চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) হোল্ডিং ট্যাক্স (গৃহকর ও অন্যান্য রেইট) নির্ধারণে একটি প্রতিষ্ঠানের ২০ কোটি টাকার রাজস্ব জালিয়াতির প্রমাণ পেয়েছে তদন্ত কমিটি।
সোমবার (২০ অক্টোবর) সন্ধ্যায় তদন্ত কমিটি চসিক মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেনের কাছে এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন জমা দেয়।
এর আগে জাতিয়াতির ঘটনাটি তদন্তে চসিকের আইন কর্মকর্তাকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছিল চসিক।
জানা যায়, চসিকের ৮নং রাজস্ব সার্কেলের আওতাধীন দক্ষিণ-মধ্যম হালিশহর এলাকার ইছহাক ব্রাদার্স জালিয়াতির মাধ্যমে ২০ কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকি দেয়।
২০১৭-২০১৮ অর্থবছরে ইছহাক ব্রাদার্স ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের নামের ওই প্রতিষ্ঠানের বার্ষিক মূল্যায়ন ছিল ২৬ কোটি ৩৮ লাখ ১৯ হাজার ২৫০ টাকা। কিন্তু ফিল্ডবুকে ঘষামাজা ও সাদা ফ্লুইড ব্যবহার করে তা ২০ কোটি টাকা কমিয়ে দেখানো হয় ৬ কোটি ৩৮ লাখ ১৯ হাজার ২৫০ টাকা।
সব নথি যাচাই করে তদন্ত কমিটি দেখতে পায়, ফিল্ডবুকের ঘষামাজা করা তথ্য রিভিউ বোর্ডে উপস্থাপন করা হয় এবং সেই তথ্যের ভিত্তিতেই কর নির্ধারণ করা হয়। যার ফলে চসিক বিপুল রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হয়েছে এবং সংশ্লিষ্টরা অনৈতিকভাবে লাভবান হয়েছেন।
তদন্ত প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, ইছহাক ব্রাদার্স ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের মতো একটি বৃহৎ প্রতিষ্ঠানের মূল্যায়নে এমন জালিয়াতি হওয়ার পরও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা নিরব থেকেছেন, যা তাদের দায় এড়ানোর সুযোগ রাখে না। এই ঘটনায় হোল্ডিং মালিকপক্ষেরও প্রত্যক্ষ যোগসাজশ রয়েছে। তারা এ অপরাধের সরাসরি সুবিধাভোগী। এ কারণে সিটি করপোরেশন দীর্ঘদিন ধরে রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছে।
তদন্ত প্রতিবেদনে কর কর্মকর্তা মোহাম্মদ নুরুল আলম এবং উপ-কর কর্মকর্তা জয় প্রকাশ সেন সরাসরি দায়ী বলে উল্লেখ করা হয়েছে। তারা ফিল্ডবুকের বিকৃত তথ্য যাচাই ছাড়াই আপিল বোর্ডে উপস্থাপন করেন।
এছাড়া ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের চাপে ফিল্ডবুক না দেখেই আপিল ফরমে স্বাক্ষর করেছেন বলে স্বীকার করেছেন হিসাব সহকারী আহসান উল্লাহ। এজন্য তা বাতিল করে পুনরায় প্রকৃত মূল্যায়নের (২৬ কোটি ৩৮ লাখ ১৯ হাজার ২৫০ টাকা) ভিত্তিতে নতুন শুনানি করা প্রয়োজন বলে তদন্ত প্রতিবেদনে সুপারিশ করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে চসিক মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, এ ঘটনার সঙ্গে যাদের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে, সবার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ঘটনায় কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।
পিডি/টিসি