ভুয়া প্রতিষ্ঠানকে ৩০ কোটি টাকা ঋণ দিয়ে আত্মসাতের অভিযোগে বেসিক ব্যাংক লিমিটেডের সাবেক চেয়ারম্যান শেখ আব্দুল হাই বাচ্চু ও এমডি ফখরুল ইসলামসহ ১৭ জনের নামে মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
সোমবার (৪ আগস্ট) দুদকের মহাপরিচালক মো: আক্তার হোসেন গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, মেসার্স ফোর এস স্টিল নামের একটি প্রতিষ্ঠান ২০১৩ সালের মার্চ মাসে বেসিক ব্যাংকের গুলশান শাখায় একটি হিসাব খুলে মাত্র তিন দিনের মধ্যে ৫০ কোটি টাকার ঋণের আবেদন করে। ওই প্রতিষ্ঠানের মালিক মো. মাসুদ রানা ২০১৩ সালের ২৫ মার্চ বেসিক ব্যাংক লিমিটেডের গুলশান শাখায় হিসাব খুলেই মাত্র তিন দিন পর ২৮ মার্চ ঋণের আবেদন করেন। জামানত হিসেবে বাড্ডা মৌজার বিভিন্ন খতিয়ান ও দাগভুক্ত ১৮ দশমিক ১৫ কাঠা জমি মর্টগেজ দেওয়ার অঙ্গীকার করেন। আর ওই প্রস্তাব শাখার ক্রেডিট কমিটির কাছে পাঠানো হয়।
ওই কমিটি বিভিন্ন নেতিবাচক দিক, ঝুঁকি ও ঋণ প্রদানে প্রতিবন্ধকতা তুলে ধরলেও গুলশান শাখা প্রধান শিপার আহমেদ তা উপেক্ষা করে নিজের একক ক্ষমতাবলে ঋণ প্রস্তাবটি প্রধান কার্যালয়ে পাঠায়। ওই বছরের ২৮ এপ্রিল ঋণ প্রস্তাবের নানা ত্রুটি ও আপত্তির কথা উল্লেখ করে ঋণ না দেওয়ার পক্ষে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। তারপরও ১০ জুন ব্যাংকটির তৎকালীন ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী ফখরুল ইসলাম ৩২৩তম পরিচালনা পর্ষদের সভায় ঋণ প্রস্তাবটি উপস্থাপন করেন। যেখানে চেয়ারম্যান শেখ আব্দুল হাই বাচ্চু এবং অন্যান্য নয়জন পরিচালক উপস্থিত ছিলেন। তারা প্রস্তাবিত শর্তসাপেক্ষে ৩০ কোটি টাকা ঋণ অনুমোদন করেন। অথচ দুদকের অনুসন্ধানে দেখা যায় ঋণ প্রদানের ক্ষেত্রে ব্যাংক নীতিমালার সুস্পষ্ট লঙ্ঘন করেছে। তাই আসামিদের বিরুদ্ধে বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪০৯/১০৯ ধারা এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭ এর ৫(২) ধারায় তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।
মামলার আসামিরা হলেন, বেসিক ব্যাংক লিমিটেডের সাবেক চেয়ারম্যান শেখ আব্দুল হাই বাচ্চু, ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী ফখরুল ইসলাম, পরিচালক শুভাশিষ বোস, শ্যাম সুন্দর সিকদার, নিলুফার আহমেদ, কামরুন নাহার আহমেদ, এ কে এম রেজাউর রহমান, এ কে এম কামরুল ইসলাম (এফসিএ), মো. আনোয়ারুল ইসলাম (এফসিএমএ), আনিস আহমেদ, প্রতিষ্ঠানটির কোম্পানি সচিব মো. শাহ আলম ভুঞা, জেনারেল ম্যানেজার ও শাখা ব্যবস্থাপক শিপার আহমেদ, উপ-মহাব্যবস্থাপক ওমর ফারুক, ক্রেডিট ইনচার্জ এস এম জাহিদ হাসান, প্রোপ্রাইটর (ফোর এস স্টিল) মো. মাসুদ রানা এবং সাধারণ গ্রাহক কামাল হোসেন সেলিমও তার স্ত্রী সাহিদা আক্তার শিমু।
এসএমএকে/এএটি