ঢাকা, বুধবার, ১৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, ২৮ মে ২০২৫, ০০ জিলহজ ১৪৪৬

খেলা

এক রানে হেরে হোয়াইটওয়াশ টাইগাররা

স্পোর্টস ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮:০৩, জুন ৭, ২০১৮
এক রানে হেরে হোয়াইটওয়াশ টাইগাররা আফগানিস্তান ক্রিকেট দল

মুশফিক-রিয়াদের অসাধারণ ব্যাটিং ও সাকিবের কীর্তিতেও হোয়াইটওয়াশ এড়াতে পারলো না বাংলাদেশ। আফগানিস্তানের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজের শেষ ম্যাচে ১ রানে হার মানলো টাইগাররা।

প্রথমে ব্যাট করা আফগানরা ১৪৫ রান করে। ১৪৬ রানের টার্গেটে খেলতে নেমে আফগান তারকা স্পিনার রশিদ খানের কাছেই শেষতক হার মানলো সাকিব-মুশফিকরা।

১৯তম ওভারে ফাস্টবোলার করিমকে দারুণ খেলে পর পর পাঁচটি বাউন্ডারিসহ ২১ রান নেন মুশফিক। শেষ ওভারে দরকার পড়ে ৯ রান। কিন্তু রশিদ খান জুজু কাটাতে পারলো টাইগারা। মুশফিক সীমানার কাছে নজিবুল্লাহকে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন প্রথম বলেই।  

আরিফুল ও মাহমুদুল্লাহ পরের চার বলে বাউন্ডারি না হাঁকাতে পারলে শেষ বলে জেতার জন্য দরকার পড়ে চার রান। কিন্তু অসাধারণ ফিল্ডিং করে বাউন্ডারি বাঁচালে তিন রানও নিতে পারেননি আরিফুল-মাহমুদুল্লাহ। মাহমুদুল্লাহ রান আউট হলে ১ রানে হার মানে বাংলাদেশ।

এদিন শুরুটা ভালো হয়নি বাংলাদেশের। দলীয় ৩৫ রানেই প্রথম ৩ উইকেট হারায় তারা। ৫ রান করে বিদায় নেন তামিম ইকবাল। ১২ রান করেন আরেক ওপেনার লিটন দাস। আর এ ম্যাচেও সফলতা পাননি ১৫ রান করা সৌম্য সরকার।

নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকলে পরে টাইগারদের অধিনায়ক সাকিব আল হাসানও টিকতে পারেননি। ১০ রান করে ফেরেন তিনি। দারুণ খেলে শেষ দিকে আউট হন মুশফিকুর রহিম। ৩৭ বলে ৭টি চারে ৪৬ রান করেন তিনি।

রিয়াদ ৪৫ রান করে অপরাজিত থাকলেও দলকে জয় এনে দিতে পারেননি। ৩৮ বলে তিনি ৩টি চার ও দু’টি ছয়ে ৪৫ রান করেন।

আফগান বোলারদের মধ্যে ১টি করে উইকেট পান মুজিব উর রহমান, করিম জানাত ও রশিদ খান।  ম্যান অব দ্যা সিরিজ রশিদ খান হলেও ম্যান অব দ্যা ম্যাচের পুরস্কার ওঠে মুশফিকের হাতে।

ভারতের দেরাদুন সত্যিই আফগানদের হোম গ্রাউন্ডে পরিণত হয়েছে যেন। তিন ম্যাচের দুই ম্যাচ হেরে সিরিজ আগেই হাতছাড়া হয়ে যায়। তৃতীয় ম্যাচটি তাই বাংলাদেশের জন্য মান রক্ষার ম্যাচে পরিণত হয়। দুই ম্যাচ পর নিজের এ ম্যাচে কাঙ্ক্ষিত রেকর্ড গড়েন টাইগার অধিনায়ক সাকিব আল হাসান।

বৃহস্পতিবার (৭ জুন) ভারতের দেরাদুনের রাজিব গান্ধী স্টেডিয়ামে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টি ম্যাচে টসে জিতে ব্যাটিং বেছে নেন আফগান অধিনায়ক আজগর স্ট্যানিকজাই। ব্যাটিং করতে নেমে ওপেনিং জুটিতেই ৫৫ রান তুলে ফেলেন দুই আফগান ওপেনার মোহাম্মদ শাহজাদ-উসমান গণি। আগ্রাসী হয়ে ওঠা শাহজাদকে এলবিডব্লিউ’র ফাঁদে ফেলে জুটি ভাঙেন নাজমুল ইসলাম অপু। আফগানদের রানের খাতায় আর ৪ রান যুক্ত হতেই আরেক ওপেনার উসমান গণিকে তুলে নেন পেসার আবু জায়েদ রাহি।

আফগান অধিনায়ক আজগর স্ট্যানিকজাই ১৭ বলে ৩ ছক্কায় ২৭ রানের ছোট্ট ঝড় তুলেন। তাকে সাব্বির রহমানের (বদলি ফিল্ডার) ক্যাচে পরিণত করে ম্যাচে প্রথম উইকেটের দেখে পান বোলার আরিফুল। আগের দুই ম্যাচেই বাজে ব্যাটিং করা সাব্বির রহমানকে ছাড়াই মাঠে নামে বাংলাদেশ দল। তার বদলে সিরিজে প্রথমবারের মতো সুযোগ পেয়েছেন তরুণ ক্রিকেটার আরিফুল হক।  

শেষদিকে সামিউল্লাহ শেনওয়ারির (২৮ বলে ৩৩) ব্যাটে ভর করে ২০ ওভার শেষে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৪৫ রানের সংগ্রহ গড়েছে আফগানরা।

বাংলাদেশের বোলারদের মধ্যে সবচেয়ে সফল স্পিনার নাজমুল ইসলাম। ৪ ওভার বল করে ২ উইকেট পেয়েছেন তিনি। সমান ওভারে ২৭ রান খরচে সমান ২ উইকেট পান আবু জায়েদও। অধিনায়ক সাকিব আল হাসান ৪ ওভারে ১৬ রান খরচে তুলে নেন ১ উইকেট।

বল হাতে ১৯তম ওভারের প্রথম বলেই নাজিবুল্লাহ জাদরানকে মাহমুদুল্লাহ’র ক্যাচে পরিণত করে নতুন এক রেকর্ড গড়েছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। মাত্র তৃতীয় ক্রিকেটার হিসেবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১০ হাজার রান ও ৫০০ উইকেটের ডাবল ছোঁয়ার অনন্য রেকর্ড গড়েছেন বিশ্বের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডার সাকিব।

বর্তমানে তিন ফরম্যাট মিলিয়ে সাকিবের রান ১০ হাজার ৭৪ এবং উইকেট সংখ্যা ৫০০টি। শুধু তাই নয়, এই তালিকায় তিনিই হলেন সবচেয়ে দ্রুততম ক্রিকেটার।

বাঁহাতি স্পিন অলরাউন্ডারের আগে দক্ষিণ আফ্রিকার জ্যাক ক্যালিস ৪২০ ম্যাচে এবং পাকিস্তানের শহীদ আফ্রিদি ৪৭৭ ম্যাচে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১০ হাজার রান ও ৫০০ উইকেটের ডাবল ছুঁয়েছিলেন। কিন্তু সাকিব মাত্র ৩০০টি ম্যাচ খেলেছেন।

বাংলাদেশ সময়: ০০০৩ ঘণ্টা, জুন ৮, ২০১৮
এমএমএস/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।