ঢাকা, শুক্রবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩২, ২৫ এপ্রিল ২০২৫, ২৬ শাওয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

কাশ্মীর সীমান্তে ভারত ও পাকিস্তানের সেনাদের গোলাগুলি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০১৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৫, ২০২৫
কাশ্মীর সীমান্তে ভারত ও পাকিস্তানের সেনাদের গোলাগুলি

কাশ্মীরের পহেলগাঁও ঘটনার পর উত্তেজনা পরিস্থিতির মধ্যে ভারত ও পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর মধ্যে গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) রাতে জম্মু-কাশ্মীরের লাইন অব কন্ট্রোলে (এলওসি) দুই পক্ষের মধ্যে এই গুলির ঘটনা ঘটে।

তবে এ ঘটনায় কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।

সামরিক সূত্রের বরাত দিয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি এ তথ্য জানিয়েছে।

ভারতীয় সেনাবাহিনীর দাবি, নিয়ন্ত্রণ রেখা পেরিয়ে ভারতীয় কিছু চৌকিকে লক্ষ্য করে হালকা অস্ত্র দিয়ে গুলিবর্ষণ করে পাকিস্তানের সেনারা। ভারতীয় সেনাবাহিনী পাল্টা জবাব দেয়।

পাল্টা গুলিবর্ষণকে নিরাপত্তা বাহিনীর ‘যথাযথ জবাব’ বলে জানিয়েছে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ। তবে পাকিস্তানি কোনো গণমাধ্যম এখন পর্যন্ত এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে প্রতিবেদন প্রকাশ করেনি।  

মঙ্গলবার ভারতশাসিত কাশ্মীরের পহেলগাঁও হামলায় ২৬ পর্যটক নিহতের ঘটনার দুদিন পর দুই দেশের মধ্যে এই গোলাগুলির ঘটনা ঘটল।  

কোনো তদন্ত ছাড়ায় পহেলগাঁও হামলার দায় পাকিস্তানের ওপর চাপিয়েছে ভারত সরকার। যদিও ইসলামাবাদ এই দাবি অস্বীকার করে একে ‘ফলস ফ্ল্যাগ অপারেশন’ (ঘটনা নিজে ঘটিয়ে দায় শত্রুর ওপর চাপানো) তথা সাজানো নাটক হিসেবে অভিহিত করেছে।

ঘটনার পর পর পাকিস্তানের বিরুদ্ধে একগুচ্ছ কড়া পদক্ষেপে নিয়েছে ভারত। বুধবার আটারি-ওয়াঘা ক্রসিং বন্ধ করে দেয় ভারত, যা বর্তমানে পাকিস্তানের সাথে একমাত্র কার্যকর এবং বৈধ স্থল সীমান্ত ভারতের। পাকিস্তানের নাগরিকদের ভিসা বাতিল ও সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিতসহ বেশ কিছু পদক্ষেপ নেয় ভারত।  

ভারতের পদক্ষেপের জবাবে পাকিস্তানও কিছু কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছে। ভারতীয়দের ভিসা বাতিল, দেশটির সঙ্গে বাণিজ্য স্থগিত, ভারতের বিমানের জন্য আকাশসীমা বন্ধসহ বুধবার বেশ কয়েকটি পালটা পদক্ষেপের ঘোষণা দিয়েছে ইসলামাবাদ।  

সর্বশেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, ভারত পাকিস্তানের বিরুদ্ধে পাঁচটি পদক্ষেপের ঘোষণা দেওয়ার পর পাকিস্তানও পাল্টা আটটি পদক্ষেপের কথা জানিয়েছে।  

এদিকে দুই দেশের সীমান্ত পরিস্থিতি সম্পর্কে জানা গেছে, উভয়পক্ষই সীমান্তে শক্তি বৃদ্ধি করছে। সীমান্ত বরাবর এরই মধ্যে অবস্থান নিয়েছে দুই দেশের বিপুল সংখ্যক সেনা, সাজোয়া ট্যাংক, বোমারু বিমান ও ক্ষেপণাস্ত্র।  

ভারতীয় সূত্র দাবি করছে, সীমান্ত লাগোয়া এলাকায় ইসলামাবাদের সৈন্যসংখ্যা বৃদ্ধির প্রমাণ মিলেছে বিমান ট্র্যাকিং ওয়েবসাইট ‘ফ্লাইটরাডার২৪’-এর স্ক্রিনশট থেকে। পিএএফ১৯৮ এবং লকহিড সি-১৩০ই হারকিউলিস নামের পরিবহন বিমান দক্ষিণের ঘাঁটি থেকে উত্তরে নিয়ে গেছেন রাওয়ালপিন্ডি সেনা কর্মকর্তারা।

এদিকে মিসাইল ধ্বংসের পরীক্ষা চালিয়েছে ভারতীয় নৌবাহিনী। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড জানিয়েছে, পাকিস্তানের নৌ কর্মকর্তারা করাচি উপকূলে তাদের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে সারফেস টু সারফেস মিসাইলের পরীক্ষা চালাচ্ছে, যার জবাবে এই পরীক্ষা চালানো হলো।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী গতকাল বিহারের এক সভায় বলেছেন, পহেলগাঁওয়ে নিরীহ পর্যটকদের হত্যাকারী এবং এই হামলার নেপথ্যে যারা রয়েছে তাদের ছাড় দেবে না ভারত। এসব হামলাকারীর এমন সাজা দেওয়া হবে যা কল্পনারও অতীত।  

পাল্টা জবাব দিয়েছে পাকিস্তানও। পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, ‘যদি ভারত পাকিস্তানের মাটিতে কোনো অভিযান চালানোর কথা চিন্তা করে, এটা কোনো ভুল বোঝাবুঝির মধ্যে থাকা উচিত নয় এবং ভারতকে এর পরিণাম ভোগ করতে হবে। ’

মঙ্গলবার ভারতশাসিত পহেলগাঁওয়ে বন্দুকধারীদের হামলার কমপক্ষে ২৬ জন নিহত হন। নিহতদের মধ্যে একজন নেপালি নাগরিকসহ তিনজন বাঙালি রয়েছেন। তিন বাঙালি পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা।  

বাংলাদেশ সময়: ১০০৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৫, ২০২৫
এসএএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।