বরগুনার আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ে অন্তঃসত্ত্বা নারীদের মধ্যে মেয়াদোত্তীর্ণ ক্যালসিয়াম ও আয়রন ট্যাবলেট বিতরণের অভিযোগ উঠেছে। ওই ওষুধ সেবনের পর একাধিক অন্তঃসত্ত্বা নারী অসুস্থ হয়ে পড়েছেন বলে দাবি করা হয়েছে।
ভুক্তভোগী এক নারী ও তার স্বামী ঘটনাটি তদন্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।
ভুক্তভোগী ছয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা নারী বৃষ্টি আক্তারের স্বামী রনি খাঁন অভিযোগ করে জানান, গত ১৬ জুলাই তার স্ত্রী চিকিৎসার জন্য আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গেলে সেবিকা ইসরাত জাহান সেতু তার স্ত্রীসহ অন্তত অর্ধশত অন্তঃসত্ত্বা নারীকে মেয়াদোত্তীর্ণ ক্যালসিয়াম ও আয়রন ট্যাবলেট বিতরণ করেন। পরে এসব ওষুধ খেয়ে তার স্ত্রী অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে হয়।
রনি খাঁন বলেন, ওষুধ খাওয়ার পর আমার স্ত্রী বমি, মাথা ঘোরা ও পেটে ব্যথা অনুভব করেন। পরে ওষুধের পাতাটা খেয়াল করলে দেখি মে মাসেই ওষুধের মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে গেছে।
বৃষ্টি আক্তার বলেন, ১৬ জুলাই চিকিৎসা নিতে গেলে স্বাস্থ্য সেবিকা ওষুধ দেন। খাওয়ার পর থেকেই শরীর খারাপ লাগতে থাকে। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের বিচার চাই।
এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন কিনা জানতে চাইলে বৃষ্টি জানান, আমার স্বামী পেশাগত কারণে সাগরে মাছ ধরতে গেছেন। তাই এখনো লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়নি। তবে আমি অভিযোগ দেব।
এ বিষয়ে স্বাস্থ্য সেবিকা ইসরাত জাহান সেতু বলেন, এখানে আমার কোনো দায় নেই। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ যেই ওষুধ দিয়েছেন, সেটাই আমি বিতরণ করেছি।
তবে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. চিন্ময় হাওলাদার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমার কাছে কেউ কোনো অভিযোগ করেনি। কেউ মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ পায়নি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বিতরণকৃত ক্যালসিয়াম ও আয়রন ট্যাবলেটের মেয়াদ শেষ হয়েছিল গত মে মাসেই। এ বিষয়ে বুধবার (২৩ জুলাই) একাধিক অন্তঃসত্ত্বা নারী ও তাদের স্বজনরা মৌখিকভাবে অভিযোগ জানালেও স্বাস্থ্য বিভাগ তা অস্বীকার করেছে।
এ ঘটনায় এলাকায় ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। জনসাধারণ ও স্বাস্থ্যসেবার অধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠনগুলো সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছে।
আরএ