ঢাকা, বুধবার, ২৫ আষাঢ় ১৪৩২, ০৯ জুলাই ২০২৫, ১৩ মহররম ১৪৪৭

জাতীয়

বড়পুকুরিয়া খনির ডেটোনেটর বিস্ফোরণে শিশু আহত 

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০:৩৪, জুলাই ৯, ২০২৫
বড়পুকুরিয়া খনির ডেটোনেটর বিস্ফোরণে শিশু আহত 

দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির পরিত্যক্ত ডেটোনেটর (এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস) বিস্ফোরণে ইলিয়াস আলী নামে ১০ বছর বয়সী এক শিশুর ডান হাতের তিনটি আঙুল উড়ে গেছে। শিশুটি বর্তমানে দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

 

মঙ্গলবার (৮ জুলাই) দুপুরে পার্বতীপুর উপজেলার বড়পুকুরিয়া কয়লাখনির সংলগ্ন চৌহাটি গ্রামে এ দুর্ঘটনা ঘটে ।

আহত ইলিয়াস বড়পুকুরিয়া খনির পাশে চৌহাটি গ্রামের আশরাফুল ইসলামের ছেলে। সে স্থানীয় একটি মাদরাসার নাজরা শ্রেণির শিক্ষার্থী।

আহত শিশুর মা লায়লা বেগম বলেন, দুপুরে খাবার খাওয়ার জন্য ছুটি পেয়ে বাসায় আসে ইলিয়াস। পাশের কয়লা খনির ডাস্ট থেকে একটি ধাতব বস্তু পেয়ে বাড়িতে নিয়ে আসে। এরপর মোবাইলফোনের নষ্ট ব্যাটারির সঙ্গে সংযোগ দিলে হঠাৎ বিকট শব্দে সেটির বিস্ফোরণ ঘটে। বিস্ফোরণে তার ডান হাতের তিনটি আঙুল বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির পূর্ব পাশে প্রাচীর ঘেঁষে রয়েছে খনির ডাম্পিং এরিয়া। তার কাটার বেড়া দিয়ে ঘেরা সেই ডাম্পিং এরিয়ায় খনির বিভিন্ন উচ্ছিষ্ট ও বর্জ্য ফেলা হয়। কয়লা, ধাতব পদার্থসহ বিভিন্ন কিছুর সন্ধানে এলাকার লোকজন ওই ডাম্পিং এরিয়ায় প্রবেশ করে। খনির ওই বর্জ্যের ভেতরে পাওয়া জিনিস পরে বিক্রি করে।

মঙ্গলবার দুপুরে ওই শিশু বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি এলাকার ডাম্পিং এলাকা থেকে একটি ধাতব বস্তু পেয়ে বাড়িতে নিয়ে আসে। এরপর মোবাইলের নষ্ট ব্যাটারির সাথে সংযোগ দিলে হঠাৎ বিকট শব্দে সেটির বিস্ফোরণ ঘটে। বিস্ফোরণে তার ডান হাতের তিনটি আঙুল বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় এবং শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে আহত হয়।

পরিবারের সদস্যরা রক্তাক্ত অবস্থায় তাৎক্ষণিক তাকে উদ্ধার করে ফুলবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। চিকিৎসকরা সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান।  

বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী সাইফুল ইসলাম সরকার জানান, এই ডেটোনেটরগুলো কয়লা উত্তোলনের রাস্তা প্রশস্ত করতে ভূগর্ভস্থ পাথর ভাঙার জন্য বিস্ফোরণ ঘটাতে ব্যবহৃত হয়। বিস্ফোরণ ঘটানোর সময় একসাথে ৪০-৫০টি ডেটোনেটর থাকে। বিস্ফোরণ হওয়ার পর ভাঙা পাথর, উচ্ছিষ্ট তার, বিস্ফোরিত ডেটোনেটরসহ বিভিন্ন অংশ ডাম্পিং এরিয়ায় ফেলা হয়। সেখানে দুই/একটি অবিস্ফোরিত ডেটোনেটর থাকতে পারে। তবে যতক্ষণ পর্যন্ত না সেগুলোতে ইলেকট্রিক চার্জের সংস্পর্শে আনা হয় ততক্ষণ পর্যন্ত সেগুলো বিস্ফোরিত হবে না। পুরো ডাম্পিং এরিয়া কাটাতারের বেড়া দিয়ে ঘেরা। এরপরও কেউ কেউ সেসব কাটা তার ফাঁক করে ভেতরে প্রবেশ করে। সেখান থেকে হয়তো শিশুটি অবিস্ফোরিত ডেটোনেটর নিয়ে বাড়িতে গিয়ে ইলেকট্রিকের সংস্পর্শে দিয়েছিল। ফলে সেটি বিস্ফোরিত হয়েছে। আমরা সার্বক্ষণিক শিশুটির পরিবারের সাথে যোগাযোগ করছি। সব ধরনের সহযোগিতা দেওয়া হবে। এছাড়া ঘটনা তদন্তে একজন ডিজিএমকে প্রধান করে চার সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

এমএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।