মেহেরপুর: মেহেরপুরে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ১০ জন আহত হয়েছেন। এ সময় মাইক্রোবাসসহ বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়েছে।
খবর পেয়ে মেহেরপুর সেনা ক্যাম্প থেকে একটি টিম ও পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
আহতদের মধ্যে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সচিব কামরুল হাসান গ্রুপের ৬ জন ও সাবেক উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম গ্রুপের ৩ জন রয়েছেন।
আহতদের উদ্ধার করে মেহেরপুর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হলে দুইজনকে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।
কামরুল হাসান গ্রুপের আহতরা হলেন- জেলা যুবদলের সাবেক সভাপতি কাজি মিজান মেনন, বিএনপি নেতা চঞ্চল, মুকুল, শাকিল, শহিদুল, মিন্টু ও সানোয়ার হোসেন।
শুক্রবার (২২ মে) বেলা ১১টা থেকে দেড়টা পর্যন্ত সদর উপজেলার আমঝুপি বাজারে দফায় দফায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। তবে এ সংঘর্ষের ঘটনায় বিএনপির এক গ্রুপ আরেক গ্রুপের ওপর দোষারোপ করছেন।
মেহেরপুর জেলা বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট কামরুল হাসান জানান, শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে আমঝুপি গ্রামের গন্ধরাজপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে আমঝুপি ইউনিয়ন বিএনপির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। সাড়ে ১১টার দিকে আমিসহ বিএনপির নেতাকর্মীরা সম্মেলনে অংশ নিতে মেহেরপুর শহর থেকে রওনা হই। আমঝুপি বাজারের সড়ক দিয়ে গন্ধরাজপুরে যেতে চাইলে সদর উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলামের নেতাকর্মীরা গাড়িবহরে বাধা দেয়।
পরে এ নিয়ে দু'পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। খবর পেয়ে মেহেরপুর সেনা ক্যাম্প থেকে একটি টিম ও পুলিশ আসে ঘটনাস্থলে। একপর্যায়ে তাদের ভিন্ন পথে দিয়ে যাওয়ার কথা বলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। পরে ওই গাড়িবহরটি আমঝুপি সামিউল টাওয়ারের সামনের গলি দিয়ে গন্ধরাজপুরে যাওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় সাইফুল ইসলাম পক্ষের নেতাকর্মী তাদের ওপর হামলা চালায়। এ সময় তারা হামলা চালিয়ে সদস্য সচিবের মাইক্রোবাসহ কয়েকটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে। পরে সেনাবাহিনীর সদস্যসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর একটি দল তাদের ধাওয়া দিলে পালিয়ে যায় হামলাকারীরা। পরে ওই গাড়িবহর গন্ধরাজপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে পৌঁছায়। আহত ৬ জনকে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নেওয়া হয়।
আহতদের মধ্যে বিএনপি নেতা মুকুল ও তৌহিদুলের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাদের মেহেরপুর হাসপাতাল থেকে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
এদিকে হামলাকারীদের নিবৃত্ত করার সময় সাইফুল ইসলাম পক্ষের ৩ নেতাকর্মীকে আটক করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী৷ এ সময় তাদের ছাড়িয়ে নিতে সাইফুল ইসলাম পক্ষের নেতাকর্মীরা মেহেরপুর-চুয়াডাঙ্গা সড়ক আমঝুপি বাজারে অবরোধ করে। এতে বন্ধ হয়ে যায় সব প্রকার যানবাহন চলাচল। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ওই তিন নেতাকর্মীকে ছেড়ে দেয় পুলিশ। পরে তারা রাস্তা অবরোধ তুলে নেন।
সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট কামরুল হাসান অভিযোগ করেন, কোনো কারণ ছাড়াই সাইফুল ইসলামের নেতাকর্মীরা আমাদের ওপর হামলা চালায়। তারা সম্মেলন বানচাল করার চেষ্টা করে৷ বিএনপির কেন্দ্র ঘোষিত মেহেরপুরের আহ্বায়ক কমিটি মেনে নিতে চাননি। তাই সন্ত্রাসী কায়দায় আমাদের ওপর হামলা চালিয়েছে ।
পাল্টা অভিযোগ করে সদর উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি সাইফুল ইসলাম বলেন, বেআইনিভাবে তারা আমঝুপি ইউনিয়নের সম্মেলন করছে। আমরা বাধা দিয়েছি। তবে সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট কামরুল হাসানের নেতাকর্মীরা তাদের ওপর হামলা চালিয়েছে বলে পাল্টা অভিযোগ করেন তিনি।
মেহেরপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেজবাহ উদ্দীন বলেন, বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। সংঘর্ষের বিষয়ে এখনো কোনো পক্ষ লিখিত অভিযোগ দেয়নি। এখন পর্যন্ত কাউকে আটক করা হয়নি।
জেএইচ