ঢাকা, শুক্রবার, ৭ ভাদ্র ১৪৩২, ২২ আগস্ট ২০২৫, ২৭ সফর ১৪৪৭

জাতীয়

হেলেনার স্বপ্ন আগুনে পুড়ে ছাই

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭:২১, মার্চ ২৬, ২০১৮
হেলেনার স্বপ্ন আগুনে পুড়ে ছাই হেলেনার স্বপ্ন আগুনে পুড়ে ছাই। ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: চোখের সামনে সবকিছু পুড়ে ছাই হয়ে গেলো হেলেনার। তিল তিল করে জমি কেনার জন্য জমানো টাকা এক মুহূর্তের আগুনে পুড়ে গেছে। ‘সব শেষ সব শেষ’ বলে আহাজারি করছিলেন হেলেনা।

বনানী বিটিসিএল কলোনির বাবর আলীর বাসার ভাড়াটিয়া হেলেনা। সেলাইয়ের কাজ করেন।

স্বামী জাকির হোসেন সিকিউরিটি গার্ডের চাকরি করেন। গ্রামের বাড়ি বাগেরহাটে।

দীর্ঘদিন ধরে কষ্ট করে ঢাকার আশ-পাশে কোথাও একটু জমি কেনার জন্য ৭০ হাজার টাকা জমিয়েছিলেন হেলেনা। সেই টাকা রেখেছিলেন তারই বাড়িওয়ালা বিটিসিএল’র কর্মচারী বাবর আলীর কাছে। রোববার (২৫ মার্চ) শেষ রাতের লাগা আগুনে সব পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। স্বপ্ন স্বপ্নই রয়ে গেলো হেলেনার। আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত ঘর।  ছবি: বাংলানিউজসোমবার (২৬ মার্চ)সকালে বিটিসিএল কলোনির আনসার ক্যাম্প সংলগ্ন আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত ঘরের সামনে কথা হয় হেলেনার সঙ্গে।

তিনি বাংলানিউজকে বলেন, ছেলের সুন্নতে খাতনা করাতে গ্রামের বাড়ি বাগেরহাট গিয়েছিলাম। সেখান থেকে বৃহস্পতিবার ঢাকায় আসি। আগের জমানো আর সুন্নতে খাতনাতে পাওয়া মিলিয়ে ৫০ হাজার টাকা বাড়িওয়ালা বাবর আলীর কাছে রাখি। আমার ঘরে ছিল আরও ২০ হাজার। শুক্রবার বাড়িওয়ালার সঙ্গে মিরপুরে জমি দেখতেও গিয়েছিলাম। তার নিজেরও বেশকিছু টাকা ছিল। তিনিও জমি কিনবেন। শনিবার বিকেলে বাড়িওয়ালা তার স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে গ্রামের বাড়ি গেছেন। আমাকে সব দেখতে বলে গিয়েছিলেন। টাকা সব ঘরের মধ্যেই ছিল।

তিনি আরো বলেন, রোববার রাত সাড়ে ৩টার দিকে হঠাৎ দেখি বাড়িওয়ালার ঘরে আগুন। কাছে গিয়ে দেখলাম মিটারের গোড়ায় আগুন জলে। তাড়াতাড়ি বাচ্চাদের নিয়ে বাইরে চলে আসি। সঙ্গে কিছু আনতে পারিনি। আমার সামান্য স্বর্ণালংকার, টাকাপয়সা যা ছিল সব পুড়ে গেছে। বলতে বলতে কান্নায় ভেঙে পড়েন হেলেনা।

কড়াইল বিটিসিএল কলোনির পূর্বমাথায় কড়াইল বস্তির ওয়াল ঘেঁষে আনসারক্যাম্প সংলগ্ন বিটিসিএল কর্মচারী বাবর আলীর টিনের তৈরি বাসায় রাতে আগুন লাগে। বাবর আলীর ছয় রুমের সব আসবাবপত্রই পুড়ে গেছে। এ সময় পাশের রাজিব, কাজেম আলী ও জুবায়েরের ঘরও সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে। আগুন থেকে রক্ষা করার জন্য ভেঙে ফেলা হয়েছে আরো ১০/১২টি ঘর।

রাজিব বাংলানিউজকে বলেন, আমি বিটিসিএল এর এমএলএসএস। আমার ঘরে মামা আবুল বাশার তার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে থাকতেন। রাতে আগুন লাগার পর মামা তার স্ত্রী সন্তানদের বাইরে বের করে কিছু কাগজপত্র আনার জন্য ঘরে ঢুকেছিলেন। তখন তার পিঠে আগুন লেগে পুড়ে যায়। তাকে ঢাকা মেডিকেলে পাঠানো হয়েছে।

আমির হোসেনের ছেলে বাদল বলেন, রাত সাড়ে তিনটার দিকে আগুন লেগেছে। ফায়ার সার্ভিসে খবর দেওয়ার ২০/২৫ মিনিটের মধ্যে চলে আসে। তারা আগুন নেভায়। এরমধ্যে আমাদের একটি ঘরসহ ৪টি ঘর সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে। আর ১০/১২টি ঘর ভেঙে আশে পাশের ঘরগুলো রক্ষা করা হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৩২১ ঘণ্টা, মার্চ ২৬, ২০১৮
এমএইচ/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।