ঢাকা, সোমবার, ৯ ভাদ্র ১৪৩২, ২৫ আগস্ট ২০২৫, ০১ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

জাতীয়

হাইড্রোপনিক্স পদ্ধতিতে ফলন বাড়বে ১০ গুণ

শেকৃবি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২:০৯, মার্চ ২৭, ২০১৮
হাইড্রোপনিক্স পদ্ধতিতে ফলন বাড়বে ১০ গুণ সেমিনারে কথা বলছেন আলোচকরা/ছবি: বাংলানিউজ

শেকৃবি: হাইড্রোপনিক্স হলো মাটি ছাড়া অন্য যেকোনো মাধ্যমে চাষের একটি  পদ্ধতি। এ পদ্ধতিতে চাষের জন্য গাছের ১৬টি প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান নিয়ে বাংলাদেশের আবহাওয়া উপযোগী একটি দ্রবণ তৈরি করেছেন শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শেকৃবি) অধ্যাপক ড. জাহিদুর রহমান।

উদ্ভাবিত এ দ্রবণটি সঠিক পরিমাণে সরবরাহ করা গেলে প্রতিটি গাছ থেকে মাঠ ফসলের চেয়ে ৮-১০ গুণ বেশি ফলন যাবে বলে জানান তিনি।  

মঙ্গলবার (২৭ র্মাচ) বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে  ‘বাংলাদেশে টেকসই হাইড্রোপনিক্স ফসল উৎপাদন প্রযুক্তি’ শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।

 

সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অধ্যাপক ড. জাহিদুর রহমান। এতে তিনি বলেন, উদ্ভাবিত পুষ্টি দ্রবণ ব্যবহার করে টমেটো, ক্যাপসিকাম, মরিচ, করলা, লেটুস, শশা, কলা, ঢেঁড়স ও বিভিন্ন শাকজাতীয় সবজির ফলন মাঠের চেয়ে প্রায় ৮ থেকে ১০ গুণ বেশি পাওয়া গেছে আমাদের গবেষণায়।

‘কৃষকরা মাঠে প্রয়োজনের অতিরিক্ত সার প্রয়োগ করেন। এতে সারের অপচয় হয় ও উৎপাদন খরচও বাড়ে। অন্যদিকে, গাছের প্রয়োজন অনুযায়ী পুষ্টিদ্রবণ সরবরাহ করায় হাইড্রোপনিক্স পদ্ধতিতে খরচ অনেক কম হয়। ’
হাইড্রোপনিক্স পদ্ধতিতে চাষাবাদ
হাইড্রোপনিক্স গবেষক জাহিদুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, হাইড্রোপনিক্স পদ্ধতিতে ফসল উৎপাদন খুবই লাভজনক। কিন্তু হাইড্রোপনিক্স পদ্ধতিতে চাষের উপযোগী একটি কাঠামো তৈরি একটু ব্যয়বহুল। বিশটি গাছ চাষ করা যাবে এমন কাঠামো দাঁড় করাতে প্রায় বিশ থেকে ২৫ হাজার টাকা খরচ হবে। তবে, এসব কাঠামো প্রায় বিশ থেকে ত্রিশ বছর পর্যন্ত ব্যবহার করা যাবে। আবার ফলনও অনেক বেশি হয়। ’

উদ্ভাবিত দ্রবণের মূল্যের বিষয়ে তিনি বলেন, বর্তমানে অনেকেই হাইড্রোপনিক্স চাষ পদ্ধতির দিকে ঝুঁকছেন। কিছু বিজনেস কোম্পানি দ্রবণের দাম অনেক বেশি রাখছেন। তবে আমাদের কাছে প্রতি লিটার ৩০ টাকাতেই পাওয়া যাবে।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি উপাচার্য অধ্যাপক ড. কামাল উদ্দিন আহাম্মদ বলেন, এ চাষ পদ্ধতিতে ঢাকা শহরের বাসিন্দারা খুব সহজেই বাড়ির ছাদে কিংবা ঘরের ভিতরে সবজি ও ফুল চাষ করতে পারবেন। আমরা এখন উন্নয়নশীল দেশের দিকে যাচ্ছি। শুধু ভাত ও আলু ভর্তা দিয়ে পেট ভরলেই চলবে না। নিশ্চিত করতে হবে পুষ্টিকর খাদ্যের।

কৃষি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. রুহুল আমিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. অনোয়ারুল হক বেগ, বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত হাইড্রোপনিক্স চাষিরা।  

ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা ও শহরায়নের ফলে কৃষিজমি দিন দিন কমে যাচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাংলাদেশের কৃষি অনেক ঝুঁকির মধ্যে। দেশের অনেক অঞ্চল এখন বন্যাকবলিত হয়।  ক্রমবর্ধমান এ বিশাল জনগোষ্ঠীর খাদ্য চাহিদা মেটাতে এসব এলাকা কৃষির আওতায় আনতে হাইড্রোফনিক্স ছাড়া বিকল্প নেই। একই সঙ্গে বাড়াতে হবে ভার্টিক্যাল চাষ পদ্ধতিও।  

বাংলাদেশ সময়: ১৮০৪ ঘণ্টা, মার্চ ২৭, ২০১৮
এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।