ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তৃতীয় ও সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে দাপট দেখিয়ে জয় তুলে নিয়েছে বাংলাদেশ। ২০২৩ সালে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সর্বোচ্চ ১৮৩ রানের ব্যবধানে জয় পেয়েছিল টাইগাররা।
১৯ মাস পর ঘরের মাঠে ওয়ানডে সিরিজ জয় করেছে বাংলাদেশ। সর্বশেষ শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ২০২৪ সালের মার্চে ঘরের মাঠে শেষ ওয়ানডে সিরিজ জয় পেয়েছিল টাইগাররা।
বাংলাদেশের স্পিন আক্রমণের সামনে ধসে পড়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্যাটিং লাইনআপ। ২৯৭ রানের কঠিন লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ৩০.১ ওভার শেষে মাত্র ১১৭ রানেই গুটিয়ে যায় সফরকারীরা।
প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশ নির্ধারিত ৫০ ওভারে করে ২৯৬ রান, ৮ উইকেটের বিনিময়ে। এরপর ব্যাট হাতে নেমে শুরু থেকেই চাপে পড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। নাসুম আহমেদ এবং রিশাদ হোসেনের ঘূর্ণির সামনে ব্যাটারদের একের পর এক উইকেট হারাতে হয়।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের পক্ষে সবচেয়ে বড় ইনিংস খেলেন আকিল হোসেইন, যিনি ১৫ বলে ২৭ রান করে মিরাজের কাছে উইকেট খুইয়ে আসেন। তার আগে কেউই ইনিংস বড় করতে পারেননি। ব্র্যান্ডন কিং করেন ১৮, কিসি কার্টি ১৫, এবং জাস্টিন গ্রিভসও ১৫ রানে থেমে যান। দলের অন্য ব্যাটাররা পুরোপুরি ব্যর্থ।
বাংলাদেশের বোলারদের মধ্যে আজকের দিনে সবচেয়ে সফল ছিলেন নাসুম আহমেদ ও রিশাদ হোসেন। তারা দুজনেই ৩টি করে গুরুত্বপূর্ণ উইকেট তুলে নিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে প্রথম দিকেই চাপে ফেলে দেন। তানভীর ইসলাম ও মেহেদী হাসান মিরাজ প্রত্যেকে ২টি করে উইকেট নেন।
বোলারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে ১১৭ রানেই গুটিয়ে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ফলে বাংলাদেশ জয় তুলে নেয় ১৭৯ রানের বিশাল ব্যবধানে। পাশাপাশি, ২-১ ব্যবধানে ট্রফি নিজেদের ঘরেই রেখে দিচ্ছে টাইগার বাহিনী।
এর আগে, টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে সৌম্য-সাইফের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে শেষ ওয়ানডেতে দারুণ সূচনা করে বড় সংগ্রহ গড়ে বাংলাদেশ। ইনিংসের শুরু থেকেই আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে এগিয়ে যান দুই ওপেনার। পাওয়ারপ্লেতে নিয়ন্ত্রিত ঝুঁকি নিয়ে তারা রান তোলেন দ্রুত গতিতে।
সাইফ হাসান ৭২ বলে ৮০ রানের এক ঝলমলে ইনিংস খেলেন, যেখানে ছিল ৬টি চার ও ৬টি ছক্কা। অপরপ্রান্তে সৌম্য সরকার আরও একবার দেখান তার স্বরূপ। ৮৬ বলে ৯১ রান করেন তিনি ৭টি চার ও ৪টি ছক্কার সাহায্যে। দুজনের ১৪১ রানের উদ্বোধনী জুটি দলকে এনে দেয় রানের দারুণ ভিত, যা ম্যাচের শুরুতেই বাংলাদেশকে এগিয়ে দেয়।
তবে এই জুটি ভাঙার পর ইনিংসের গতি কিছুটা মন্থর হয়ে যায়। তাওহীদ হৃদয় ও নআজমুল হোসেন শান্ত চেষ্টা করেন ইনিংসকে এগিয়ে নিতে। কিন্তু নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারানোর কারণে বড় স্কোরের সম্ভাবনা কিছুটা কমে আসে। হৃদয় ৪৪ বলে ২৮ রান এবং শান্ত ৫৫ বলে ৪৪ রানে আউট হন। শেষ দিকে রিশাদ হোসেন, মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন ও নাসুম আহমেদরা তেমন বড় অবদান রাখতে পারেননি।
তবে শেষদিকে নুরুল হাসান সোহান ও অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজ জুটি গড়ে রানের চাকা সচল করার জোর চেষ্টা চালান। দলীয় ২৯৬ রানে ও ইনিংসের শেষ বলে ব্যক্তিগত ১৭ রানে ফেরেন মিরাজ। সোহান ৮ বলে ১৬ রানে অপরাজিত থাকেন। ফলে ৫০ ওভার শেষে ৮ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশের ইনিংস থামে ২৯৬ রানে।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বোলারদের মধ্যে সবচেয়ে সফল ছিলেন স্পিনার আকিল হোসেন। তিনি ৪ উইকেট নেন ৪১ রানের বিনিময়ে। এছাড়া আথানাজে নিয়েছেন ২ উইকেট। এছাড়া মতি ও চেজ পান একটি করে উইকেট।
এফবি/আরইউ