বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কমের জামালপুর জেলা প্রতিনিধি সাংবাদিক গোলাম রাব্বানী নাদিম হত্যা মামলার প্রধান আসামি মাহমুদুল আলম বাবুর পুনরায় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান পদ ফিরে পাওয়ায় তীব্র উদ্বেগ ও নিন্দা জানিয়েছেন বরিশালের সাংবাদিক সংগঠনের নেতারা।
তারা বলছেন, একজন সাংবাদিক হত্যার মামলার আসামি যদি পুনরায় জনপ্রতিনিধির পদ ফিরে পান, তবে তা শুধু গণমাধ্যমের স্বাধীনতার জন্য নয়, দেশের সাধারণ মানুষের নিরাপত্তার জন্যও হুমকি হয়ে দাঁড়াবে।
বরিশাল জেলা সাংবাদিক সংস্থার সাধারণ সম্পাদক মো. আরিফুর রহমান বলেন, যারা নিজের স্বার্থ হাসিলের জন্য একজন গণমাধ্যমকর্মীকে হত্যা করতে পারে, তারা আসলে গণমাধ্যমকেই হত্যা করে। আর গণমাধ্যমকে যে হত্যা করতে পারে, সে কখনোই সাধারণ মানুষের প্রতিনিধি হতে পারে না। অতএব সাংবাদিক নাদিম হত্যা মামলার আসামি মাহমুদুল আলম বাবুর বিরুদ্ধে অবশ্যই সরকারকে কঠোর আইনগত পদক্ষেপ নিতে হবে। কারণ, এ ধরনের অপরাধীরা পার পেয়ে গেলে শুধু গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নয় রাষ্ট্রের সাধারণ মানুষও হুমকির মধ্যে পড়বে।
বরিশাল জেলা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি সাংবাদিক আযাদ আলাউদ্দিন বলেন, সাংবাদিক নাদিম হত্যা মামলার আসামি মাহমুদুল আলম বাবু। যেখানে তাকে আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করা উচিত, সেখানে তাকে পুরস্কার হিসেবে চেয়ারম্যান পদ ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই। আমাদের প্রত্যাশা ওই আসামিকে দ্রুত গ্রেপ্তার করে এবং তার জামিন বাতিল করে কারাগারে প্রেরণ করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ উদ্যোগী হবেন নয়তো এর প্রতিবাদের কঠোর আন্দোলন করতে আমরা প্রস্তুত রয়েছি।
বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি আনিসুর রহমান খান স্বপন বলেন, বিচার বিভাগকে স্বতন্ত্র স্বাধীন করা এখনও সম্ভব হয়নি। না হলে জামিনে মুক্ত হওয়া হত্যা মামলার আসামির চেয়ারম্যান পদ ফিরে পাওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হত না। তিনি বলেন, প্রশাসনের উচিত সাংবাদিক নাদিম হত্যা মামলার আসামির জামিন যাতে বাতিল হয় সে বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়া, পাশাপাশি তার চেয়ারম্যান পদের ওপর বরখাস্তাদেশ বহাল রাখতে উচ্চ আদালতের আদেশের বিপক্ষে আপিল করা যাতে।
২০২৩ সালের ১৪ জুন জামালপুরে পেশাগত দায়িত্ব পালন শেষে বাড়ি ফেরার পথে সাংবাদিক গোলাম রাব্বানী নাদিম দুর্বৃত্তদের হামলার শিকার হন। পরদিন ১৫ জুন ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
এই ঘটনায় নিহতের স্ত্রী মনিরা বেগম বাদী হয়ে সাধুরপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল আলম বাবুকে প্রধান আসামি করে মামলা দায়ের করেন।
পরে ২০২৩ সালের ২০ জুন স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় তাকে ইউপি চেয়ারম্যান পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত করে। এরপর জামিনে মুক্ত হয়ে তিনি উচ্চ আদালতে রিট করেন এবং চলতি বছরের ১৯ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট ছয় মাসের জন্য বরখাস্তের আদেশ স্থগিত করেন। এর ফলে তিনি পুনরায় চেয়ারম্যান পদ ফিরে পান।
এমএস/এমজে