দেশের রাজনৈতিক অঙ্গন অনন্য একটি দৃষ্টান্ত দেখল রোববার (৩ আগস্ট)। একই এলাকায় তিনটি রাজনৈতিক দল বা সংগঠনের কর্মসূচি হয়েছে কোনো ধরনের উসকানি বা অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই।
এদিন বিকেলে শাহবাগে ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থান, শোক ও বিজয়ের প্রথম বর্ষপূর্তি’ উপলক্ষে সমাবেশ করেছে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল। প্রায় একই সময়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সমাবেশ করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপি। আর দুই স্থানের মাঝের জায়গা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ‘ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান–২০২৪’ শীর্ষক স্মৃতি লিখন প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান করেছে ইসলামী ছাত্রশিবির।
তিন কর্মসূচিই শেষ হয়েছে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই। উপরন্তু ছাত্রদলের সমাবেশের পর সংগঠনটির নেতা-কর্মীরা আয়োজনস্থলের আবর্জনা পরিচ্ছন্ন করে প্রশংসা কুড়ান। অবশ্য এর আগে ছাত্রদল কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সমাবেশের ঘোষণা দিয়েও পরে এনসিপির অনুরোধে সেখানে আয়োজন থেকে সরে আসে, তাদের সেই উদারতাও ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হয়।
রাজধানীর রামপুরা থেকে গুলিস্তানগামী একটি যাত্রীবাহী বাসে এ নিয়েই আলোচনা চলছিল যাত্রীদের মধ্যে। এক যাত্রী বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, ‘তিনটা দল একসঙ্গে, এক এলাকায় জনসভা করছে? এটা কি সম্ভব এ দেশে?’
তার কথার প্রেক্ষিতে বাসের অন্য যাত্রীরা বলেন, ‘গত দুই যুগেও এমনটা কেউ কল্পনাও করতে পারেনি। ’
এক্ষেত্রে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে পতিত আওয়ামী লীগের আমলে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সমাবেশ-কর্মসূচি করতে না পারার প্রসঙ্গও উঠে আসে। এমনকি ২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবর নয়াপল্টনে বিএনপির সমাবেশ চলাকালে একই সময়ে গুলিস্তানে আওয়ামী লীগের কর্মসূচিতে যাওয়ার সময় দলটির ক্যাডারদের হামলার প্রসঙ্গও টানেন অনেকে।
সচেতন মহল এই ঘটনাকে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনের ইতিবাচক চিত্র হিসেবে দেখছেন। যদিও ছোটখাটো কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটছে, তবু সামগ্রিকভাবে সবাই যে যার মত করে মতপ্রকাশ করতে পারছে, এটা সাম্প্রতিক সময়ে একটা গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি বলে মনে হচ্ছে তাদের।
জানা যায়, তিনটি রাজনৈতিক দল-সংগঠনের সমাবেশের পাশাপাশি চলমান এইচএসসি পরীক্ষা ঘিরে নিরাপত্তা সংক্রান্ত ব্যাপক প্রস্তুতি নেয় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। যানজটের ভোগান্তি এড়াতে আগেই নির্দেশনা দেওয়া হয়।
দিন শেষে দেখা যায়, নিয়ন্ত্রিত যান চলাচলের কারণে সড়কে তেমন যানজট হয়নি। এমনকি অনেক জায়গায় যানবাহনেরও সংকট দেখা গেছে।
এজেডএস