ঢাকা, মঙ্গলবার, ৬ শ্রাবণ ১৪৩২, ২২ জুলাই ২০২৫, ২৬ মহররম ১৪৪৭

জাতীয়

ক্লাস শেষ হলেও বৃত্তির কোচিংয়ের জন্য স্কুলে থেকে যায় তানভীর, হলো লাশ

ইউনিভার্সিটি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০:৪১, জুলাই ২১, ২০২৫
ক্লাস শেষ হলেও বৃত্তির কোচিংয়ের জন্য স্কুলে থেকে যায় তানভীর, হলো লাশ জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে স্বজনদের ভিড়। ছবি: ডিএইচ বাদল

‘ক্লাস ছুটি হয়ে গিয়েছিল। বৃত্তির জন্য কোচিং করতে স্কুলে থেকে গিয়েছিল।

বৃত্তির জন্য ওকে মনোনীত করা হয়েছিল। কিন্তু বিমান দুর্ঘটনায় আজ আমার ছেলে আর নাই। ’

এ কথা বলতে বলতে কান্নায় ভেঙে পড়ছিলেন মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী তানভীর আহমেদের বাবা রুবেল। তানভীর মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে ক্যাম্পাসে সোমবার (২১ জুলাই) দুপুরে বিমান বাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তে প্রাণ হারিয়েছে।

দুর্ঘটনায় হতাহত শিক্ষার্থীর স্বজনদের মতো রুবেলও জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ছুটে এসেছেন সন্তানের খোঁজে।

বাবার ভাষ্যে, তানভীর মাইলস্টোন কলেজে অষ্টম শ্রেণীর ছাত্র ছিল। একই স্কুলে তার ছোট ভাই তাশফিক পড়াশোনা করে। স্কুল ছুটি হওয়ায় তাকে নিয়ে বাসায় চলে যান বাবা। তবে বৃত্তির কোচিং করতে থেকে যায় তানভীর।  

কিন্তু দুর্ঘটনা তাকে বাড়ি ফিরতে দিল না। তানভীরের এমন মৃত্যু কোনোভাবেই মানতে পারছে না বাবা। বার্ন ইনস্টিটিউটের করিডোরে বুক চাপড়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।  

রুবেল বলেন, আমার ছেলে কখনো প্রথম ছাড়া কখনো দ্বিতীয় হয়নি। সে অত্যন্ত মেধাবী ছিল।  

কাঁদতে কাঁদতে তানভীরের চাচা শাহ আলম বলেন, বৃত্তির জন্য কোচিং করছিল। তারপরই এই ঘটনা ঘটল। সে ক্লাসের ক্যাপ্টেন ছিল।  

তিনি বলেন, আমরা প্রথমে খবর পাইনি। উত্তরা হাসপাতালে খুঁজেছি। পরে শুনলাম এখানে।  

আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর-আইএসপিআর থেকে জানানো হয়, দুর্ঘটনায় ২০ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ১৭১ জন। এদের বেশিরভাগই শিক্ষার্থী।

নিহতদের মধ্যে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) ১২ জন, জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে দুজন, কুর্মিটোলা জেনারেল হসপিটালে দুজন, লুবনা জেনারেল হাসপাতাল অ্যান্ড কার্ডিয়াক সেন্টারে দুজন, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে একজন এবং উত্তরা আধুনিক হসপিটালে একজনের লাশ রয়েছে।

সিএমএইচে নিহতদের মধ্যে পাইলট ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তৌকির ইসলামও রয়েছেন।

আর আহতদের মধ্যে জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে ৭০ জন, উত্তরা আধুনিক হসপিটালে ৬০ জন, সিএমএইচে ১৭ জন, লুবনা জেনারেল হাসপাতালে ১১ জন, কুয়েত মৈত্রী হাসপাতাল আটজন, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তিনজন এবং উত্তরা ক্রিসেন্ট হাসপাতালে একজন চিকিৎসা নিচ্ছেন।

এফএইচ/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।