গোপালগঞ্জ: গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) জুলাই পদযাত্রা ঘিরে হামলা-সংঘর্ষের ঘটনায় রামদিয়া পুলিশ ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক নাসির উদ্দীন বাদী হয়ে কাশিয়ানী থানায় মামলায় ৩৩৭ জন আসামি করেন।
কাশিয়ানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামাল হোসেন মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ও নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগসহ আওয়ামী লীগের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের আসামি করা হয়।
কাশিয়ানী উপজেলা কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামীগের সাধারণ সম্পাদক কাজী জাহাঙ্গীর আলম ও কাশিয়ানী ইউনিয়ের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলীসহ (খোকন) ৮৭ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ২০০ থেকে ২৫০ নেতা কর্মীকে আসামি করে সন্ত্রাস বিরোধী আইন ২০০৯ এ গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে এ মামলা করেন। ( মামলা নং -১৭)
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ১৬ জুলাই জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) জুলাই পদযাত্রাকে কেন্দ্র করে কাশিয়ানী উপজেলার ফুকরা বাসস্ট্যান্ড ও আশপাশ এলাকার রাস্তাঘাট, ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক অবরুদ্ধ করে টায়ার জ্বালিয়ে জনগণের মনে ভীতি এবং আতংক সৃষ্টি করে যানবাহন চলাচল ব্যাহত করে।
কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ও নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগসহ আওয়ামী লীগের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের পক্ষে মিছিল করতে থাকে। আসামিরা অসৎ উদ্দেশ্যে এবং এনসিপির পথসভা নসাৎ করার লক্ষ্যে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে টায়ার জ্বালিয়ে রাস্তা অবরুদ্ধ করে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টিসহ সরকারি সম্পত্তি ওই মহাসড়কের ক্ষতি সাধন করার উদ্দেশ্যে জনসাধারণের স্বাভাবিক কার্যক্রমে বাধা সৃষ্টি করে।
এ নিয়ে গোপালগঞ্জে পুলিশের ওপর হামলা, গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ এবং রাষ্ট্রবিরোধী কার্যকলাপে জড়ানোর অভিযোগে ও হত্যা ঘটনায় মোট ১১টি মামলা করা হলো। সদর, কাশিয়ানী, টুঙ্গিপাড়া ও কোটালীপাড়া থানায় মামলাগুলো করা হয়। ১১টি মামলায় কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ৬৮৭ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা ৯ হাজার ৫০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
গত ১৬ জুলাই থেকে শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ৩৩৫ জনকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এর মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় ১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গত বুধবার (১৬ জুলাই) এনসিপির কর্মসূচিতে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী ও সমর্থকেরা হামলা চালান। পরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন অর্ধশতাধিক। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেদিন প্রথমে ১৪৪ ধারা জারি করেন জেলা প্রশাসক ও ম্যাজিস্ট্রেট মুহম্মদ কামরুজ্জামান। রাতেই জারি করা হয় কারফিউ। পরে কারফিউর মেয়াদ কয়েক দফা বাড়ানো হলেও রোববার (২০ জুলাই) আটটা কারফিউ শিথিল করা হয়।
জেএইচ