ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগকে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়েছেন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান বিন হাদী। এছাড়া আগামী ৩৬ জুলাইয়ের (৫ আগস্ট) মধ্যে ‘জুলাই সনদ’ দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তিনি।
আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবিতে শুক্রবার (৯ মে) রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের পাশে ছাত্র-জনতার সমাবেশে ওসমান বিন হাদী এ দাবি জানান।
তিনি আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুলকে উদ্দেশ্য করে বলেন, বাংলাদেশে জুলাইয়ের যোদ্ধারা বেঁচে থাকতে কোনো নির্বাচনের ব্যালটে নৌকা প্রতীক থাকবে না। তবে আপনি তাদের হয়ে নির্বাচন করতে চাইলে বিশেষ বিবেচনায় সুযোগ থাকবে।
তিনি বলেন, জুলাইয়ের শহীদ ও আহতরা রায় দিয়েছেন, বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের পুনর্বাসন চলবে না। যতদিন ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করা না হবে, সনদ না হবে, আমরা শাহবাগ অবরোধ করব।
২০১৩ সালে শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীদের ওপর হত্যাযজ্ঞের বিচার দাবি করে ওসমান বিন হাদী বলেন, অতি দ্রুত শাপলা গণহত্যার বিচার করতে হবে। এছাড়া পিলখানা হত্যাকাণ্ডের বিচার করতে হবে। আল্লামা সাইদীর হত্যার পর দুই শতাধিক মানুষকে হত্যা করা হয়েছে, তাদের বিচার করতে হবে। মোদিবিরোধী আন্দোলনে যারা শহীদ হয়েছেন, তাদের হত্যাকাণ্ডের বিচার করতে হবে।
এর আগে দুপুর ২টা ৪০ মিনিটে কোরআন তিলাওয়াতের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে এ সমাবেশ শুরু হয়। দুপুর থেকেই ছোট ছোট মিছিল নিয়ে ছাত্র-জনতা ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলের সামনে সমাবেশস্থলে এসে যোগ দিতে থাকেন। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মী এবং শিক্ষার্থী ও সাধারণ জনতাকে প্ল্যাকার্ড ও ফেস্টুন হাতে সমাবেশে অংশ নিতে দেখা গেছে।
এছাড়া ইসলামী বিভিন্ন দলসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীরাও মিছিল সহকারে সমাবেশস্থলে আসেন। সাধারণ নাগরিকরাও স্বতঃস্ফূর্তভাবে যোগ দেন এই সমাবেশে।
গত বছরের আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হয় আওয়ামী লীগ। জনরোষের মুখে প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়ে দেশ থেকে পালান দলটির প্রধান শেখ হাসিনা। জাতিসংঘের হিসাব মতে, ওই অভ্যুত্থানে হাসিনার নির্দেশে নিরাপত্তা বাহিনী ও আওয়ামী লীগের সশস্ত্র ক্যাডারদের হামলাসহ সহিংসতায় এক হাজার চারশ’ জন নিহত হন।
বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা দীর্ঘদিন ধরেই আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে ফ্যাসিবাদী কার্যকলাপের অভিযোগ করে আসছেন। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকেই তাদের বিচার দাবিতে সোচ্চার অভ্যুত্থানে সক্রিয় ছাত্র-জনতা।
বুধবার (৭ মে) গভীর রাতে চুপিসারে আওয়ামী লীগ আমলের দুইবারের রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের দেশত্যাগের প্রেক্ষাপটে দলটির বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জোরদার হয়। জুলাই অভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া বিভিন্ন প্লাটফর্ম এক্ষেত্রে সরকারের সদিচ্ছার বিষয়েও প্রশ্ন তোলে। এরই মধ্যে বৃহস্পতিবার (৮ মে) রাত ১০টায় যমুনার সামনে এনসিপির মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহর ডাকে অবস্থান কর্মসূচি শুরু হয়।
সকালে ওই কর্মসূচি থেকে শুক্রবার জুমার নামাজের পর বড় সমাবেশের ঘোষণা দেন হাসনাত আবদুল্লাহ। এজন্য যমুনা ভবনের পাশেই মিন্টো রোড সংলগ্ন ফোয়ারার কাছে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের সামনে পাঁচটি ট্রাকে অস্থায়ী মঞ্চ তৈরি করা হয়।
এফএইচ/এইচএ/