হবিগঞ্জ: হবিগঞ্জ শহরের পুরান মুন্সেফী এলাকায় ফার্মেসি ব্যবসায়ী মহিবুর চৌধুরী হত্যা মামলায় একজনকে আমৃত্যু কারাদণ্ড এবং ১৪ জনকে যাবজ্জীবন সাজার আদেশ দিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) দুপুরে হবিগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ সৈয়দ মো. কায়সার মোশাররফ এ রায় ঘোষণা করেন।
রায় ঘোষণার সময় সাজাপ্রাপ্তদের মধ্যে ১০ জন আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন, বাকিরা পলাতক।
আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত শফিকুল আলম চৌধুরী পুরান মুন্সেফী এলাকার বাসিন্দা। তার গ্রামের বাড়ি বানিয়াচং উপজেলার মকা গ্রামে।
যাবজ্জীবন সাজার আদেশপ্রাপ্তরা হলেন- শহীদুল আলম চৌধুরী, জাহাঙ্গীর আলম, সেবুল মিয়া, মকসুদ মিয়া, তারা মিয়া, রতীশ দাশ, ছায়েদ মিয়া, নাহিদ মিয়া, সামছুল হুদা, আব্দুল মুকিদ, আলমগীর মিয়া, আব্দুল কাইয়ুম, রুবেল মিয়া ও শামীম মিয়া। তাদের মধ্যে মুকিদ, আলমগীর, কাইয়ুম, রুবেল ও শামীম পলাতক।
আসামিদের মধ্যে শাহাজাহান মিয়া ও আনোয়ার নামে দুইজন মারা গেছেন, জুয়েল মিয়া ও বুলবুল আহমেদ নামে আরও দুইজন খালাস পেয়েছেন।
মামলার বিবরণে জানা যায়- মহিবুর রহমান চৌধুরী ও তার আপন চাচাতো ভাই শফিকুল আলম চৌধুরীর মধ্যে বিরোধ ছিল। বিভিন্ন বিষয়ে তাদের মধ্যে একাধিকবার সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। ২০১৩ সালের ১৭ জুন রাতে স্থানীয় পুরান মুন্সেফী পুকুরপাড়ে মহিবুর রহমানকে ডেকে নিয়ে যায় তার চাচাতো ভাই শফিকুল আলম চৌধুরীসহ অন্য আসামিরা। পরে তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ক্ষতবিক্ষত করা হয়। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে হবিগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেলা সদর হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
ঘটনার পরদিন নিহতের ভাই মুজিবুর রহমান চৌধুরী বাদী হয়ে সদর মডেল থানায় শফিকুল আলম চৌধুরীসহ ২৩ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন। পরবর্তীকালে মামলাটি সিআইডিতে স্থানান্তর করা হয়। সিআইডি ২০১৫ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর ১৯ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করে। মামলায় ২১ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেছেন আদালত।
মামলার রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট গুলজার খান বলেন, মহিবুর রহমান চৌধুরী হত্যাকাণ্ডটি একটি আলোচিত ঘটনা। প্রকাশ্যে কুপিয়ে তাকে হত্যা করা হয়েছে। রায়ে আমরা আংশিক সন্তুষ্ট। রায় পর্যালোচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
তবে নিহতের ছোট ভাই মাহফুজ চৌধুরী বলেন, আমরা এই রায়ে সন্তুষ্ট নই। একজন জলজ্যান্ত মানুষকে এভাবে হত্যা করার পরও এ রায় কাম্য নয়। আমরা উচ্চ আদালতে যাব।
আরএ