পাকিস্তানের সঙ্গে ইন্দাস পানি চুক্তি স্থগিতের সিদ্ধান্তের পর, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বিদ্যমান গঙ্গার পানি বণ্টন চুক্তি পর্যালোচনা ও পরিবর্তনের বিভিন্ন বিকল্প নিয়ে ভাবছে ভারত।
গঙ্গার পানি বণ্টন চুক্তি, যা ১৯৯৬ সালে স্বাক্ষরিত হয়েছিল এবং ২০২৬ সালে মেয়াদ শেষ হবে, সেটি ৩০ বছর পূর্ণ করবে।
এই চুক্তিটি প্রথমবারের মতো শেখ হাসিনার প্রধানমন্ত্রিত্বে ১৯৯৬ সালে স্বাক্ষরিত হয় এবং জানুয়ারি ১ থেকে মে ৩১ পর্যন্ত শুষ্ক মৌসুমে পশ্চিমবঙ্গের ফারাক্কা বাঁধে গঙ্গার পানির প্রবাহ কীভাবে ভাগ হবে তা নির্ধারণ করে।
১৯৯৬ সালের চুক্তিটি ফারাক্কা পানি বণ্টন নিয়ে বিরোধ নিরসনের জন্য গৃহীত হয়। এই বিরোধের সূচনা ঘটে ১৯৭৫ সালে ফারাক্কা ব্যারাজ চালু হওয়ার পর, যার মাধ্যমে গঙ্গার পানি হুগলি নদীতে প্রবাহিত করা হয় যাতে কলকাতা বন্দরের নাব্যতা বজায় থাকে।
এই চুক্তির মাধ্যমে ভারতের মতো উজান দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের মতো ভাটির দেশের মধ্যে ফারাক্কার গঙ্গার পানি ভাগাভাগির নিয়ম নির্ধারণ করা হয়। ফারাক্কা ব্যারাজটি ভগীরথী নদীর ওপর নির্মিত, যা বাংলাদেশের সীমান্ত থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে।
ফারাক্কা ব্যারাজের মাধ্যমে দিনে প্রায় ৪০,০০০ কিউসেক পানি একটি ফিডার ক্যানালে সরিয়ে কলকাতা পোর্ট ট্রাস্টের জন্য সরবরাহ করা হয়।
বর্তমান চুক্তি অনুযায়ী, প্রতি বছর ১১ মার্চ থেকে ১১ মে পর্যন্ত শুষ্ক মৌসুমে, দুই দেশ পর্যায়ক্রমে ১০ দিন মেয়াদে ৩৫,০০০ কিউসেক পানি পায়।
সূত্র জানিয়েছে, ভারত এই সময়ের মধ্যে অতিরিক্ত ৩০,০০০ থেকে ৩৫,০০০ কিউসেক পানি চায়, কারণ দেশটির পানি চাহিদা বেড়েছে।
এই পরিস্থিতিতে ভারত চুক্তিটি পুনর্বিবেচনা করতে চায়, যাতে পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের মধ্যে পানির বণ্টনে ‘আদর্শ ভারসাম্য’ আনা যায়। ভারতের দাবির ভিত্তি হচ্ছে—সেচ, বন্দর রক্ষণাবেক্ষণ এবং বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য আরও বেশি পানির প্রয়োজন।
সূত্র আরও জানায়, পশ্চিমবঙ্গ প্রশাসন কেন্দ্রের অবস্থানকে সমর্থন করছে, কারণ তারা মনে করে বিদ্যমান চুক্তির শর্তগুলো তাদের প্রয়োজন মেটাতে যথেষ্ট নয়।
এমএম