ফ্রান্সের প্রতিরক্ষা ও জাতীয় নিরাপত্তাবিষয়ক সাধারণ সচিবালয় প্রকাশিত নতুন কৌশলগত জাতীয় পর্যালোচনায় সতর্ক করে বলা হয়েছে, ২০৩০ সালের মধ্যেই ইউরোপে একটি বড় যুদ্ধ সংঘটিত হতে পারে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আমরা এমন এক নতুন যুগে প্রবেশ করছি, যেখানে ইউরোপে একটি বড় যুদ্ধের ঝুঁকি আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি।
যদিও মস্কো ইউরোপে হামলার পরিকল্পনার কথা অস্বীকার করেছে, তথাপি প্রতিবেদনে রাশিয়াকে সবচেয়ে বড় হুমকি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর ভূমিকা-সংবলিত এই রিপোর্টে ‘রুশ হুমকি’, ‘রুশ আগ্রাসন’ প্রভৃতি শব্দ ৫০ বারেরও বেশি ব্যবহৃত হয়েছে।
প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, রাশিয়া হলো এমন একটি শক্তি, যা ফ্রান্স, এর মিত্র ও অংশীদারদের স্বার্থ এবং ইউরোপ ও ইউরো-আটলান্টিক অঞ্চলের স্থিতিশীলতার ওপর সরাসরি হুমকি সৃষ্টি করছে।
রাশিয়ার বিরুদ্ধে সাইবার হামলা, নির্বাচনে হস্তক্ষেপ, গুপ্ত হত্যা এবং আফ্রিকা, ল্যাটিন আমেরিকা ও এশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারের মাধ্যমে সংঘর্ষমুখী কৌশল গ্রহণের অভিযোগ আনা হয়েছে।
পর্যালোচনায় আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে, রাশিয়া মলদোভা, বলকান অঞ্চল বা পূর্ব ইউরোপের কোনো ন্যাটো সদস্য রাষ্ট্রেও আগ্রাসী পদক্ষেপ নিতে পারে।
রিপোর্টে ইরান ও চীনকেও দীর্ঘমেয়াদি কৌশলগত হুমকি হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। ইরানকে মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিতিশীলতার দায়ে অভিযুক্ত করা হয়েছে। আর চীনকে বিশ্বব্যাপী আধিপত্য কায়েমের চেষ্টা চালানো শক্তি হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে।
রিপোর্টের উপসংহারে বলা হয়েছে, ফ্রান্সকে অবশ্যই তার সামরিক শক্তি বৃদ্ধি করতে হবে এবং অর্থনীতিকে ‘যুদ্ধ প্রস্তুতি’র মোডে আনতে হবে। একই সঙ্গে গোটা ইউরোপেই নতুন বিনিয়োগের মাধ্যমে প্রতিরক্ষা খাত জোরদারের আহ্বান জানানো হয়েছে।
এই রিপোর্ট এমন এক সময়ে প্রকাশিত হলো, যখন ইউরোপীয় ন্যাটো সদস্য দেশগুলো প্রতিরক্ষা বাজেট জিডিপির ৫% পর্যন্ত বাড়াতে সম্মত হয়েছে, যার পেছনে ‘রুশ হুমকি’-কে প্রধান কারণ হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে।
এদিকে রাশিয়া এই সব অভিযোগ স্পষ্টভাবে অস্বীকার করেছে। ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, পশ্চিমা দেশগুলো তাদের বাড়তে থাকা সামরিক বাজেটকে বৈধতা দিতে রাশিয়াকে ‘দানব’ হিসেবে দেখাচ্ছে।
রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ আরও বলেন, পশ্চিমা নেতারা ইতিহাস ভুলে গেছেন এবং ইউরোপকে রাশিয়ার সঙ্গে সরাসরি সংঘর্ষের দিকে ঠেলে দিচ্ছেন। ইউরোপের সামরিকীকরণের বিষয়টি রাশিয়া তার নিজস্ব কৌশলগত পরিকল্পনায় গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করবে।
সূত্র: আরটি
এমএম