ঢাকা, শুক্রবার, ৭ ভাদ্র ১৪৩২, ২২ আগস্ট ২০২৫, ২৭ সফর ১৪৪৭

ফুটবল

আর্জেন্টিনা-চিলির ক্লাব ম্যাচে রক্তক্ষয়ী সহিংসতা, ‘বর্বরোচিত’ আখ্যা দিল ফিফা

স্পোর্টস ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫:২৬, আগস্ট ২২, ২০২৫
আর্জেন্টিনা-চিলির ক্লাব ম্যাচে রক্তক্ষয়ী সহিংসতা, ‘বর্বরোচিত’ আখ্যা দিল ফিফা সংগৃহীত ছবি

আর্জেন্টিনা ও চিলির সমর্থকদের মধ্যে ভয়াবহ সংঘর্ষের ঘটনায় কেঁপে উঠেছে দক্ষিণ আমেরিকার ফুটবল। ছুরি, লাঠি ও স্টান গ্রেনেড ব্যবহার করে স্টেডিয়ামে সংঘটিত এই সহিংসতায় অন্তত ১৯ জন আহত হয়েছেন, যার মধ্যে তিনজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

ঘটনাস্থল থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে ১০০ জনেরও বেশি সমর্থককে।

বুধবার কোপা সুদামেরিকানার শেষ ষোলোয় আর্জেন্টিনার ইন্ডিপেনদিয়েন্তে ও চিলির ইউনিভার্সিদাদ দে চিলের ম্যাচে হাফটাইমে শুরু হয় এ সংঘর্ষ। চিলির সমর্থকরা প্রথমে পাথর, বোতল, লাঠি ও স্টান গ্রেনেড নিক্ষেপ করে। এরপর ইন্ডিপেনদিয়েন্তের সমর্থকরা প্রতিপক্ষের গ্যালারিতে ঢুকে পড়ে—যারা পালাতে পারেনি তাদের মারধর ও রক্তাক্ত করে ফেলে। এক পর্যায়ে খেলা পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়।

চিলির প্রেসিডেন্ট গ্যাব্রিয়েল বরিক এই ঘটনাকে ‘অগ্রহণযোগ্য’ বলে উল্লেখ করেছেন এবং ন্যায়বিচারের আহ্বান জানিয়েছেন। আহতদের পাশে থাকার জন্য তিনি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে বুয়েনস আয়ার্সে পাঠিয়েছেন। সরকারি হিসাবে চিলির ১৯ জন নাগরিক হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন, একজন ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত।

আর্জেন্টিনার গণমাধ্যম জানিয়েছে, কয়েকজন গুরুতর মাথায় আঘাত পেয়েছেন। এমনকি একজন সমর্থক গ্যালারির উঁচু অংশ থেকে নিচে ঝাঁপ দেন বাঁচার জন্য—তবে সৌভাগ্যক্রমে প্রাণে বেঁচে গেছেন।

ইন্ডিপেনদিয়েন্তের সভাপতি নেস্তর গ্রিন্দেত্তি অভিযোগ করেছেন, চিলির সমর্থকরা স্টেডিয়ামের শৌচাগারের টয়লেট পর্যন্ত ভেঙে ফেলেছে। অপরদিকে চিলির সমর্থকরা দাবি করেছে, ইন্ডিপেনদিয়েন্তে কর্তৃপক্ষ ম্যাচের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হয়েছে।

খেলোয়াড় ও সমর্থক উভয় পক্ষই বুয়েনস আয়ার্স পুলিশের ধীর পদক্ষেপের সমালোচনা করেছেন। ম্যাচ স্থগিতের সময় স্কোর ছিল ১-১। খেলোয়াড় ও ম্যাচ কর্মকর্তারা মাঠেই দাঁড়িয়ে মাথায় হাত দিয়ে ভয়াবহ দৃশ্য দেখেন।

ফিফা সভাপতি জিয়ান্নি ইনফান্তিনো ঘটনাটিকে ‘বর্বরোচিত’ বলে বর্ণনা করে কঠোর শাস্তির আহ্বান জানিয়েছেন। দক্ষিণ আমেরিকার ফুটবল নিয়ন্ত্রক সংস্থা কনমেবল জানিয়েছে, তারা ‘সর্বোচ্চ দৃঢ়তার সঙ্গে’ ব্যবস্থা নেবে। সংশ্লিষ্ট দুই ক্লাব জরিমানা থেকে শুরু করে টুর্নামেন্ট থেকে বহিষ্কার পর্যন্ত শাস্তির মুখে পড়তে পারে।

ইউনিভার্সিদাদ দে চিলের সভাপতি মাইকেল ক্লার্ক বলেছেন, ‘কেউ মারা যায়নি, এটা আসলেই এক অলৌকিক ঘটনা। ’ উভয় দলের খেলোয়াড়রাই আহ্বান জানিয়েছেন, এই ধরনের সহিংসতা আর সহ্য করা যাবে না।

দক্ষিণ আমেরিকায় ফুটবল সহিংসতার ইতিহাস দীর্ঘ; গত ২০ বছরে শত শত প্রাণহানি ঘটেছে। চলতি বছরের এপ্রিলে সান্তিয়াগোতে আরেকটি ম্যাচের আগে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে দুজন সমর্থকের মৃত্যু হয়েছিল।

এমএইচএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।