ঝালকাঠি জেলা আইনজীবী সমিতি থেকে একযোগে ১৬ জন সদস্যের সদস্যপদ বাতিল করা হয়েছে। সমিতির কার্যনির্বাহী পরিষদের ২২ এপ্রিল ২০২৫ তারিখের সভায় আলোচনা অনুযায়ী এই বহিষ্কারাদেশ কার্যকর করা হয়।
বহিষ্কৃত সদস্যরা হলেন-মো. মনজুর হোসেন, মো. আবদুল মান্নান রসুল, তপন কুমার রায় চৌধুরী, এম আলম খান কামাল, খান সাইফুল্লাহ পনির, মো. মাহাবুবুর রহমান তালুকদার, জি কে মোস্তাফিজুর রহমান, আ. স. ম. মোস্তাফিজুর রহমান (মনু), সঞ্জয় কুমার মিত্র, মো. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার, মো. মোর্শেদ কামাল তালুকদার, কার্তিক চন্দ্র দত্ত, সৈয়দ মো. জাহাঙ্গীর শামীম, তানজিলা হক, মো. আবুল বাশার এবং এস এম রুহুল আমিন রিজভী।
সাধারণ সম্পাদক মো. নাসিমুল হাসান এবং সভাপতি মো. শাহাদাৎ হোসেন স্বাক্ষরিত নোটিশে সদস্যপদ বাতিলের সিদ্ধান্ত জানানো হয় একই সঙ্গে পৃথক চিঠির মাধ্যমে বহিষ্কৃতদের প্রত্যেককে সিদ্ধান্তের বিষয়টি অবহিত করা হয়।
জেলা আইনজীবী সমিতির কার্যনির্বাহী সদস্য অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান খান বলেন, বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় সঠিক নিয়ম অনুসরণ করা হয়নি। কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় এমন কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি যে, একযোগে ১৬ জন সদস্যকে বহিষ্কার করা হবে। আলোচনায় ছিল-তাদের বিষয়ে পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। সেই অনুযায়ী সাধারণ সভায় বিষয়টি তোলা ও এক তৃতীয়াংশ সদস্যদের মতামতের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সেটি না করে আচমকাই বহিষ্কারের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে, যা নিয়মবহির্ভূত। সমিতির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কোনো সদস্যকে বহিষ্কারের আগে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়ার বিধান রয়েছে। কিন্তু এদের কাউকেই সেই সুযোগ দেওয়া হয়নি। এমনকি বহিষ্কার কতদিনের জন্য-তা নিয়েও কোনো পরিষ্কার উল্লেখ নেই বিজ্ঞপ্তিতে।
জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. নাসিমুল হাসান বলেন, ৫ আগস্ট ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানের পরপরই আমরা ৫ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করি। তদন্তে উঠে আসে বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের ফ্যাসিবাদী শাসনামলে সমিতির বহু সদস্যকে নিপীড়ন ও মারধরের শিকার হতে হয়েছে। তখনকার বার নির্বাচনেও অনেক প্রকৃত আইনজীবীকে অংশগ্রহণ করতে দেওয়া হয়নি। ওই সময়ে যারা সরাসরি বা সহযোগী হিসেবে ওই দমনমূলক কর্মকাণ্ডে ভূমিকা রেখেছেন, তাদের একটি তালিকা তৈরি করা হয়। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে এবং সমিতির গঠনতন্ত্র অনুসরণ করে বহিষ্কৃতদের সদস্যপদ বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
তাছাড়া তালিকাভুক্ত অনেকেই নিয়মিতভাবে বার সমিতির মাসিক চাঁদা প্রদান করেন না এবং তারা দীর্ঘদিন ধরে আদালতে আইন পেশায় সক্রিয় নন।
আরএ