বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান বলেছেন, নব্য ফ্যাসিবাদীদের প্রতিহত করতে জাতি অতীতের মতোই প্রস্তুত। দেশ কারও বাপের নয়, কোনো পরিবারেরও নয়।
প্রশাসনে দলীয়করণের প্রতিবাদে ও সর্বস্তরে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করার দাবিতে সোমবার (২০ অক্টোবর) বিকেলে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের উদ্যোগে আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিল পরবর্তী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সমাবেশটি অনুষ্ঠিত হয় বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেইটে।
তিনি বলেন, যে কোনো দল যদি নিজেদের দেশের মালিক মনে করে থাকে, তবে তাদের উচিত হবে ডাকসু, জাকসু, চাকসু, রাকসু থেকে শিক্ষা নেওয়া। এখন ছাত্ররা ভোটের মাধ্যমে বয়কট শুরু করেছে। জনগণও সুযোগ পেলে নব্য ফ্যাসিবাদীদের ভোটের মাধ্যমেই বয়কট করে ইসলামের পক্ষে এক নীরব বিপ্লব ঘটাবে।
প্রশাসন ও উপদেষ্টাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, যদি দলবাজি করতে চান, তবে রাজপথে নামুন। অতীতে দলকানা প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের পরিণতি থেকে শিক্ষা নিন। তিনি প্রশাসনের সকল পর্যায়ের দায়িত্বশীলদের নিরপেক্ষ ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান।
জাতির কাছে দেওয়া প্রতিশ্রুতি পূরণে সরকার ব্যর্থ হচ্ছে উল্লেখ করে মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা জাতির সামনে ওয়াদা করেছিলেন, এই সরকারের কাজ হবে সকল গণহত্যার বিচার, রাষ্ট্রের সংস্কার, এবং একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজন করা। কিন্তু সরকার তার কোনো প্রতিশ্রুতিই বাস্তবায়ন করতে পারেনি।
তিনি আরও বলেন, একটি দলের প্রতি আনুগত্যশীল হয়ে সরকার কেবল নির্বাচনের কথাই বলছে। অথচ গণমানুষের ৫ দফা দাবি উপেক্ষা করা হচ্ছে। ‘জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি নিশ্চিত করা’, ‘পিআর পদ্ধতিতে সংসদের উভয় কক্ষের নির্বাচন’, ‘অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য সর্বস্তরে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড প্রতিষ্ঠা’, ‘ফ্যাসিস্ট সরকারের জুলুম-নির্যাতন, গণহত্যা ও দুর্নীতির বিচার দৃশ্যমান করা’, এবং ‘স্বৈরাচারের দোসর জাতীয় পার্টিসহ ১৪ দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করে বিচারের মুখোমুখি করা’ গণমানুষের দাবি। কিন্তু সরকার গণমানুষের এই ৫ দফা দাবির প্রতি অমনোযোগী। অনতিবিলম্বে ৫ দফা দাবি মেনে নিতে হবে।
তিনি বলেন, জাতীয় নির্বাচনের দিনে গণভোটের সুযোগ নেই। ক্ষমতায় যাওয়ার প্রতিযোগিতায় কোনো দল সংঘর্ষে জড়ালে কিংবা ভোট কারচুপি হলে গণভোটও বিতর্কিত হবে। তাই নভেম্বরের মধ্যেই গণভোট সম্পন্ন করে ফেব্রুয়ারিতে জুলাই সনদের ভিত্তিতে জাতীয় নির্বাচন করতে হবে।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমীর অ্যাডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিনের সভাপতিত্বে এবং কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি মোহাম্মদ কামাল হোসেন এবং ড. আব্দুল মান্নান।
এসময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি কবির আহমদ, জামায়াতে ইসলামীর ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যাপক মোকাররম হোসাইন খান, অ্যাডভোকেট এস. এম. কামাল উদ্দিন, আবদুস সালাম, সৈয়দ জয়নুল আবেদীন, ড. মোবারক হোসেন, শাহীন আহমেদ খান ও মাওলানা শরীফুল ইসলাম।
এছাড়াও মহানগরী দক্ষিণের বিভিন্ন থানা আমির-সেক্রেটারি এবং দায়িত্বশীল নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
টিএ/এমজে