ডিএনসিসির ঘোষণা ছিল, তাদের নিয়ন্ত্রণাধীন শ্যামলী ওয়ান্ডারল্যান্ডে সকাল-সন্ধ্যা শিশুদের জন্য ফ্রি-তে প্রবেশ ও সব রাইড ফ্রি চড়ার সুযোগ থাকবে স্বাধীনতা দিবসে। এই ঘোষণা গণমাধ্যমে প্রকাশ হলে ব্যাপক সাড়া পড়ে।
কিন্তু ঘোষণাটা যে শ্রেফ প্রতারণা ছিল সেটা মানুষ বুঝতে পারেন ২৬ মার্চ ওয়ান্ডারল্যান্ডে যাওয়ার পর। প্রবেশে কোনো টাকা না লাগলেও প্রতিটি রাইডে চড়ার জন্য শিশুদের কাছ থেকে আদায় করা হচ্ছে ৪০ টাকা করে। টিকিট ছাড়া কোনো রাইডে ওঠার সুযোগ দেয়নি কর্তৃপক্ষ।
বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর পেয়ে তিন বাচ্চা নিয়ে ইঞ্জিনিয়ার সজল এসেছিলেন ওয়ান্ডারল্যান্ডে। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, আমরা তো শুনেছি রাইড ফ্রি। এসে শুনি ওরা বলছে কোনো রাইড ফ্রি নেই। আমি ১৫টি টিকিট নিয়েছি। মনে হচ্ছে আরো নিতে হবে।
জহিরুল নামে আরেক অভিভাবক বলেন, আমি তো পত্রিকা দেখেই এসেছি। সেখানে স্পষ্ট উল্লেখ ছিল রাইড ফ্রি। এখন এসে দেখছি কোনো ফ্রি রাইড নেই। ওরা বলছে দুপুর ২টা পর্যন্ত নাকি ফ্রি ছিল। আমরা তো দেখেছি সকাল-সন্ধ্যা ফ্রি।
এ বিষয়ে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা আমিনুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, হ্যাঁ, আজ সব রাইড ও বাচ্চাদের প্রবেশে কোনো টিকিট লাগবে না। আমরা সেই নির্দেশনা দিয়েই চিঠি দিয়েছি। চিঠিতে অস্পষ্টতা থাকতে পারে। বিষয়টি কেন এমন হলো আমরা তা ওয়ান্ডারল্যান্ড কর্তৃপক্ষের কাছে জানতে চাইবো। ভবিষ্যতে বিষয়গুলো আমরা আরও স্পষ্ট করবো।
ওই কর্মকর্তা স্বাক্ষরিত সেই চিঠিতে কি লেখা আছে তা দেখতে ওয়ান্ডারল্যান্ডের অফিসে যোগাযোগ করলে চিঠিটি পাওয়া যায়। তাতে লেখা রয়েছে, ‘মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে জাতীয় কর্মসূচি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ২০১৭ সালের ১২ জানুয়ারি আন্তঃমন্ত্রণালয় সভার কার্যবিবরণীর ক্রমিক নং- ২৫ এর আলোকে ওয়ান্ডারল্যান্ড শিশুপার্ক ২৬ মার্চ সকাল-সন্ধ্যা উন্মুক্ত রাখা এবং বিনা টিকিটে প্রবেশে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশনা দেওয়া হলো। ’
চিঠিতে অবশ্য রাইড ফ্রি’র কথা উল্লেখ নেই। কিন্তু গণমাধ্যমে যে বিজ্ঞপ্তি পাঠানো হয় তাতে প্রবেশ ফ্রি ও বিভিন্ন সুবিধার কথা উল্লেখ ছিল। সেই অনুযায়ী সব গণমাধ্যম এটা প্রচার করে।
এ বিষয়ে ওন্ডারল্যান্ডের ম্যানেজার মোহাম্মদ নুরুল হুদা মুকুল বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের রাইড ফ্রি'র কথা বলা হয়নি। তাছাড়া এরকম বিশেষ দিনে রাইড ফ্রি রেখে চালানো সম্ভব? মানুষ আঁটতে পারবো? তাছাড়া এখানকার কর্মচারীদের বেতন, রক্ষণাবেক্ষণ এই টিকিটের টাকা দিয়েই চলে। তারপরেও আমরা অনাথ, প্রতিবন্ধী শিশুদের ক্ষেত্রে ছাড় দেই।
বাংলাদেশ সময়: ২০১৫ ঘণ্টা, মার্চ ২৬, ২০১৮
এসএম/এএ