ঢাকা, শুক্রবার, ৭ ভাদ্র ১৪৩২, ২২ আগস্ট ২০২৫, ২৭ সফর ১৪৪৭

জাতীয়

যুদ্ধ জাহাজে মুগ্ধ উৎসুক জনতা

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২:০৮, মার্চ ২৬, ২০১৮
যুদ্ধ জাহাজে মুগ্ধ উৎসুক জনতা সদরঘাটে নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ দেখতে ভিড়/ছবি: ডি এইচ বাদল  

ঢাকা: এতদিন শুধু নামই শুনেছেন যুদ্ধ জাহাজের। কিন্তু কাছ থেকে কখনো দেখা হয়ে ওঠেনি। আজ সেই যুদ্ধ জাহাজে উঠে দেখার সুযোগ হলো। নিজেকে ধন্য মনে করছেন মাদারীপুরের ইব্রাহিম। সদরঘাটে টোল আদায়ের কাজ করেন। চোখে-মুখে আনন্দের চিহ্ন তার। 

বাংলানিউজকে নিজের অভিব্যক্তি প্রকাশ করে ইব্রাহিম জানান, নদীর তীরে বসে কাজ করার সুবাদে বহুবার এ ধরনের জাহাজ চলাচল করতে দেখেছেন। কিন্তু কখনো উঠে দেখার সৌভাগ্য হয়নি।

স্বাধীনতা দিবসে সেই সুযোগ পেয়ে কাজে লাগিয়েছেন। বলেন, যুদ্ধ জাহাজটা ঘুরে দেখলাম। ভেতরে এতকিছু থাকে তা আগে জানতাম না। ছাদের উপর ৪টি কামানও দেখলাম। কামান দিয়ে গোলা ছোড়া হয় তা এবার নিজের চোখে দেখলাম।   

বুড়িগঙ্গার পানি বাড়তে শুরু করেছে। এখন রোজ বিকেলে বুড়িগঙ্গার তীরে বৈকালিক ভ্রমণে বের হন অনেকে। পাশাপাশি সব বয়সী মানুষের পদচারণাও বেড়েছে বেশ। ছুটি কিংবা কোনো বিশেষ দিনে তা বাড়ে কয়েক গুণ। ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে সরকারি ছুটির দিনের চিত্রও ছিল ব্যতিক্রম।

সদরঘাটে নৌবাহিনীর যুদ্ধ জাহাজএদিন নৌবাহিনীর যুদ্ধ জাহাজ বানৌজা ‘অদম্য’ সর্বসাধারণের পরিদর্শনের জন্য খোলা ছিল। দুপুর ২টা থেকে বিকেল ৪টা পর‌্যন্ত জাহাজে উঠে ঘুরে দেখার সুযোগ পান দর্শনার্থীরা। উৎসাহী মানুষের পদচারণায় মুখরিত ছিল ‘অদম্য’। নৌবাহিনীর সদস্যরা আগত দর্শনার্থীদের জাহাজ সম্পর্কে বর্ণনাও দেন। এ সময়ে প্রায় এক হাজার দর্শনার্থী জাহাজ পরিদর্শনের সুযোগ পান।

জাহাজটির কমান্ডিং অফিসার কমান্ডার রেজাউল হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, এটি চট্টগ্রাম নৌ আঞ্চলিক বহরের একটি যুদ্ধ জাহাজ। খুলনা শিপইয়ার্ডে দেশের প্রথম ৫টি যুদ্ধ জাহাজ নির্মাণ করা হয়েছিল। তার একটি বানৌজা ‘অদম্য’। এটি ২০১৩ সালের ২৩ ডিসেম্বর কমিশনপ্রাপ্ত হয়। কমিশনপ্রাপ্তির পর থেকে নিরবচ্ছিন্নভাবে সমুদ্র ও সমুদ্র উপকূলে চোরাচালান, জলদস্যু দমন, অস্ত্র পাচার প্রতিরোধ, জাটকা নিধন বন্ধ, দুর্যোগপূর্ণ সময়ে সহায়তা ও ত্রাণ সহায়তার কাজ করে আসছে। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় দ্রুত ত্রাণ পৌঁছানোর জন্যও এই জাহাজ ব্যবহার করা হয়।

কমান্ডার রেজা বলেন, আমাদের এই যুদ্ধ জাহাজে ৪ জন অফিসার ও ৬৫ জন নাবিক কাজ করেন। গত ২৩ মার্চ চট্টগ্রাম থেকে রওয়ানা হয়ে ২৪ মার্চ পাগলা নৌ-জেটিতে এসে অবস্থান করেন। সোমবার ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে সদরঘাট জেটিতে দুপুর ২টা থেকে ৪টা পর্যন্ত জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত ছিল।

সদরঘাটে নৌবাহিনীর যুদ্ধ জাহাজতিনি বলেন, চট্টগ্রাম, খুলনা, চাঁদপুর, বরিশাল ও ঢাকায় প্রতিবছর ২৬ মার্চ, ২১ নভেম্বর ও ১৬ ডিসেম্বর- এই তিনদিন জনসাধারণ নৌবাহিনীর যুদ্ধ জাহাজ ঘুরে দেখার সুযোগ পান। জাহাজটির দৈর্ঘ ৫১ মিটার ও প্রস্থ সাড়ে ৭ মিটার। এতে দু’টি বড় (৬৭ মি. মিটার) ও দ ‘টি ছোট (২০ মি. মিটার) কামান রয়েছে। বড়টি দিয়ে সাড়ে ৬ মাইল দূরে কামানের গোলা ছোড়া যায়। অপরদিকে ছোট কামান দিয়ে ৩ মাইল দূরের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানা সম্ভব।

ফরিদাবাদ থেকে বাবার সঙ্গে যুদ্ধ জাহাজ দেখতে এসেছে ৫ম শ্রেণির ছাত্র ইসমাইল। জানতে চাইলে ইসমাইল জানায়, টেলিভিশনে জাহাজ দেখলেও এবারই প্রথম কাছ থেকে দেখার সুযোগ পেয়ে সে খুব খুশি।

কেরানীগঞ্জের নাসির উদ্দিন বলেন, জাহাজে উঠতে পেরে খুব ভালো লাগছে। প্রতিবছর এখানে জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত থাকলেও আগে কখনো উঠে দেখিনি। এবারই প্রথম উঠে দেখলাম কীভাবে যুদ্ধের সময় জাহাজের কামান থেকে গোলা ছোড়া হয়।  

বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৮ ঘণ্টা, মার্চ ২৬, ২০১৮
এমএইচ/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।