ঢাকা, সোমবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩২, ২১ এপ্রিল ২০২৫, ২২ শাওয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

চট্টগ্রাম-কুনমিং ফ্লাইট বাংলাদেশ-চীন সম্পর্কের নতুন দুয়ার খুলবে

ইউনিভার্সিটি করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৪৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ২০, ২০২৫
চট্টগ্রাম-কুনমিং ফ্লাইট বাংলাদেশ-চীন সম্পর্কের নতুন দুয়ার খুলবে

ঢাকা: বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেছেন, চট্টগ্রাম থেকে চীনের কুনমিং রাজ্যে সরাসরি ফ্লাইট চালু হলে বাংলাদেশের সঙ্গে চীনের সম্পর্কের একটি নতুন দ্বার খুলবে।

রোববার (২০ এপ্রিল) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

চীনের হুনান প্রদেশের সরকার এবং বাংলাদেশে অবস্থিত চীনা দূতাবাসের যৌথ উদ্যোগে বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘ইউনান শিক্ষা ও স্বাস্থ্য’ প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়।

সকাল সাড়ে ৯টায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন চীনের হুনান প্রদেশের গভর্নর মাও ওয়েইমিং, চীনের ঢাকাস্থ রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান এবং অন্তর্বর্তী সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম প্রমুখ।

অনুষ্ঠানের শুরুতে চীন এবং বাংলাদেশের শিল্পীদের যৌথ কণ্ঠে হুনান প্রদেশের লোকসংগীত পরিবেশন করা হয়। এরপর পরিবেশিত হয় বাংলাদেশের ‘তীর হারা এই ঢেউয়ের সাগর পাড়ি দেব রে’ গান।

চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেন, ৫০ বছরে চীন-বাংলাদেশের সম্পর্ক অনন্য পর্যায়ে পৌঁছেছে। আমরা বর্তমানে একটি নতুন অধ্যায়ে প্রবেশ করেছি। গত মাসে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা চীন ভ্রমণ করেছেন এবং রাষ্ট্রপতি শি জিং পিংয়ের সঙ্গে একটি বড় ধরনের ঐক্যমতে পৌঁছেছেন।

তিনি সম্প্রতি চীন থেকে বাংলাদেশিদের জন্য দেওয়া বিভিন্ন স্বাস্থ্যসেবার প্রতিশ্রুতির কথা তুলে ধরে বলেন, কুনমিংয়ের চারটি হাসপাতাল ছাড়াও অনেকগুলো সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতাল থেকে বাংলাদেশিরা স্বাস্থ্য সুবিধা পাবেন।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ সরকার চট্টগ্রাম-কুনমিংয়ে সরাসরি ফ্লাইট চালুর অনুমোদন দিয়েছে। এটি বাংলাদেশের সঙ্গে চীনের সম্পর্কের ক্ষেত্রে নতুন দ্বার উন্মোচন করবে। এছাড়া ইতিহাসে প্রথমবারের মতো মে মাসের শেষের দিকে চীন বাংলাদেশ থেকে আম আমদানি করবে। চীনের মানুষ বাংলাদেশের সবচেয়ে সেরা আম পাবে। এটি আমাদের সম্পর্কে নতুন মাত্রা যোগ করবে।

স্বাস্থ্যসেবা বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে পরবর্তী বিষয় হয়ে দাঁড়াবে বলেও জানান তিনি।

তিনি জানান, আগামী মাসে চীন কংগ্রেসের গভর্নর এবং বেইজিং থেকে ২০০ বিনিয়োগকারী বাংলাদেশে আসবেন। বাংলাদেশে অনেক বড় আকারে বাংলাদেশ-চায়না বিনিয়োগ সম্মেলন হবে। চীন বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের সঙ্গে কাজ করতে চায়।

অনুষ্ঠানে হুনান প্রদেশের গভর্নর বলেন, আমাদের দুদেশের সম্পর্ক আরও উন্নত করা দরকার। বিদ্যমান শিল্প এবং বাণিজ্যের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে আরও সহজ, যুগোপযোগী এবং বিশ্বস্ত করা দরকার। দুদেশের ভিসা সেবা প্রদান প্রক্রিয়াকেও আরও সহজ করা দরকার।

অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছরে এসে বাংলাদেশ এবং চায়নার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরও দৃঢ় হচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে চীনের সহায়তায় ঢাকার ধামরাইতে হাসপাতাল নির্মাণ, রংপুরে ১০০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল নির্মাণসহ মোট তিনটি বড় হাসপাতাল তৈরির প্রস্তুতি চলছে। সম্প্রতি চীন বাংলাদেশকে একটি রোবোটিক ফিজিওথেরাপি সেট উপহার দিয়েছে। তারা বাংলাদেশের মানুষকে বিভিন্ন ভোকেশনাল ট্রেনিং দেওয়ারও ব্যবস্থা করছে।

তিনি চীনের বন্ধুত্বপূর্ণ এসব সহায়তার মাধ্যমে বাংলাদেশ আরও সমৃদ্ধ হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। এ ছাড়া চীন সরকারের সঙ্গে টেলিমেডিসিন, ফিজিওথেরাপিসহ বিভিন্ন খাতে সমন্বয় করে কাজ করতে আগ্রহী প্রকাশ করেন।

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে চীনের সহায়তার কথা উল্লেখ করে উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম বলেন, ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আমাদের ২০০০ মানুষ জীবন হারিয়েছে। বিপুল পরিমাণ আহত হয়েছে। চীন সরকারের কাছে আমরা এ সংক্রান্ত সহায়তা চাইলে তারা এগিয়ে আসে। ’

বাংলাদেশ সময়: ১৮৪৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ২০, ২০২৫
এফএইচ/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।