর চেষ্টা করলেও রান্না, গোসল ও ওয়াশারুমের বিপাকে পরেছেন স্থানীয়রা। বেশ কয়েকটি বাসার বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তাদের অনেকেই এক থেকে দুই সপ্তাহে ধরে তারা বাসায় রান্নাবান্না করতে পারছেন না পানির অভাবে। এছাড়া বাথরুমে গিয়েও পানি না থাকায় বালতি করে পানি এনে ব্যবহার করতে হচ্ছে তাদের।
স্থানীয় বাসিন্দা দেওয়ান সাইফুল বাংলানিউজকে বলেন, আজ হবে কাল হবে এই করে ওয়াসা গত একমাস ধরেও তারা পানির পাম্পটি ঠিক করছে না। যেসব বাসায় সামান্য পরিমানে পানি আসে সেখানে গিয়ে লাইন ধরে গিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে হয় পানির জন্য। এই সামান্য পরিমাণে পানি দিয়ে পাঁচ সদস্যে একটি পরিবার কি চলতে পারে?
নর্দা এলাকার আরেক স্থানীয় বাসিন্দা আলিম আলী বাংলানিউজকে বলেন, একসপ্তাহ ধরে পানির অভাবে গোসল করতে পারছি না। এছাড়া বাথরুমে কি যে সমস্যা হচ্ছে তা বুঝানো যাবে না। এছাড়া অনেকে সময় অজু করার পানিটাও অনেক সময় পাওয়া যাচ্ছে না। এত কিছু হয়ে যাওয়ার পরেও ওয়াসা কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না। অভিযোগ নিয়ে ওয়াসা অফিসে গেলে তারা আজ নয় কাল বলতে বলতে আজ এক মাস পার করলো।
এদিকে নর্দা এলাকার ওয়াসার পানির পাম্পের অফিসে গিয়ে দেখা যায়, কয়েকজন শ্রমিক একটি পাম্প বসানোর কাজ করছেন।
এই শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আগের পাম্পটি দিয়ে পানির সঙ্গে প্রচুর পরিমাণে বালু উঠত। প্রথমে পাম্পটির সারানোর কাজ করা হলেও তা এখন বাতিল করে নতুন পাম্প বসানো হচ্ছে।
এ বিষয়ে ওয়াসার অফিসের পাম্প অপারেটরের সঙ্গে কথা বলতে গেলে দেখা গেছে, তিনি অফিসের দরজা বন্ধ করে ঘুমাচ্ছেন। পরে সাংবাদিক পরিচয়ে তাকে ডেকে কথা বলতে গেলে তিনি দরজায় ফাঁক দিয়ে মাথা উঁকি দিয়ে বলেন, পাম্প ঠিক হতে আরও ১০দিন লাগবে, এর বেশি কিছু বলতে পারবো না।
একমাস হয়ে যাওয়ার পরেও আরও ১০দিন লাগবে কেন? তার নাম জানতে চাইলে তিনি আর কোনো উত্তর না দিয়ে দরজা বন্ধ করে আবার ঘুমিয়ে পড়েন।
বাংলাদেশ সময়: ০৮৩০ ঘণ্টা, মার্চ ২৯, ২০১৮
এমএসি/এএটি