ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৩০ শ্রাবণ ১৪৩২, ১৪ আগস্ট ২০২৫, ১৯ সফর ১৪৪৭

খেলা

চ্যাম্পিয়ন হয়েও কোচবিহীন, সাকলাইনের আক্ষেপ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, স্পোর্টস  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১:৪৯, আগস্ট ১৪, ২০২৫
চ্যাম্পিয়ন হয়েও কোচবিহীন, সাকলাইনের আক্ষেপ

মাত্র ১৩ বছর বয়সে জাতীয় জুনিয়র দাবা চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করেছেন সাকলাইন মোস্তফা সাজিদ। দেশের দাবা অঙ্গনে তার প্রতিভার উজ্জ্বল ছাপ স্পষ্ট।

বুধবার ‘জুলাই গণ অভ্যুত্থান’ উপলক্ষে আয়োজিত ঘরোয়া দাবা টুর্নামেন্টে এক রাউন্ড বাকি থাকতেই চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন তিতাস ক্লাবের এই ফিদে মাস্টার। ৭ রাউন্ডে সব ম্যাচে জয় তুলে নিয়ে অনন্য কৃতিত্ব দেখান সাকলাইন।

টুর্নামেন্টে তিনি হারিয়েছেন তার চেয়ে রেটিংয়ে এগিয়ে থাকা তিন অভিজ্ঞ খেলোয়াড়—মিনহাজ উদ্দিন আহমেদ, সুব্রত বিশ্বাস ও তাহসিন তাজওয়ারকে। তবে এত কৃতিত্বের পরও রয়েছে এক বড় আক্ষেপ—প্রতিভার যথাযথ মূল্যায়ন হচ্ছে না।

বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত মাত্র পাঁচজন দাবাড়ু গ্র্যান্ডমাস্টার হয়েছেন। সর্বশেষ এনামুল হোসেন রাজীব জিএম হয়েছেন ২০০৮ সালে। এরপর প্রায় ১৭ বছর পার হয়ে গেছে, কিন্তু কেউ এই মর্যাদায় পৌঁছাতে পারেনি। সাকলাইনের লক্ষ্য হলো সেই কাঙ্ক্ষিত ষষ্ঠ গ্র্যান্ডমাস্টার হওয়া।

কিন্তু শুধু স্বপ্ন দেখলেই কি হবে? বাস্তবতা বলছে, পর্যাপ্ত অনুশীলন, কোচিং ও সঠিক গাইডলাইন ছাড়া এ স্তরে পৌঁছানো প্রায় অসম্ভব। সাকলাইন গত কয়েক বছরে একাধিক আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে অংশ নিয়েছেন সম্পূর্ণ কোচ ও ট্রেনিং ছাড়া। ভারতের, শ্রীলঙ্কার, মালদ্বীপের বিভিন্ন টুর্নামেন্টের পাশাপাশি গত জুনে দুবাই ওপেনেও খেলেছেন একা, এবং বি ক্যাটাগরিতে ষষ্ঠ হয়ে ১,০০০ মার্কিন ডলার জিতেছেন।

সাকলাইনের বাবা আবুল কালাম আজাদ বলেন, “সাকলাইনের মধ্যে মেধার কোনো ঘাটতি নেই। ওর দরকার শুধু সঠিক প্রশিক্ষণ। অন্তত ছয় মাসের ভালো ট্রেনিং হলে ফল আরও ভালো হতো। ”

সাকলাইনের কণ্ঠেও একই সুর, “আমি প্রতিদিন একা একা ছয় ঘণ্টা করে অনুশীলন করি। কিন্তু ট্রেনিং ছাড়া এটাই যথেষ্ট নয়। কোচিং পেলে আমি আরও ভালো করতে পারতাম। ”

বর্তমানে সাকলাইনের স্ট্যান্ডার্ড দাবায় ফিদে রেটিং ২২০৪। তার লক্ষ্য আন্তর্জাতিক মাস্টারের নর্ম অর্জন করা এবং ধাপে ধাপে গ্র্যান্ডমাস্টার হওয়া। তবে সে জানে, শুধু চেষ্টাই যথেষ্ট নয়—প্রয়োজন সঠিক সহায়তা ও পৃষ্ঠপোষকতা।

ভারতের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন দাবাড়ু দিব্যা দেশমুখের উদাহরণ টেনে সাকলাইন বলেন, “ওরা অনেক সুযোগ-সুবিধা, স্পনসর এবং ট্রেনিং পায়। আমিও যদি ওদের মতো সুযোগ পেতাম, দ্রুত গ্র্যান্ডমাস্টার হতে পারতাম। ”

আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে অংশ নেওয়ার সময় প্রায়ই স্পনসর সংকটে পড়েন সাকলাইন। তবে সর্বশেষ দুবাই সফরে তাকে পাশে পেয়েছেন তিতাস ক্লাবের কর্মকর্তা কাজী সাইদ হাসান।

রাজারবাগ পুলিশ লাইন স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্র সাকলাইনের একটাই স্বপ্ন—গ্র্যান্ডমাস্টার হওয়া। তার ভাষায়, “ফেডারেশন যদি সমর্থন করে, হয়তো খুব তাড়াতাড়িই আমি জিএম হতে পারব। ”

এআর/আরইউ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।