নেই দর্শক, নেই উত্তেজনা, ঝড়-গরমে অস্থির অবস্থা। তা সত্ত্বেও আত্মতুষ্টিতে ভুগছেন ফিফা প্রেসিডেন্ট জিয়ান্নি ইনফান্তিনো।
চলমান ক্লাব বিশ্বকাপ নিয়ে সমালোচনার তীব্রতা খণ্ডন করে তিনি বলেছেন, 'এটা (৩২ দলের ক্লাব বিশ্বকাপ) নতুন কিছু, স্বাভাবিকভাবেই কিছু সমালোচনা হবে। তবে এটিই হতে যাচ্ছে ক্লাব ফুটবলের সবচেয়ে বড় মঞ্চ। '
গতকাল শনিবার নিউ ইয়র্কের জাভিটস সেন্টার-এ ফ্যানাটিক ফেস্ট)-এ উপস্থিত হয়ে ইনফান্তিনো বলেন, 'এটা একটা আসল ওয়ার্ল্ড কাপ, যেখানে বিশ্বসেরা ক্লাব ও খেলোয়াড়রা অংশ নিচ্ছে। কেউ কেউ হয়তো প্রশ্ন তুলছে, তবে যারা খেলছে তারা উপভোগ করছে। '
ক্লাব বিশ্বকাপ: ফিফার স্বপ্নের প্রকল্প
এই প্রথম ৩২টি ক্লাবকে নিয়ে বিশ্বকাপ আয়োজন করছে ফিফা। যুক্তরাষ্ট্রের ১১টি শহরে আয়োজিত এই টুর্নামেন্টে রয়েছে ১ বিলিয়ন ডলারের বিশাল প্রাইজ মানি, যার মধ্যে চ্যাম্পিয়ন দল পেতে পারে সর্বোচ্চ ১২৫ মিলিয়ন ডলার।
তবে শুরু থেকেই টুর্নামেন্টটি ঘিরে রয়েছে নানা বিতর্ক—ফিফপ্রো সহ খেলোয়াড় ইউনিয়নগুলো বাড়তি চাপ নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছে, প্রথম সপ্তাহেই দেখা গেছে ফাঁকা গ্যালারি, যা টিকিট বিক্রির দুর্বলতা ইঙ্গিত করে। প্রচণ্ড গরমে খেলোয়াড়দের ক্লান্তি ও পারফরম্যান্সেও পড়ছে প্রভাব।
তবে ইনফান্তিনোর ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া, 'একটা ক্লাব বিশ্বকাপের দরকার ছিল বহু আগেই। ১০০ বছর ধরে আমরা জানি কোন দেশ সেরা, কিন্তু কোন ক্লাব সেরা তা তো জানি না। এখন সেই প্রশ্নের উত্তর পাওয়ার সময় এসেছে। '
তিনি উল্লেখ করেন, বায়ার্ন মিউনিখ বনাম বোকা জুনিয়র্স ম্যাচের কথা, যেখানে হ্যারি কেন বলেন, এটা অসাধারণ এক অভিজ্ঞতা, আমি উপভোগ করছি। '
মার্কিন বাজারে ফুটবলের ভবিষ্যৎ
আমেরিকার সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলার মধ্যে ফুটবল নেই। কিন্তু এর বাজার বিশাল। এই বাজার ধরতেই সেখানে গেছেন ইনফান্তিনো। তার মতে, 'আমেরিকার তরুণরা যাতে ফুটবলকেই ক্যারিয়ার হিসেবে বিবেচনা করে, তার জন্যই এই টুর্নামেন্ট। শুধু খ্যাতি নয়, ফুটবল দিয়েও টাকা, গ্লোরি, সব পাওয়া সম্ভব। '
তিনি আরও বলেন, আমেরিকার মতো ২০ ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতিতে ফুটবলকে প্রতিষ্ঠিত করা হলে বিশ্ব ফুটবলের ভবিষ্যৎ আরও শক্তিশালী হবে। তবে তার সেই স্বপ্ন আদৌ পূরণ হবে কি না, তা নিয়ে বিস্তর সন্দেহ রয়েছে। কারণ, বিশ্বে দর্শকদের মনোযোগ এখন ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধ ঘিরে।
ক্লাব বিশ্বকাপে অনেক 'মানহীন' ফুটবল ক্লাবের অংশগ্রহণ দেখা যাচ্ছে, এমন সমালোচনা রয়েছে। ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো, নেইমার জুনিয়র সহ অনেক বড় ফুটবল তারকাদের অনুপস্থিতি আয়োজনটির আকর্ষণও কমিয়ে দিয়েছে। একা লিওনেল মেসি সেখানে সেভাবে প্রভাব ফেলতে পারছেন না। তার ক্লাব ইন্টার মায়ামিও অতো শক্তিশালী কোনো ক্লাব নয়। এবারই প্রথম, তাও ফিফার 'বদান্যতায়' খেলার সুযোগ পেয়েছে তারা। ফলে মেসিকে ঘিরে প্রত্যাশাও নেই তেমন।
এমএইচএম