রোগীর অ্যাপেন্ডিসাইটিস অপারেশনের সময় অন্ত্রের গুরুত্বপূর্ণ নাড়ি কেটে ফেলার অভিযোগ উঠেছে ক্লিনিক মালিক ও চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে। ভুল চিকিৎসার অভিযোগ তুলে দুই চিকিৎসকসহ চারজনের নামে মামলা করেছেন ভুক্তভোগীর পরিবার।
গত বৃহস্পতিবার চুয়াডাঙ্গা আমলি আদালতে মামলাটি করেন ভুক্তভোগীর বাবা নজরুল ইসলাম। বর্তমানে ওই রোগী রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
মামলায় অভিযুক্ত করা হয়েছে- দেশ ক্লিনিকের পরিচালক হাসিবুল হক শান্ত, ক্লিনিকের ম্যানেজার ইয়াকুব আলী, চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. মশিউর রহমান ও সার্জারি বিশেষজ্ঞ ডা. এহসানুল হক তন্ময়।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, গত ১২ জুন চুয়াডাঙ্গা শহরের হাসপাতাল রোডের দেশ ক্লিনিকে আলমডাঙ্গা উপজেলার রামনগর গ্রামের নজরুল ইসলামের ছেলে মিনারুল ইসলামের অ্যাপেন্ডিসাইটিসের অপারেশন করা হয়। দুই দিন পর ছাড়পত্র দেওয়া হলেও বাড়ি ফেরার পর তার শারীরিক অবস্থার দ্রুত অবনতি ঘটে। পেট ফুলে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে ফের ১৭ জুন তাকে ওই ক্লিনিকে ভর্তি করে দ্বিতীয়বার অপারেশন করা হয়। কিন্তু অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় পরিবার উন্নত চিকিৎসার জন্য অন্যত্র নেওয়ার চেষ্টা করলে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ বাধা দেয়। অবশেষে গত ৪ আগস্ট আত্মীয়-স্বজন জোরপূর্বক মিনারুলকে ঢাকায় ইসলামী ব্যাংক সেন্ট্রাল হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে চিকিৎসকরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে জানান, প্রথম অপারেশনের সময় রোগীর অন্ত্রের নাড়ি (পায়ুপথের নালি) কেটে ফেলা হয়েছে। পরবর্তীতে তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। মিনারুলের দুই সন্তান রয়েছে। একজনের বয়স পাঁচ, অপরজন তিন বছর। এখন বাবার জীবন সংকটের মধ্যে দিশেহারা পরিবারটি।
মামলার এজাহারে আরও উল্লেখ রয়েছে, অপারেশনে যে ভুল হয়েছে তা ধামাচাপা দিতে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ প্রথমে ভুক্তভোগীর পরিবারকে এক লাখ টাকার প্রস্তাব দেয়, পরে তা দ্বিগুণ করে ২ লাখের প্রস্তাব দেয়। কিন্তু মিনারুলের পরিবার তা প্রত্যাখ্যান করে আদালতের শরণাপন্ন হন।
এ অভিযোগ অস্বীকার করে ক্লিনিকের পরিচালক হাসিবুল ইসলাম শান্ত বলেন, ওই রোগীকে সঠিক চিকিৎসাই দেওয়া হয়েছে। ভুল অপারেশন হলে দুই একদিনের মধ্যেই জটিলতা দেখা দিত। প্রাথমিকভাবে চিকিৎসকরা ধারণা করছেন, রোগীর বমির কারণে অ্যাপেন্ডিসাইটিসের নাড়ির বাঁধন খুলে এমন ঘটনা ঘটতে পারে।
আরএ