ঢাকা, মঙ্গলবার, ৫ কার্তিক ১৪৩২, ২১ অক্টোবর ২০২৫, ২৮ রবিউস সানি ১৪৪৭

রাজনীতি

আল কোরআনের আলো সংসদেও জ্বালাতে হবে: মুজিবুর রহমান

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২:৪৪, অক্টোবর ২০, ২০২৫
আল কোরআনের আলো সংসদেও জ্বালাতে হবে: মুজিবুর রহমান ছবি: জিএম মুজিবুর

১৯৭১ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন দল ক্ষমতায় থাকলেও কেউই জাতীয় সংসদে কোরআনের আইন প্রতিষ্ঠা করেনি। বরং তারা কোরআনের পরিপন্থী বহু আইন পাস করেছে বলে অভিযোগ করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর অধ্যাপক মুজিবুর রহমান।

তিনি বলেন, মহান আল্লাহ মানুষকে তার আইন প্রতিষ্ঠার জন্যই সৃষ্টি করেছেন এবং দুনিয়ায় পাঠিয়েছেন। কিন্তু বাংলাদেশের গত ৫৪ বছরের ইতিহাসে কোরআন ও সুন্নাহর ভিত্তিতে কোনো আইন কার্যকর হতে দেখা যায়নি।

সোমবার (২০ অক্টোবর) বিকেলে রাজধানীর মহাখালী কলেরা হাসপাতালের সামনে আয়োজিত এক বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ‘জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি নিশ্চিত ও অবিলম্বে গণভোটের আয়োজন, প্রশাসনে দলীয়করণের প্রতিবাদ এবং সর্বস্তরে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড প্রতিষ্ঠার দাবিতে’ এই কর্মসূচি আয়োজন করা হয়।

অধ্যাপক মুজিবুর রহমান ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাম্প্রতিক ছাত্র সংসদ নির্বাচনে ভূমিধস বিজয়ের কথা উল্লেখ করে বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আল্লাহ তাআলা ছাত্র সমাজের অন্তর ইসলামের দিকে ফিরিয়ে দিয়েছেন। আমি এটিকে ভূমিধস নয়, বরং ‘পাহাড় ধস বিজয়’ বলব।

তিনি বলেন, একসময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে কবি আল মাহমুদ ‘ডাকাতদের গ্রাম’ বলেছিলেন, যেখানে টুপি, দাড়ি বা পাঞ্জাবি পরিহিতদের চলাচল ছিল কঠিন। কিন্তু আল্লাহর রহমতে এখন সেই অবস্থার পরিবর্তন ঘটেছে।

জাতীয় নির্বাচনেও ইসলামের পক্ষে রায় আসবে বলে মন্তব্য করে জামায়াতের এই শীর্ষ নেতা বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর মতোই আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দল-মত, জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে সকলের অন্তর ইসলামের দিকে ফিরবে। জনগণ অন্যান্য দল ও মতবাদ থেকে কোনো শান্তি পায়নি। তাই তারা এখন জামায়াতে ইসলামীর ইসলামের শান্তির আদর্শ দেখতে চায়। ভবিষ্যদ্বাণী করে অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেন, আগামী ভোট হবে ইসলামের পক্ষে, আর বিজয় হবে জামায়াতের ইনশাআল্লাহ।

ফ্যাসিবাদী সরকারের অত্যাচারে দেশ ও মানুষ দীর্ঘদিন কষ্ট ভোগ করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, জালেমদের দেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য করা হয়েছে। যারা দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে চায়, তাদের উদ্দেশ্য সফল হবে না। বাংলাদেশের তাওহীদি জনতা জালেমকে বিতাড়িত করেছে। সেই জালেমকে আবার সুযোগ দেওয়ার কোনো প্রশ্নই আসে না। পার্শ্ববর্তী দেশের অত্যাচার-নির্যাতন বাংলাদেশে আমদানি করতে দেওয়া হবে না।

বর্তমান উপদেষ্টা সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেন, যদি সত্যিকার অর্থে সুষ্ঠু নির্বাচন হয়, তাহলে ইতিহাসে তাদের নাম লেখা থাকবে। কিন্তু ২০১৪, ২০১৮ বা ২০২৪ সালের মতো ‘আমি আর ডামি’ স্টাইলের ভোট হলে জাতি কাউকে ক্ষমা করবে না।

তিনি প্রশাসনে থাকা পূর্ববর্তী সরকারের দলীয়করণকৃত কর্মকর্তাদের অপসারণ করে নিরপেক্ষ ও দোষমুক্ত কর্মকর্তাদের নিয়োগের দাবি জানান। পাশাপাশি বলেন, যারা অন্যায় করেছে, মানুষ খুন করেছে এবং অত্যাচার করেছে— তাদের বিচার নির্বাচনের আগেই দেখতে হবে।

ভোট ‘পচে যাওয়া’ রোধে ‘পিআর পদ্ধতিতে’ নির্বাচন আয়োজনের জোর দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, ৯১টি দেশে এই পদ্ধতিতে নির্বাচন হয় এবং ইতিমধ্যে ৭১ শতাংশ জনগণ এর পক্ষে মত দিয়েছে। সাহস থাকলে নভেম্বরের মধ্যেই পিআর পদ্ধতিতে গণভোটের আয়োজন করে জনগণের মতামত প্রমাণ করুন। আগামী দিনের বাংলাদেশের সংবিধান হবে কোরআনের সংবিধান। আমরা ঘরে ঘরে আল কোরআনের আলো জ্বালাতে বলেছি, এখন সময় এসেছে সেই আলো সংসদেও জ্বালানোর।

সমাবেশ শেষে মহাখালী থেকে শুরু হওয়া বিক্ষোভ মিছিল মগবাজার গিয়ে শেষ হয়।

ইএসএস/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

রাজনীতি এর সর্বশেষ