নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জ জুলাই আন্দোলনে অগ্নিগর্ভ অবস্থায় ছিল। ৫ আগস্ট চূড়ান্ত বিজয়ের আগ পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জে ৫৫টি তাজা প্রাণ ঝড়ে যায়।
আন্দোলনের দিনগুলোতে প্রতিরোধ, সংঘর্ষ, রক্তপাত ও প্রাণ বিসর্জনের মাধ্যমে নারায়ণগঞ্জ শহর ও তার আশেপাশের জনপদ হয়ে ওঠে প্রতিরোধের দুর্গ। শহরের চাষাঢ়া এলাকা ছিল আন্দোলনের প্রাণকেন্দ্র।
অন্যদিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সাইনবোর্ড এলাকা দখলে নিয়ে পুরো দেশের লাইফলাইনকে স্তব্ধ করে দেন আন্দোলনকারীরা।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা জানান, ১৫ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) ছাত্রলীগ-যুবলীগ ছাত্রদের হলে হামলার প্রতিবাদে নারায়ণগঞ্জে আন্দোলনের সূচনা হয়। টেলিগ্রাম ও ডিসকর্ড অ্যাপের গ্রুপে যোগাযোগ করেন তারা। প্রতিদিন জেলার বিভিন্ন প্রান্তে কর্মসূচি ঘোষণা দেওয়া হয় ফেসবুকে। ৪, ৫, ১৮ ও ১৯ জুলাই ছিল সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিন। এ চারদিন হাজারো মানুষ রাজপথে নেমে এসেছিল।
জানা যায়, ১৫ জুলাই চাষাঢ়ায় মশাল মিছিল হয় যেখানে বিভিন্ন দলের শতাধিক ছাত্র নেতারা অংশ নেন। এরপর ১৬ জুলাই থেকেই আন্দোলনের মোড় বদলাতে শুরু করে। ১৭ জুলাই কিছু সময়ের জন্য আন্দোলন করা গেলেও টেকেনি। তবে ১৮ জুলাই নারায়ণগঞ্জ উত্তাল হয়ে ওঠে। এদিক চাষাঢ়া, চিটাগাংরোড, মদনপুর, সাইনবোর্ড, ভুলতা, ফতুল্লাসহ বিভিন্ন স্থানে ছাত্র-জনতার সঙ্গে ছাত্রলীগ ও পুলিশের সংঘর্ষ হয়।
তৎকালীন জেলা ছাত্রদলের সভাপতি নাহিদ হাসান জানান, সেদিন আমরা রেললাইন বন্ধ করি, চাষাঢ়া থেকে নিতাইগঞ্জ পর্যন্ত যান চলাচল বন্ধ করি। পুলিশের গাড়ি এসে আমাদের ছত্রভঙ্গ করতে চেষ্টা করে। আমরা রুখে দাঁড়াই। পুলিশ গাড়ি ফেলে পালিয়ে যায়। এরপর সংঘর্ষে পুলিশের একটি ভ্যানে আগুন দেওয়া হয়, নারায়ণগঞ্জ ক্লাবেও হামলা হয়।
১৮ জুলাই শহরজুড়ে ব্যাপক বিক্ষোভ, অগ্নিসংযোগ হয়। সোনারগাঁয়ের মোগরাপাড়া চৌরাস্তা ও ত্রিবর্দীতে কর্মসূচিতে হামলার খবর ছড়িয়ে পড়লে চাষাঢ়া, শিমরাইল, সাইনবোর্ড, প্রেসক্লাব, নিতাইগঞ্জসহ বিভিন্ন এলাকায় ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। সরকারি ও বেসরকারি স্থাপনায় হামলা এবং ভাঙচুর হয়।
১৯ জুলাই জুমার নামাজের পর শিবু মার্কেট থেকে সাইনবোর্ড পর্যন্ত হাজারো আন্দোলনকারী রাস্তায় নামে। তখন ২৬টি শীতল বাসে আগুন দেওয়া হয়।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা নীরব রায়হান জানান, ওসমান বাহিনী তিনটি বাস ভর্তি সশস্ত্র সন্ত্রাসী নিয়ে হামলা করে। তাদের নেতৃত্বে ছিলেন আজমীর ওসমান ও অয়ন ওসমান। সংঘর্ষে সাইনবোর্ড, ভূঁইগড় ও জালকুড়িতে পুলিশের গুলিতে তিনজন নিহত হয়।
২০ জুলাই কারফিউ জারি হলেও ছাত্ররা রাজপথ ছাড়েনি। ২১ ও ২২ জুলাই চোরাগোপ্তা হামলা করে সরকারি অবস্থানগুলো দুর্বল করা হয়। ২৭ ও ২৯ জুলাই সর্বাত্মক আন্দোলনে চাষাঢ়া মোড়, ২ নম্বর রেলগেট, সদর থানা, ফায়ার সার্ভিস, ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ, যুব উন্নয়ন, হাইওয়ে পুলিশ বক্স ও ধামগড় ফাঁড়িতে একযোগে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ হয়।
নীরব জানান, দিন যত গড়িয়েছে, সরকার তত বেশি দমন-পীড়ন চালিয়েছে। ৩০ জুলাই তেজগাঁও কর্মসূচি শেষে ১ আগস্ট আমরা নারায়ণগঞ্জ থেকে ঢাকামুখী হই। শাহবাগ, শ্যামলী, মানসিক হাসপাতালের সামনে কর্মসূচিতে সেনাবাহিনী ও র্যাবের যৌথ অভিযান হয়।
৩ আগস্ট সস্তাপুর ও খানপুরে সেনা ও বিজিবি যৌথভাবে রাবার বুলেট ও টিয়ার গ্যাস ছোড়ে। ৪ আগস্ট নারায়ণগঞ্জ সরকারি তোলারাম কলেজের চার ছাত্র নাঈম, পান্থ, আব্দুর রহমান গাজী ও মানিক শাহ আরিফ পুলিশের গুলিতে শহীদ হন।
৫ আগস্ট ভোরে আন্দোলনকারীরা বিচ্ছিন্নভাবে ঢাকা রওয়ানা হন। পথে পথে বাধা, অভিযানে টিয়ার সেল, শাহবাগ ও গুলিস্তানে বিশৃঙ্খলার মধ্যেও কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জড়ো হন হাজারো মানুষ। মাত্র ২০–২৫ মিনিটে শাহবাগ জনসমুদ্রে পরিণত হয়। তখনই সেনাপ্রধান ভাষণ দেন। সেই ভাষণের পর রক্তস্নাত সূর্যদয়ে নতুন অধ্যায়ের সূচনা ঘটে।
এ আন্দোলনে শুধু নারায়ণগঞ্জেই শহীদ হয়েছেন ৫৫ জন। জেলা সিভিল সার্জন মশিউর রহমান ১৫ সেপ্টেম্বর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে যে তালিকা পাঠান, সেখানে নারায়ণগঞ্জের মোট শহীদ ৫৫ জন এবং আহত ৬০০ জনের বেশি উল্লেখ করা হয়।
তবে সরকার পরবর্তীতে জেলাভিত্তিক শহীদদের তালিকা আলাদা করার নীতিতে গেলে নারায়ণগঞ্জে শুধুমাত্র ২২ জনের নাম সরকারি শহীদ তালিকায় স্থান পায়। বিষয়টি যাচাই-বাছাই করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার সহযোগিতায় চূড়ান্ত করা হয়।
এবিষয়ে দেওয়া এক বক্তব্যে সিভিল সার্জন মশিউর রহমান জানান, গণঅভ্যুত্থানে দেখা গেছে নারায়ণগঞ্জের মানুষ সিলেট গিয়ে নিহত হয়েছে আবার সিলেটের মানুষ নারায়ণগঞ্জ এসে নিহত হয়েছে। সে হিসেবে নারায়ণগঞ্জের কতজন নিহত বা নারায়ণগঞ্জে এসে কতো জন নিহত হয়েছে সেটা এ তালিকায় এখনো নিরূপণ করা হয়নি। তবে আমরা নারায়ণগঞ্জ থেকে ৫৫ জন নিহত ও ছয় শতাধিক আহতের তথ্য পাঠিয়েছিলাম। মন্ত্রণালয় এ তালিকায় কীভাবে সেই তথ্য ভেরিফাই করে ২২ জন শহীদের চূড়ান্ত তালিকা দিয়েছে সেটা তারা ভালো বলতে পারবে।
নারায়ণগঞ্জ জেলা সিভিল সার্জন থেকে প্রাপ্ত ২২ জন শহীদদের তালিকায় যারা রয়েছেন, মো. আবুল হাসান স্বজন, বয়স: ২৫ বছর, বাবা মো. জাকির হোসেন, মা আফিয়া বেগম। ঠিকানা, ৩১৩ কুশিয়ারা পূর্বপাড়া, নারায়ণগঞ্জ। তিনি ৫ আগস্ট চাষাঢ়ায় গুলিবিদ্ধ হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে শহীদ হন ৬ আগস্ট। মো. জনি, বয়স ১৭, বাবা মো. ইয়াসিন ও মা পারভীন। গ্রাম বালুয়াদিঘীরপাড়, সোনারগাঁ, নারায়ণগঞ্জ। তিনি গুলিবিদ্ধ হয়ে শহীদ হন কাঁচপুরে। ইমরান হাসান, বয়স ১৯, বাবা মো. ছালে আহাম্মেদ, মা কোহিনুর আক্তার। গ্রাম গঙ্গানগর, চর রমজান সোনাউল্লাহ, ডাকঘর, নিউটাউন-১৪০০, সোনারগাঁ, নারায়ণগঞ্জ। তিনি কাঁচপুরে গুলিবিদ্ধ হয়ে শহীদ হন। ইব্রাহিম, বয়স ১৩, বাবা মো. হানিফ, মা আয়শা বিবি। গ্রাম, নয়াগাও, বরাব বাজার, সোনারগাঁ, নারায়ণগঞ্জ। কাঁচপুর ব্রিজের নিচে গুলিবিদ্ধ হয়ে শহীদ হয়। মো. আদিল, বয়স ১৫, বাবা মো. আবুল কালাম, মা আয়েশা আক্তার। ভূইগড়, কুতুবপুর, ফতুল্লা নারায়ণগঞ্জে থাকতেন। ২০২৪ সালের ১৯ জুলাই বুকের ডান পাশে গুলিবিদ্ধ হয়ে এস বি গার্মেন্টসের সামনে শহীদ হন তিনি। মো. ইরফান ভূইয়া, বয়স ২৩, বাবা আমিনুল ইসলাম ভূইয়া ও মা মোসলেমা। মাদানি নগর, সানারপাড়, সিদ্ধিরগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জে থাকতেন। কাজলা, যাত্রাবাড়ীতে বুকে গুলিবিদ্ধ হয়ে ১৮ জুলাই ঢামেক হাসপাতালে শহীদ হন। মো. তুহিন, বয়স ৩৬, বাবা মো. শহিদুল ইসলাম, মা ময়না। উত্তর রসুলবাগ, ৩নং ওয়ার্ড, সিদ্ধিরগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ থাকতেন তিনি। তিনি চিটাগাং রোড মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে ২০ জুলাই শহীদ হন। পারভেজ হাওলাদার, বয়স ২৫, বাবা মো. মজিবর হাওলাদার, মা হাসি বেগম। ইসহাক সরদারের বাড়ি, নিমাইকাশারী, সিদ্ধিরগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ থাকতেন। ৫ আগস্ট যাত্রাবাড়ী গুলিবিদ্ধ হয়ে শহীদ হন। মো. মাবরুর হোসাইন, বয়স ২৫, বাবা মো. আব্দুল হাই, মা শাহনাজ বেগম। ভূইগড়, কুতুবপুর, ফতুল্লা নারায়ণগঞ্জ থাকতেন। তিনি ৫ আগস্ট যাত্রাবাড়ীতে গুলিবিদ্ধ হয়ে শহীদ হন। রিয়া গোপ, ৬ বছর। বাবা দীপক কুমার গোপ, মা বিউটি ঘোষ। ৩২ নং নয়ামাটি নারায়ণগঞ্জ সদর, নারায়ণগঞ্জ। ৪র্থ তলা ভবনের ছাদে খেলা করছিল রিয়া। মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়। পরে ঢামেক হাসপাতালে ২০২৪ সালের ১৯ জুলাই মারা যায় সে। আহসান কবির ওরফে মো. শরীফ, বয়স ৩৪। বাবা মো. হুমায়ুন কবির, মা মোসা. খালেদা কবির। দক্ষিণ সানারপাড়, সিদ্ধিরগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ। তিনি বুকের বাম পাশে গুলিবিদ্ধ হয়ে ২১ জুলাই পিডিকে সিএনজি পাম্প সংলগ্ন বিশ্বরোডে শহীদ হন। ছলেমান, বয়স ২১, বাবা মিরাজ ব্যাপারী, মা রোকসানা। আল নূর টাওয়ার, মাদানীনগর, সিদ্ধিরগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ থাকতেন। পেটে গুলিবিদ্ধ হয়ে যাত্রাবাড়ী থানার সামনে ঘটনাস্থলেই শহীদ হন ছলেমান। হযরত বিল্লাল, বয়স ২০। বাবা মো. হোসেন, মা তাছলিমা বেগম। ছিয়াখোলা মুড়ি ফ্যাক্টরি, চিটাগাং রোড, সিদ্ধিরগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ থাকতেন। ৫ আগস্ট যাত্রাবাড়ীতে মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে শহীদ হন। মো. সজল মিয়া, বয়স ২০, বাবা মো. হাসান, মা রুনা বেগম। সালমদী ইউনিয়ন, মাহমুদপুর উপজেলা, আড়াইহাজার নারায়ণগঞ্জ থাকতেন। ২০ জুলাই সুগন্ধি হাসপাতাল হিরাঝিলে তিনি শহীদ হন। আরমান মোল্লা, বয়স ৩৬, বাবা ইছব মোল্লা, মা জোবেদা বেগম। কলাগাছিয়া নয়াপাড়া গোপালদী, আড়াইহাজার, নারায়ণগঞ্জ থাকতেন। তিনি বাবুরহাট, নরসিংদী এলাকায় ২১ জুলাই শহীদ হন। সফিকুল, বয়স ২০, বাবা আব্দুল আজিজ, মা সূর্যবান। বালুয়াকান্দী, বিশনন্দী ইউনিয়ন আড়াইহাজার নারায়ণগঞ্জ থাকতেন। ৫ আগস্ট আওয়ামী সন্ত্রাসীদের হামলায় নিজ এলাকায় শহীদ হন। মো. মোহসীন, বয়স ৬৩, বাবা ছলিম, মা আছিয়া বেগম। বাহাদুরপুর, সাতগ্রাম, আড়াইহাজার, নারায়ণগঞ্জ থাকতেন। মাধবদী পৌরসভা সংলগ্ন ডানপায়ের উরুতে গুলিবিদ্ধ হয়ে শহীদ হন। মোহাম্মদ মাহামুদুর রহমান খান সোহেল, বয়স ৪৫, বাবা মৃত মো. লুতফর রহমান, মা মৃত সুরিয়া আক্তার খানম। বাড়ি নাম্বার-৫৯ (৫ম তলা), রোড নাম্বার-১, সেক্টর নাম্বার-৬, উত্তরা, ঢাকা-১২৩০। তার স্থায়ী ঠিকানা ত্রিশকাহনিয়া, কাঞ্চন পৌরসভা, উপজেলা রূপগঞ্জ, জেলা নারায়ণগঞ্জ। তিনি মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মস্তিষ্কের আঘাত জনিত জখম হয়ে আজমপুর (মেইন রোড) উত্তরা, ঢাকাস্থ ইউনাইটেড হাসপাতাল, গুলশান, ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। মোহাম্মদ ফারহানুল ইসলাম ভূইয়া (ফারহান ফাইয়াজ), বাবা শহিদুল ইসলাম ভূইয়া, মা ফারহানা দিবা। বরপা, তারাব পৌরসভা, রূপগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ থাকতেন। বুকে গুলিবিদ্ধ হয়ে ৩০ সার্কিট হাউজ রোড, ঢাকার ধানমন্ডি, রোড নম্বর-২৭, ঢাকা-১২০৯ লালমাটিয়া সিটি হাসপাতাল, মোহাম্মদপুর, ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় শহীদ হন ফাইয়াজ। মোহাম্মদ সাইফুল হাসান (দুলাল), বাবা মোহাম্মদ জবেদ আলী মোল্লা। চনপাড়া পুনর্বাসন কেন্দ্র, ২য় অংশ, পূর্বগ্রাম বাজার, কায়েতপাড়া ইউনিয়ন, রূপগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ থাকতেন। কুড়িল, বিশ্বরোড, ঢাকা, পুলিশের গুলিতে আহত হয়ে কুর্মিটোলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শহীদ হন তিনি। মো. রোমান, বাবা মো. আনোয়ার হোসেন, মা রোজিনা। চনপাড়া পুনর্বাসন কেন্দ্র, ৮ম অংশ, পূর্বগ্রাম বাজার, কায়েতপাড়া ইউনিয়ন, রূপগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ থাকতেন। চনপাড়া পুনর্বাসন কেন্দ্র, কায়েতপাড়া ইউনিয়ন, রূপগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গলায়, বুকে ও মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়, পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তাওহিদুল আলম জিসান, বাবা মো. আলমগীর মোল্লা, মা তাহমিনা আলম নুপুর। মিঠাব, মাছুমাবাদ, ভুলতা ইউনিয়ন, রূপগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ থাকতেন। মিঠাব, ২ নং ওয়ার্ড, ভুলতা ইউনিয়নের শিকদার বাড়ির পশ্চিম পাশের রাস্তায় সাবেক সরকারের দলীয় ক্যাডার কর্তৃক বুকের বাম পাশে চাকুর আঘাতে ফুসফুস ছিদ্র হয়ে যায়। পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এছাড়াও আরও যারা নারায়ণগঞ্জ থেকে আন্দোলন করে শহীদ হয়েছিলেন। তারা হলেন মো. জামাল, বয়স ২৮, বাবা মো. হারুল, মা মেহেরজান বিবি। জালকুড়ি, সিদ্ধিরগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ থাকতেন, তার বাড়ি রাঙ্গাবালী, পটুয়াখালী (তার নাম পটুয়াখালী জেলা প্রশাসনের চূড়ান্ত তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় জেলা প্রশাসন, নারায়ণগঞ্জের তালিকা হতে বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়)। বাবুল মিয়া, দুপ্তারা, আড়াইহাজার। নুরে আলম, বাবা মো. কিতাব আলী খান। নাভানা সিটি সিদ্ধিরগঞ্জ। আব্দুস সালাম, বাবা সাবের বিশ্বাস। কুমারখালী, কুষ্টিয়া। আলাউদ্দিন, বাবা সিদ্দিকুর রহমান সরদার। উত্তর মতলব, চাঁদপুর। আব্দুর রহমান, বাবা হাসান দেওয়ান, বালিয়া, চাঁদপুর। আব্দুল লতিফ, বাবা নিজাম উদ্দিন, কাউনিয়া রংপুর। আরাফাত হোসেন আকাশ, বাবা আকরাম হোসেন, সিদ্ধিরগঞ্জ। আব্দুল্লাহ আল মামুন, বাবা আব্দুল ওয়াহেদ আলী, তারাবো পৌরসভা, রূপগঞ্জ। মো. আল মামুন আমানত, বাবা মো. আব্দুল লতিফ, সিদ্ধিরগঞ্জ। পারভেজ হোসেন, বাবা সোহরাব হোসেন, মাহমুদপুর, সিদ্ধিরগঞ্জ। ফয়েজ আহমেদ, বাবা আলাউদ্দিন বেপারী, রায়পুর লক্ষ্মীপুর। মো. মেহেদী, হিরাঝিল, সিদ্ধিরগঞ্জ। মাহদী, বাবা সানাউল্লাহ, পিরোজপুর, সোনারগাঁ। মিনারুল ইসলাম, বাবা মৃত এনামুল, গুডীপাড়ি, রাজশাহী। আহমেদ ইমরান, বাবা সোহরাব মিয়া, লাখাই, হবিগঞ্জ। মো. মনির হোসেন, বাবা মমতাজুর রহমান, মনোহরগঞ্জ, কুমিল্লা। মো. রফিকুল ইসলাম, বাবা মৃত মোমেন মিয়া, হিরাঝিল, সিদ্ধিরগঞ্জ। মিলন মিয়া, বাবা আলী হোসেন হাওলাদার, ধুমকি, পটুয়াখালী। মো. রুবেল মিয়া, বাবা মো. নান্নু মিয়া, বেগমগঞ্জ, নোয়াখালী। রাকিব, সিআইখোলা, সিদ্ধিরগঞ্জ। রাব্বি, সিদ্ধিরগঞ্জ। রাসেল, বাবা পিন্টু রহমান, মান্দা, নওগাঁ। মো. রাসেল বকাউল, বাবা মো. নুরুল বকাউল, সানারপাড়, সিদ্ধিরগঞ্জ। সেলিম মণ্ডল, বাবা ওহাব মণ্ডল, কুমারখালী, কুষ্টিয়া। মো. সজিব মিয়া, বাবা মো. সানাউল্লাহ, কাবিলপুর, নোয়াখালী। শাহ জামান, বাবা হারুন ভুইয়া, রাঙ্গাবালী, পটুয়াখালী। সুমাইয়া আক্তার সিমু, বাবা মৃত সেলিম মাতবর, মেহেন্দিগঞ্জ, বরিশাল। সোহেল আহাম্মেদ, বাবা তোফলেসুর রহমান, বিয়ানী বাজার, সিলেট। সৈয়দ গোলাম মোস্তফা রাজু, বাবা সৈয়দ আব্দুল করিম, রামগঞ্জ, লক্ষ্মীপুর। মো. শাহীন মিয়া, বাবা হাসান আলী, হিরাঝিল, সিদ্ধিরগঞ্জ। মো. হৃদয়, বাবা ছাবেদ আলী, হিরাঝিল, সিদ্ধিরগঞ্জ। মো. হোসেন মিয়া, বাবা মানিক মিয়া, দেবিদ্বার থানা, কুমিল্লা।
এমআরপি/আরআইএস