ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৯ শ্রাবণ ১৪৩২, ১৪ আগস্ট ২০২৫, ১৯ সফর ১৪৪৭

সারাদেশ

পঞ্চগড়ে ভারী বর্ষণে সেতু দেবে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন, দুর্ভোগে হাজারো মানুষ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১:২৮, আগস্ট ১৪, ২০২৫
পঞ্চগড়ে ভারী বর্ষণে সেতু দেবে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন, দুর্ভোগে হাজারো মানুষ দেবে যাওয়া সেতু

পঞ্চগড় সদর উপজেলার কামাত কাজলদীঘি ইউনিয়নের কুচিয়া মোড় ও বন্দরপাড়া এলাকায় ভারী বর্ষণ ও প্রবল পানির চাপে দেবে গেছে মামা-ভাগিনা খালের ওপর নির্মিত স্লুইসগেট সেতুটি। একইসঙ্গে সেতুর উভয় পাশের সংযোগ সড়ক ধসে পড়েছে এবং করতোয়া নদীতে বিলীন হয়েছে বাজারের চারটি দোকানঘর।

এতে দুই ইউনিয়নের পাঁচ গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে দুর্ভোগে পড়েছেন। তাদের ঘুরে যেতে হচ্ছে প্রায় ১০ থেকে ১৫ কিলোমিটার রাস্তা।

বুধবার (১৩ আগস্ট) দুপুরে কুচিয়া মোড় ও বন্দরপাড়া এলাকায় গিয়ে দেখা যায় এ চিত্র। এর আগে মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) গভীর রাতে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর ওই সেতু পরিদর্শন করেছেন পঞ্চগড় এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী।

স্থানীয়রা জানান, কুচিয়া মোড় ও বন্দরপাড়াসহ কালিয়াগঞ্জ ইউনিয়নের অন্তত পাঁচটি গ্রামের মানুষের যাতায়াতের একমাত্র ভরসা ছিল এই স্লুইস গেটটি। দীর্ঘদিন ধরে সংযোগ সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত থাকলেও অস্থায়ীভাবে বালুর বস্তা দিয়ে সংস্কার করে চলছিল চলাচল। সম্প্রতি করতোয়া নদীতে ড্রেজিংয়ের পর মঙ্গলবার রাতে ভারী বর্ষণের ফলে সেতু দেবে যায় এবং সড়ক দুটি ভেঙে পড়ে। এর ফলে বাজারের পাশে থাকা চারটি দোকানঘরও নদীতে বিলীন হয়ে যায়। এবং যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।

স্থানীয় বাসিন্দা সুজব চন্দ্র রায় বাংলানিউজকে বলেন, রাতে ভারী বৃষ্টির কারণে সেতুটি দেবে গেছে এবং দুই পাশে ভেঙে চারটি দোকান নদীতে ভেঙে পড়েছে। এই সেতু দিয়েই আমাদের স্কুল, হাট-বাজার, হাসপাতালে যাতায়াত করতে হয়। এখন বিকল্প কোনো রাস্তা নেই। দ্রুত নতুন সেতু নির্মাণ না হলে আমাদের দুর্ভোগ সীমাহীন হবে।

একই কথা জানান, স্থানীয় বাসিন্দা ও ব্যবসায়ী ওমর ফারুক। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, এর আগে একপাশে সংযোগ সড়ক ভেঙে যায়। আমরা স্থানীয়রা সেটা সমাধানের চেষ্টা করেছিলাম। কর্তৃপক্ষ তেমন কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। আজ এখন পুরো সেতু দেবে গেছে এবং রাস্তা ভেঙে পড়েছে। এটি সংশ্লিষ্টদের গাফিলতির কারণে হয়েছে।

বাসিন্দারা আশঙ্কা করছেন, বর্ষা পুরোপুরি শেষ না হওয়া পর্যন্ত পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে। তাই তারা দ্রুত পুনঃনির্মাণ কার্যক্রম শুরুর দাবি জানিয়েছেন।

এ বিষয়ে পঞ্চগড় এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাহমুদ জামান বাংলানিউজকে বলেন,  আগেও সেতু ঠিক ছিল। পাশে রাস্তা ভেঙে গেলে আমরা সংস্কার করেছিলাম। এবং নতুন কাজের অনুমোদন চেয়েছিলাম মন্ত্রণালয় থেকে। এর মাঝে সেতুটি দেবে গেছে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিদর্শন করেছি। নদীর পানি কমলেই দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইতোমধ্যে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।

২০০৪ সালে এলজিইডির তত্ত্বাবধানে কুচিয়ামোড়-তালমাচ্ছপাড়া উপপ্রকল্পের আওতায় মামা-ভাগিনা খালের ওপর স্লুইস গেটটি নির্মাণ করা হয়। এটি পানি সংরক্ষণের পাশাপাশি স্থানীয় মানুষের চলাচলের প্রধান মাধ্যম ছিল। কয়েক দফায় সেতুর সংযোগ সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হলেও স্থায়ী মেরামত না করায় এবার পুরো সেতুই ভেঙে পড়েছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।

আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।