ঢাকা: দেশে অসংক্রামক রোগের কারণে মৃত্যুর হার ক্রমেই বাড়ছে, আর এসব রোগের অন্যতম প্রধান কারণ তামাক। তামাকের কারণে সৃষ্ট রোগের চিকিৎসা ব্যয় বছরে প্রায় ৩০ হাজার ৫৭০ কোটি টাকা-এ তথ্য জানিয়েছে বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট (বাটা)।
বুধবার (২২ অক্টোবর) এক অনলাইন সভায় এসব তথ্য তুলে ধরেন সংশ্লিষ্টরা। বাটার আয়োজনে এই সভায় মূল বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ভাইটাল স্ট্র্যাটেজিস বাংলাদেশের সিনিয়র টেকনিক্যাল অ্যাডভাইজার অ্যাডভোকেট সৈয়দ মাহবুবুল আলম।
তিনি বলেন, তামাক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমকে আরও কার্যকর করতে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে সমন্বয় ও সহযোগিতা বাড়ানো জরুরি।
বক্তারা বলেন, বর্তমান প্রেক্ষাপটে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়নের পাশাপাশি দ্রুত আইনটি সংশোধন ও শক্তিশালী করাও জরুরি হয়ে পড়েছে।
আলোচনায় আরও বলা হয়, বাংলাদেশের সংবিধানের ১৮ (ক) অনুচ্ছেদে জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর সব পণ্য নিষিদ্ধের দায়িত্ব রাষ্ট্রকে দেওয়া হয়েছে। ফলে তামাক নিয়ন্ত্রণ কেবল স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একক দায়িত্ব নয়-এখানে বাণিজ্য ও অর্থ মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য মন্ত্রণালয়েরও সক্রিয় ভূমিকা প্রয়োজন।
বক্তারা বলেন, অনেক মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যেই তামাক নিয়ন্ত্রণে প্রশংসনীয় উদ্যোগ নিয়েছে। এখন বাণিজ্য, অর্থ, কৃষি, শিল্প ও খাদ্য মন্ত্রণালয়গুলোকেও আরও এগিয়ে আসতে হবে।
সভায় অংশ নেওয়া স্থানীয় সংগঠনগুলোর প্রতিনিধিরা বলেন, দেশে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়নের অগ্রগতি পর্যবেক্ষণ, গবেষণা এবং জনসচেতনতা কার্যক্রমে বেসরকারি সংস্থাগুলোকেও সম্পৃক্ত করা দরকার। তারা অভিযোগ করেন, সারাদেশে টাস্কফোর্স কমিটি থাকলেও অনেক জায়গায় তাদের সভা অনিয়মিত। তাই আইন লঙ্ঘনকারী তামাক কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে নিয়মিত ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়।
আলোচনায় আরও বলা হয়, সম্প্রতি বাংলাদেশ ইকোনমিক জোন অথরিটি (বেজা) একটি নতুন নেশাজাত পণ্য ‘নিকোটিন পাউচ’ তৈরির অনুমোদন দিয়েছে, যা তরুণ প্রজন্মের স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকি তৈরি করবে। বক্তারা বলেন, এই সিদ্ধান্ত সংবিধান, হাইকোর্টের আপিল বিভাগের রায় ও সরকারের জনস্বাস্থ্য নীতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক। তাই অবিলম্বে এই অনুমোদন প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়।
সভায় বাটার অর্ধশতাধিক সদস্য সংগঠনের প্রতিনিধি অংশ নেন এবং তামাক নিয়ন্ত্রণে ভবিষ্যৎ করণীয় নিয়ে মতামত দেন।
পিএ/এসআইএস