ঢাকা: দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে লন্ডনে অবস্থানরত বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দেশে ফিরলে রাজধানীর গুলশান এভিনিউয়ের ১৯৬ নম্বর বাড়িতে উঠবেন।
বুধবার (১৮ জুন) সরেজমিনে দেখা গেছে, দোতলা সাদা রঙের এই বাড়িটি তার আগমনের জন্য সম্পূর্ণরূপে প্রস্তুত।
গুলশান-২ গোলচত্বর পেরিয়ে এভিনিউয়ের শেষ মাথায় অবস্থিত এ বাড়িটি আধুনিক সব সুবিধা দিয়ে সজ্জিত। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এতে আছে তিনটি বেডরুম, ড্রয়িং রুম, ডাইনিং রুম, লিভিং রুম এবং একটি সুইমিং পুল। মূল ভবনের পাশাপাশি সামনে রয়েছে বেশ খানিকটা খোলা জায়গা, যা বাড়ির সৌন্দর্যকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে।
এ বাড়িটি বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া বর্তমানে যে ‘ফিরোজা’ নামের বাড়িতে ভাড়া থাকেন, তার পাশেই অবস্থিত।
বাড়িটির সম্পর্কে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিচারপতি আবদুস সাত্তার সরকারের সময়ে প্রায় দেড় বিঘা জমির ওপর নির্মিত এ বাড়িটি খালেদা জিয়ার নামে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল। এত বছর ধরে তার নিয়ন্ত্রণে থাকলেও এর নামজারি করা ছিল না। তবে,অন্তর্বর্তী সরকার গত ৪ জুন বাড়িটির নামজারির কাগজপত্র খালেদা জিয়ার হাতে তুলে দেওয়ার মাধ্যমে এ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছে।
জানা যায়, পূর্বে এই বাড়িতে বহুজাতিক কোম্পানি ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকোর সিইও ভাড়া থাকতেন। ছয় মাস আগে তিনি বাড়িটি ছেড়ে দেওয়ার পরই তারেক রহমানের থাকার উপযোগী করে তুলতে প্রয়োজনীয় সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়।
বাড়িটির সংস্কার কাজ করা এমন কয়েকজন নিশ্চিত করেছে যে, বাড়িটি এখন পুরোপুরি প্রস্তুত। এমনকি তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জুবাইদা রহমানও লন্ডনে যাওয়ার আগে বাড়িটি পরিদর্শন করে গেছেন এবং তার নির্দেশনা অনুযায়ীই সব কাজ সম্পন্ন হয়েছে।
এদিকে রাজনৈতিক মহলে একপ্রকার আলোচনা চলছে যে, জাতীয় নির্বাচনের দিনক্ষণ চূড়ান্ত হলেই বিএনপির এ শীর্ষ নেতা দেশে ফিরতে পারেন।
প্রসঙ্গত, ওয়ান-ইলেভেন সরকারের সময় ২০০৭ সালের ৭ মার্চ তারেক রহমানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। ২০০৮ সালের ৩ সেপ্টেম্বর জামিনে মুক্তি পাওয়ার পর ১১ সেপ্টেম্বর চিকিৎসার জন্য তিনি সপরিবারে লন্ডন যান এবং তখন থেকেই সেখানেই অবস্থান করছেন। পরবর্তীতে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়া কারাগারে যাওয়ার পর থেকেই তারেক রহমান দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন।
গুলশানের এই বাড়ি ছাড়াও খালেদা জিয়ার নামে আরও একটি বাড়ি ছিল। ১৯৮১ সালে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ সেনানিবাসে শহীদ মঈনুল হোসেন রোডে প্রায় ৯ বিঘা (২.৭২ একর) জমির ওপর নির্মিত আরেকটি বাড়ি খালেদা জিয়াকে বরাদ্দ দিয়েছিলেন। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর প্রথমে নোটিশ এবং পরে আদালতের মাধ্যমে সেই বাড়ি থেকে খালেদা জিয়াকে উচ্ছেদ করা হয়। ২০১০ সালের ডিসেম্বরে শহীদ মঈনুল হোসেন রোডের বাড়ি থেকে উচ্ছেদের পর খালেদা জিয়া কিছুদিন তার ভাই শামীম এস্কান্দারের বাড়িতে ছিলেন এবং ২০১২ সালের ২১ এপ্রিল ফিরোজায় ওঠেন।
ইএসএস/আরআইএস