ঢাকা, রবিবার, ৯ ভাদ্র ১৪৩২, ২৪ আগস্ট ২০২৫, ০০ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

জাতীয়

খালের ওপর বসতবাড়ি, কৃষক সুবিধা বঞ্চিত

খোরশেদ আলম সাগর, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১:২৮, মার্চ ২৯, ২০১৮
খালের ওপর বসতবাড়ি, কৃষক সুবিধা বঞ্চিত খালের মুখ বেঁধে বাড়ি নির্মাণ করা হচ্ছে/ ছবি: বাংলানিউজ

লালমনিরহাট: ফসলের সেচ সুবিধা ও বর্ষার পানি নিষ্কাশনের জন্য খনন করা খালের মুখ বেঁধে বসতবাড়ি নির্মাণ করছে প্রভাবশালী মহল। এর অভিযোগ দিয়েও প্রতিকার মিলছে না।

অভিযোগে জানা গেছে, কৃষি জমিতে সেচ সুবিধা ও বর্ষাকালের অতিরিক্ত পানি নিষ্কাশনের জন্য জমি অধিগ্রহণ করে লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার পলাশী গ্রাম থেকে মহিষখোচা ইউনিয়ন হয়ে ভাদাই ইউনিয়নের স্বর্ণামতি সতিনদী পর্যন্ত একটি খাল খনন করে পানি উন্নয়ন বোর্ড। শুধু খননই নয়, খালটিতে পানি আটকিয়ে রেখে সেচ সুবিধা দিতে  দুইটি রেগুলেটর ও বেশ কিছু আউট লাইট তৈরি করা হয়।

সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে খালটি ভরাট এবং রেগুলেটর ও আউট লাইটগুলো অকেজো হয়ে পড়েছে। ফলে কোনো কাজেই আসছে না এটি। সেচ সুবিধা ও বন্যার সময় পানি নিষ্কাশনের জন্য খালটি দ্রুত সংস্কারের দাবি করেও কোনো সুফল পাচ্ছে না বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ। খালের মুখ বেঁধে বাড়ি নির্মাণ করা হচ্ছে/ ছবি: বাংলানিউজএখন অকেজো ও ভরাট এ খালের জমি দখল করে বসতবাড়ি তৈরি করছেন অনেকেই। কোথাও পূর্বের মালিক দখল করে পজিশন বিক্রি করছে মোটা অংকের টাকায়। সেক্ষেত্রে ভূমিহীনরা বঞ্চিত হচ্ছে। কোথাও আবার মূল স্রোতধারার গতিপথ পরিবর্তন হয়ে মালিকানা ও ফসলি জমিতে চলে যাচ্ছে খাল।

খালের পাশের জমির মালিক রীণা বেগম খালটি মূলধারায় নিয়ে সংস্কার করার দাবিতে আদিতমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বরাবরে চলতি সপ্তাহে একটি লিখিত আবেদন করেছেন। কিন্তু কোনো কাজে আসছে না বলে দাবি করে রীণা বেগম বাংলানিউজকে জানান, পলাশী ইউনিয়নের বড়াইবাড়ি মৌজায় খালের পাশেই তার এক খণ্ড জমি রয়েছে। যে জমির ফসলে তার দুই সন্তানের পড়াশোনাসহ সংসার খরচ চলে। সেই জমির অপর প্রান্তে খালের মুখ বেঁধে পানির গতিপথ পরিবর্তন করে বাড়ি নির্মাণ করছেন ওই এলাকার মেন্নাত আলী। ফলে আগামী বন্যায় রীণার ফসলি জমি ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাই প্রতিকার চেয়ে আবেদন করেছেন তিনি। ওই এলাকার কৃষক মোখলেছুর রহমান ও মন্তা মিয়া বাংলানিউজকে বলেন, খালটি সচল থাকায় সেচ সুবিধা পর্যাপ্ত ছিল। ফসলের ফলনও ভালো ছিল। এখন খালটি ভরাট হওয়ায় সেই সুবিধা থেকে আমরা বঞ্চিত। দ্রুত খালটি দখলমুক্ত করে সংস্কার করার দাবি জানাচ্ছি আমরা। খালের মুখ বেঁধে বাড়ি নির্মাণ করা হচ্ছে/ ছবি: বাংলানিউজলালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন বাংলানিউজকে বলেন, অনেক আগে কাজের বিনিময় খাদ্য কর্মসূচির আওতায় খালটি খনন করা হয়েছিল। সেচ সুবিধা দিতে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা ছিল। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না করায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। তবে সংস্কারের প্রয়োজন হলেও বর্তমানে সংস্কার করার কোনো বরাদ্দ নেই। বরাদ্দ পেলে, তা সংস্কার করা হবে।

আদিতমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আসাদুজ্জামান বাংলানিউজকে বলেন, রীণার অভিযোগটি তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করতে মহিষখোচা ইউনিয়ন ভূমি অফিসকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তদন্ত শেষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ০৭২৬ ঘণ্টা, মার্চ ২৯, ২০১৮
টিএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।