বরিশাল: দায়িত্বে অবহেলায় রোগীর জীবন সংকটাপন্ন এবং চুক্তির টাকা কমাতে অনুরোধ করায় ভর্তি রোগীকে চিকিৎসা না করে ছাড়পত্র দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। এঘটনায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ভোক্তা অধিকার আইনে ক্লিনিক মালিককে দুই লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে ছয় মাসের কারাদণ্ডের রায় ঘোষণা করা হয়েছে।
ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে বরিশালের গৌরনদী উপজেলার টিএন্ডটি মোড় সংলগ্ন মৌরি ক্লিনিকে। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেছেন গৌরনদী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মো. রাজিব হোসেন।
রোগীর বাবা গৌরনদী উপজেলার সুন্দরদী গ্রামের বাসিন্দা আব্দুর রাজ্জাক জানান, গত সোমবার (২৩ জুন) মৌরি ক্লিনিকে তার অসুস্থ মেয়ে ফাতেমা আক্তারকে (১৩) চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসা হয়। এসময় কর্তব্যরত চিকিৎসক ফাতেমার অ্যাপেন্ডিসাইটিস শনাক্ত করে অপারেশনের জন্য পরামর্শ দেন। গত দুইদিন পূর্বে ফাতেমাকে ওই ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়। বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) ফাতেমার অপারেশনের তারিখ ছিল। এজন্য ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ তাদের কাছে ১০ হাজার টাকা দাবি করেন।
রোগী ফাতেমার মা রাজিয়া বেগম অভিযোগ করে বলেন, তারা টাকা কমানোর অনুরোধ জানালে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ ক্ষিপ্ত হয়। যে কারণে তার অসুস্থ মেয়ের চিকিৎসা না দিয়ে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণের জন্য ছাড়পত্র প্রদান করা হয়। অভিযোগ করে তিনি আরও বলেন, ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের অবহেলায় চিকিৎসা না পেয়ে তার অসুস্থ মেয়ের জীবন এখন চরম বিপন্ন। এজন্য বিষয়টি উপজেলা প্রশাসনকে অবহিত করা হয়েছে।
অভিযোগের বিষয়ে গৌরনদী মৌরি ক্লিনিকের পরিচালক মাহমুদ হোসেন মুহিত শরীফ বলেন, ক্লিনিকের দায়িত্বপ্রাপ্ত স্টাফদের ভুলের খেসারত আমাকে দিতে হয়েছে। এ ধরনের ঘটনা ভবিষ্যতে যেন আর না ঘটে সেজন্য সকল স্টাফদের সতর্ক করা হয়েছে।
ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. রাজিব হোসেন জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত সাড়ে নয়টার দিকে ওই ক্লিনিকে অভিযান পরিচালনা করা হয়। এসময় অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় ক্লিনিক মালিককে দুই লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে ছয় মাসের কারাদণ্ডের রায় প্রদান করা হয়েছে। পরে জরিমানার টাকা পরিশোধ করায় ক্লিনিক মালিককে সতর্ক করে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। জনস্বার্থে এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
এমএস/এমএম