ঢাকা, মঙ্গলবার, ৩১ আষাঢ় ১৪৩২, ১৫ জুলাই ২০২৫, ১৯ মহররম ১৪৪৭

আন্তর্জাতিক

সুদানে গর্ভবতী নারী ও শিশুসহ প্রায় ৩০০ জনকে হত্যা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩:০৫, জুলাই ১৫, ২০২৫
সুদানে গর্ভবতী নারী ও শিশুসহ প্রায় ৩০০ জনকে হত্যা

সুদানে মানবাধিকার আইনজীবীদের একটি দল অভিযোগ করেছে দেশটির আধাসামরিক র‍্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ) উত্তর কুর্দোফান রাজ্যে গ্রামগুলোতে হামলা চালিয়ে গর্ভবতী নারী ও শিশুসহ প্রায় ৩০০ মানুষকে হত্যা করেছে।

‘ইমারজেন্সি লইয়ার্স’ নামের আইনজীবী গোষ্ঠী সোমবার (১৪ জুলাই) রাতে এক বিবৃতিতে এই অভিযোগ তোলে।

 

বর্তমানে সুদানের পশ্চিমাঞ্চলে আরএসএফ ও সুদানি সেনাবাহিনীর মধ্যে তীব্র সংঘর্ষ চলছে। ২০২৩ সাল থেকে উভয় পক্ষ গৃহযুদ্ধে জড়িত। সেনাবাহিনী দেশটির কেন্দ্র ও পূর্বাঞ্চলের উপর কঠোর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছে, অন্যদিকে আরএসএফ পশ্চিমাঞ্চল, বিশেষ করে উত্তর কুর্দোফান ও দারফুর নিজেদের দখলে আনার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

ইমারজেন্সি লইয়ার্স জানায়, শনিবার আরএসএফ বারা শহরের আশেপাশের বেশ কয়েকটি গ্রামে হামলা চালিয়েছে, যেটি বর্তমানে তাদের দখলে রয়েছে।

শাগ আল-নোম নামের একটি গ্রামে ২০০ এর বেশি মানুষকে “ভয়াবহভাবে হত্যা” করা হয়েছে বলে জানায় তারা। নিহতদের কেউ কেউ তাদের নিজ ঘরের ভিতর পুড়ে মারা গেছে, আবার অনেকে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছে। আশেপাশের অন্যান্য গ্রামগুলোতেও ৩৮ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন এবং আরও অনেককে জোর করে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

পরদিন, হিলাত হামিদ গ্রামে আরএসএফ আরেকটি “নরহত্যা” চালায়, যেখানে অন্তত ৪৬ জনকে হত্যা করা হয়, যাদের মধ্যে গর্ভবতী নারী ও শিশুরাও ছিল বলে জানিয়েছে আইনজীবীদের এই দলটি।

বিবৃতিতে বলা হয়, এটি প্রমাণিত হয়েছে যে যেসব গ্রামে এই হামলা হয়েছে, সেগুলোতে কোনো ধরনের সামরিক স্থাপনা বা লক্ষ্যবস্তু ছিল না, যা এই অপরাধগুলোর অপরাধমূলক চরিত্র এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের সম্পূর্ণ লঙ্ঘনকে স্পষ্ট করে। আরএসএফ নেতৃত্বকেই এ ঘটনার জন্য দায়ী করা হয়।

জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) রোববার জানায়, ওই অঞ্চলে যুদ্ধ তীব্র হওয়ায় শাগ আল-নোম ও আল-কোরদি গ্রাম থেকে তিন হাজারের বেশি মানুষ পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে।

অনেকেই বারার আশেপাশের এলাকায় আশ্রয় নিয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ সংস্থাটি।

যুক্তরাষ্ট্র ও মানবাধিকার সংগঠনগুলো ইতিমধ্যেই আরএসএফকে যুদ্ধাপরাধ, মানবতাবিরোধী অপরাধ এবং গণহত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত করেছে। দেশজুড়ে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেওয়া এলাকাগুলোতে আরএসএফের সেনারা ব্যাপক লুটপাট ও সহিংসতা চালিয়েছে।

আরএসএফ নেতৃত্ব বলেছে, যারা এসব অপরাধে জড়িত, তাদের বিচারের মুখোমুখি করা হবে।

সুদানের এই গৃহযুদ্ধ বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে ভয়াবহ মানবিক সংকট তৈরি করেছে। জনসংখ্যার অর্ধেকেরও বেশি এখন অনাহারে দিন কাটাচ্ছে এবং দেশে কলেরা সহ বিভিন্ন রোগ ছড়িয়ে পড়েছে।

এখন পর্যন্ত অন্তত ৪০,০০০ মানুষ নিহত হয়েছে এবং ১ কোটি ৩০ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে।

এমএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।